শনিদেব ব্যক্তিকে তার কর্ম অনুযায়ী ফল দান করেন, যার জন্য তাঁকে কর্মফলদাতা বলা হয়। তাঁর মূর্তিতে সর্বদা নীচু নজর থাকে, যা একটি পৌরাণিক কাহিনীর সাথে যুক্ত।
শনিদেব কথা: হিন্দু ধর্মে শনিদেবকে কর্ম ও ন্যায়ের দেবতা মনে করা হয়। তিনি ব্যক্তিকে তার কর্ম অনুযায়ী ফল দানকারী ‘কর্মফলদাতা’। আপনি লক্ষ্য করেছেন যে শনিদেবের প্রতিমা বা ছবিতে তাঁর চোখ সর্বদা নীচু থাকে। এর পিছনে শুধুমাত্র আস্থা নয়, বরং একটি গভীর পৌরাণিক কাহিনী যুক্ত যা ব্রহ্মপুরাণে বর্ণিত আছে। আসুন জেনে নেই, এই রহস্যের সাথে যুক্ত পুরো কাহিনী।
শাপের কথা: যখন শনিদেব নিজের স্ত্রীর অবহেলা করেন
ব্রহ্মপুরাণ অনুযায়ী, একবার শনিদেব গভীর তপস্যায় মগ্ন ছিলেন। ঠিক সেই সময় তাঁর স্ত্রী ছত্ররথ সন্তান লাভের কামনা নিয়ে তাঁর কাছে এলেন। কিন্তু শনিদেব নিজের ধ্যানে এতটাই মগ্ন ছিলেন যে তিনি স্ত্রীর কথা উপেক্ষা করে দিলেন। স্ত্রী বেশক্ষণ অপেক্ষা করলেন, কিন্তু যখন ধ্যান ভঙ্গ হয়নি, তখন তাঁর অত্যন্ত ক্রোধ উঠল।
ক্রোধে তিনি শনিদেবকে শাপ দিলেন –
“এখন থেকে আপনার দৃষ্টি যার উপরই পড়বে, তার অনিষ্ট হবে।”
এই শাপে বিষণ্ণ হয়ে শনিদেব ক্ষমা চাইলেন, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। শাপটি এড়ানো যায়নি।
বক্র দৃষ্টি কেন বলা হয় শনিদেবের নজরকে?
শাপের প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য শনিদেব এই সংকল্প নিলেন যে তিনি কখনোই কারো উপর সরাসরি নজর দেবেন না। সেই থেকে তাঁর চোখ সর্বদা নীচু থাকে এবং তাঁর দৃষ্টিকে “বক্র দৃষ্টি” বলা হতে লাগল।
এই কারণেই বলা হয় যে শনিদেবের মূর্তির সামনে সোজা দাঁড়ানো উচিত নয়, বরং পাশ থেকে দর্শন করা উচিত যাতে অবাঞ্ছিত প্রভাব না পড়ে।
শনিদেবের কৃপা কিভাবে পাবেন?
শনিদেবের আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য প্রয়োজন আপনার কর্মগুলি পবিত্র রাখা। সাথে সাথে এই উপায়গুলি অবলম্বন করলেও তাঁর আশীর্বাদ লাভ করা যায়:
শনিবার সরিষার তেলের প্রদীপ শনি মন্দিরে অথবা পিপল গাছের নিচে জ্বালান।
হনুমানজীর উপাসনা করুন, কারণ হনুমানজীকে শনিদেবের রক্ষক মনে করা হয়।
শনিবার কালো তিল, উড়দ এবং লোহার দান করুন।
নীল বা কালো বস্ত্র পরিধান করুন এবং শনি মন্ত্র জপ করুন –
“ॐ शं शनैश्चराय नमः”