স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কথা উঠলে এবং খাবারে পুষ্টির সন্ধান করা হলে, সবুজ পাতাযুক্ত সবজি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদানগুলি সবার আগে মনে আসে। এই অবস্থায় যদি আপনি এমন একটি খাবার তৈরি করতে চান যা সুস্বাদুও হবে, স্বাস্থ্যকরও হবে এবং দ্রুত তৈরি হবে, তাহলে সোয়া পালং পোলাও (Soya Palak Pulao) একটি চমৎকার বিকল্প।
এই ডিশটি তাদের জন্য বিশেষ যারা প্রতিদিনের রুটি-সবজির বাইরে কিছু নতুন চেষ্টা করতে চান এবং একই সাথে তাদের খাদ্যতালিকায় সবুজ শাক এবং প্রোটিন যুক্ত করতে চান। তাহলে চলুন, জেনে নেই এই স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু পোলাও তৈরির পদ্ধতি এবং এর পুষ্টি সম্পর্কিত কিছু বিশেষ সুবিধাও।
প্রয়োজনীয় উপকরণ (২ জনের জন্য)
- পাকা ভাত – ১ কাপ
- সোয়া বড়ি – ½ কাপ
- কুচি কাটা পেঁয়াজ – ১ (মাঝারি আকারের)
- আদা-রসুন বাটা – ১ টেবিল চামচ
- পালং শাক বাটা – ১ কাপ
- শিমলা মরিচ – ১ (কুচি কাটা)
- গাজর – ১ (কুচি কাটা)
- হরিশ মরিচ – ১ (কুচি কাটা)
- গরম মশলা – ১ চা চামচ
- লবণ – স্বাদমতো
- তেল – ২ টেবিল চামচ
- জিরা – ১ চা চামচ (তড়কা দেওয়ার জন্য)
সোয়া পালং পোলাও তৈরির পদ্ধতি
১. পালং শাকের বাটা তৈরি করা
- প্রথমে পালং শাকের পাতাগুলি পরিষ্কার করে ভালো করে ধুয়ে নিন।
- এগুলি ২ মিনিটের জন্য ফুটন্ত পানিতে দিন এবং তারপর অবিলম্বে ঠান্ডা পানিতে নামিয়ে নিন, যাতে পালং শাকের রঙ এবং পুষ্টি টিকে থাকে।
- এখন এটি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে একটি মসৃণ বাটা তৈরি করুন।
২. সবজির প্রস্তুতি
- শিমলা মরিচ এবং গাজর কুচি কুচি করে কেটে নিন।
- পেঁয়াজ এবং হরিশ মরিচও কেটে নিন।
- সোয়া বড়ি গরম পানিতে ৫-১০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন এবং তারপর হালকা উঁকে নিন যাতে তা নরম হয়ে যায়।
৩. পোলাওয়ের প্রস্তুতি
- একটি কড়াইতে তেল গরম করুন।
- এতে জিরা দিয়ে তড়কা দিন।
- তারপর কুচি কাটা পেঁয়াজ দিয়ে হালকা সোনালী বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
- এবার হরিশ মরিচ এবং আদা-রসুন বাটা দিয়ে কয়েক সেকেন্ড রান্না করুন।
- এরপর কাটা শিমলা মরিচ এবং গাজর দিয়ে ধীরে ধীরে আঁচে ২-৩ মিনিট ভাজুন।
৪. পালং শাক এবং সোয়া মিশানো
- যখন সবজি কিছুটা সেদ্ধ হয়ে যাবে, তখন তাতে পালং শাকের বাটা দিন।
- কিছুক্ষণ ভাজার পর তাতে উঁকে নেওয়া সোয়া বড়ি দিন এবং ভালো করে মিশিয়ে নিন।
- ঢেকে ২-৩ মিনিট ধীরে ধীরে আঁচে রান্না করুন যাতে সব স্বাদ মিশে যায়।
৫. ভাত মিশানো
- এখন আগে থেকে পাকা ভাত দিয়ে হালকা হাতে মিশিয়ে নিন।
- লবণ এবং গরম মশলা দিন।
- ১-২ মিনিট নাড়াচাড়া করে মিশিয়ে নিন এবং তারপর গ্যাস বন্ধ করে দিন।
৬. পরিবেশনের পদ্ধতি
- গরম গরম সোয়া পালং পোলাও দই, পাপড় বা আচারের সাথে পরিবেশন করুন।
- চাইলে উপরে थোড়া ঘি বা লেবুর রস দিয়ে স্বাদ বাড়াতে পারেন।
কিছু বিশেষ টিপস
- ভাত হালকা ঝুরঝুরে করে রান্না করুন যাতে মিশানোর সময় ভেঙে না যায়।
- যদি আপনি তেঁতুল পছন্দ করেন তাহলে এতে লাল মরিচ গুঁড়ো বা চাট মশলাও দিতে পারেন।
- এই পোলাও বাচ্চাদের টিফিনের জন্যও একটি ভালো বিকল্প, কারণ এতে স্বাদ এবং স্বাস্থ্য উভয়েরই ভারসাম্য রয়েছে।
সোয়া পালং পোলাও এমন একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু খাবার যা আপনি লঞ্চ অথবা ডিনারে হালকা খাবার হিসেবে তৈরি করতে পারেন। এটি শুধু পেট ভরে না, শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টিও সরবরাহ করে। আজকাল যখন সবাই ফাস্ট ফুড থেকে দূরে থাকতে চায় এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে ফিরতে চায়, তখন এই রেসিপি আপনার রান্নাঘরে একটি স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনার সুযোগ দিতে পারে।