ঘরে বানানো সুস্বাদু রাজমা কারির রেসিপি

🎧 Listen in Audio
0:00

ভারতীয় রান্নার কথা উঠলেই পঞ্জাবি খাবারের কথা না উঠলে নয়। এইসব অসাধারণ পঞ্জাবি খাবারের মধ্যে একটি হলো – রাজমা কারি। গরম গরম ভাতের সাথে যখন এটি পরিবেশন করা হয়, তখন এটি এমন একটি সমন্বয় তৈরি করে যা সকল বয়সের মানুষ পছন্দ করে। বিশেষ করে শাকাহারী খাবারপ্রেমীদের জন্য এটি একটি পূর্ণাঙ্গ, সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর বিকল্প।

রাজমা অর্থাৎ কিডনি বিিনস দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় বাড়িতে ব্যবহার হয়ে আসছে। এটি একটি স্বাস্থ্যকর লেগুম যা প্রোটিন, ফাইবার, পটাশিয়াম এবং আয়রনের চমৎকার উৎস। বিশেষ করে কথা হলো, যখন রাজমা ধান অর্থাৎ ভাতের সাথে খাওয়া হয়, তখন এটি একটি সম্পূর্ণ প্রোটিনযুক্ত খাবার হয়ে ওঠে – বিশেষ করে শাকাহারীদের জন্য।

রাজমা কারি তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণ: (৪ জনের জন্য)

  • রাজমা (কিডনি বিিনস) – ১ কাপ (ভিজিয়ে রাখা)
  • পানি – ১.৫ কাপ (রাজমা ফুটানোর জন্য)
  • তেজপাতা – ২
  • বড় এলাচ – ১
  • দারচিনি ছড়ি – ১ ইঞ্চি
  • তেল – ২ টেবিল চামচ
  • টমেটো – ৩-৪ (বারিক করে কাটা অথবা পিউরি)
  • আদা-মরিচ বাটা – ১ চা চামচ
  • জিরা – ১ চা চামচ
  • ধনে গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • কাশ্মীরি লাল মরিচ গুঁড়ো – ১ চা চামচ
  • লাল মরিচ গুঁড়ো – ½ চা চামচ (স্বাদানুসারে)
  • হলুদ গুঁড়ো – ½ চা চামচ
  • কাশুরি মেথি – ১ চা চামচ (হাতে মিটিয়ে)
  • গরম মসলা – ½ চা চামচ
  • লবণ – স্বাদানুসারে
  • হরিয়ালি ধনে – অল্প (সাজানোর জন্য)

ধাপে ধাপে পদ্ধতি

১. রাজমা ফোটানো

  • প্রথমে রাজমা ৬-৭ ঘন্টা অথবা রাতভর ভিজিয়ে রাখুন।
  • পরের দিন সকালে পানি ঝরিয়ে রাজমা প্রেশার কুকারে দিন।
  • এতে ১.৫ কাপ পানি, ১ তেজপাতা, বড় এলাচ, দারচিনি এবং অল্প লবণ দিন।
  • কুকার বন্ধ করে মাঝারি আঁচে ৬-৭ সিটি আসা পর্যন্ত রান্না করুন।
  • কুকার ঠান্ডা হলে ঢাকনা খুলুন। (রাজমার ফোটানো পানি পরে গ্রেভিতে ব্যবহার করা হবে, তাই তা ফেলে দিবেন না।)

২. মশলা গ্রেভি তৈরি করা

  • কড়াইতে তেল গরম করুন।
  • তেলে জিরা দিন, জিরা ফোঁড়া শুরু হলে আদা-মরিচ বাটা এবং তেজপাতা দিন।
  • ৩০-৪০ সেকেন্ড ভাজার পর কাটা টমেটো অথবা টমেটো পিউরি দিন এবং মাঝারি আঁচে তেল ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত রান্না করুন।
  • এবার সকল শুকনো মশলা দিন – হলুদ, ধনে গুঁড়ো, কাশ্মীরি মরিচ, লাল মরিচ গুঁড়ো, গরম মসলা এবং কাশুরি মেথি।
  • মশলাগুলো রঙ এবং সুগন্ধ ছাড়া পর্যন্ত ভাজুন।

৩. রাজমা মিশিয়ে কারি তৈরি করা

  • এবার ফোটানো রাজমা মশলায় দিন।
  • সাথে ফোটানো রাজমার পানিও দিন যাতে গ্রেভি তৈরি হয়।
  • ভালো করে মিশিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে ৫-৭ মিনিট কম আঁচে রান্না করুন।
  • যদি গ্রেভি খুব পাতলা মনে হয়, তাহলে কিছু রাজমা চামচ দিয়ে মিটিয়ে দিন, এতে গ্রেভি কিছুটা ঘন হবে এবং স্বাদে গভীরতা আসবে।

৪. সাজিয়ে পরিবেশন

  • শেষে উপরে বারিক করে কাটা হরিয়ালি ধনে দিন।
  • এবার আপনার গরম গরম রাজমা কারি তৈরি।

প্রয়োজনীয় পরামর্শ

  • যদি আপনার সময় কম থাকে, তাহলে ডিব্বাবন্দ রাজমাও ব্যবহার করতে পারেন, তবে ভিজিয়ে রান্না করা রাজমা বেশি সুস্বাদু হয়।
  • টমেটো দেওয়ার সময় সাথে অল্প লবণ অবশ্যই দিন, এতে টমেটো তাড়াতাড়ি পাকে।
  • গ্রেভির ঘনত্ব খুব ঘন রাখবেন না এবং পানির মতোও না, মাঝারি ঘন কারি রাজমার জন্য পারফেক্ট হয়।

রাজমা কারি এমন একটি খাবার যা স্বাদ, স্বাস্থ্য এবং সন্তুষ্টি – তিনটিরই মেলবন্ধন। এটি কেবলমাত্র আমাদের ঐতিহ্যবাহী খাদ্যের পরিচয় নয়, বরং আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। রবিবারের লাঞ্চ হোক বা ঠান্ডা রাতের ডিনার – একটি প্লেট রাজমা ভাত সব সময় মনকে শান্তি দেয়।

Leave a comment