গরুড় পুরাণ: জীবনযাত্রার নীতি ও মৃত্যু পরবর্তী জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিক

🎧 Listen in Audio
0:00

গরুড় পুরাণকে ১৮টি পুরাণের মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং একে মহাপুরাণ বলা হয়। গরুড় পুরাণের আরাধ্য দেবতা ভগবান বিষ্ণু। এতে কেবল মৃত্যু এবং মৃত্যু পরবর্তী অবস্থা সম্পর্কেই নয়, নীতি-নিয়ম, সদাচার, জ্ঞান, যজ্ঞ, তপস্যা ইত্যাদির গুরুত্ব সম্পর্কেও বর্ণনা করা হয়েছে। এই পুরাণটি ব্যক্তিকে ধর্মের পথে চলতে অনুপ্রাণিত করে।

গরুড় পুরাণে জীবনযাত্রার বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। ব্যক্তি যদি এগুলি গ্রহণ করে, তাহলে তার জীবনকে সুখকর করে তুলতে পারে এবং মৃত্যুর পরেও সদ্গতি লাভ করতে পারে। এই লেখায় গরুড় পুরাণের সেই বিষয়গুলি দেখবো, যা আপনার কাজে লাগতে পারে।

ভগবান শ্রীহরির আশ্রয় নিন

ভগবান বিষ্ণুকে সকল লোকের আরাধ্য দেবতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অতএব, তিনি আপনার সকল দুঃখ দূর করতে পারেন। যিনি তার দিন শ্রীহরির নামে শুরু করেন এবং সর্বদা ভগবানের ভক্তিতে মগ্ন থাকেন, তার জীবনের সকল সমস্যা নিজে থেকেই সমাধান হয়ে যায়। যদি আপনি দুঃখ থেকে মুক্তি পেতে চান, তাহলে শ্রী বিষ্ণু ভগবানের আশ্রয় নিন।

তুলসীকে পূজা করুন

গরুড় পুরাণে তুলসী গাছের গুরুত্বও বর্ণনা করা হয়েছে। এটিকে পূজ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মৃত্যুর পূর্বে ব্যক্তির কাছে যদি তুলসী পাতা থাকে, তাহলে সে মৃত্যুর পর সদ্গতি লাভ করে বলে বলা হয়। আপনার বাড়িতে অবশ্যই তুলসী গাছ রাখতে হবে এবং প্রতিদিন তাকে পূজা করতে হবে।

একাদশী ব্রত করুন

শাস্ত্রে একাদশী ব্রতকে শ্রেষ্ঠ ব্রতগুলির মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গরুড় পুরাণেও এই ব্রতের মহিমা বর্ণনা করা হয়েছে। এই ব্রতটি ভগবান বিষ্ণুকে উৎসর্গ করা। একাদশী ব্রত পালন করার ফলে সকল পাপ ধ্বংস হয় এবং ব্যক্তি মোক্ষের দিকে অগ্রসর হয় বলে বিশ্বাস করা হয়। অতএব, যতটা সম্ভব একাদশী ব্রত অবশ্যই করতে হবে এবং সম্পূর্ণ বিধি-বিধান অনুসরণ করতে হবে, তবেই এই ব্রত ফলপ্রসূ হবে।

গঙ্গা পবিত্র

গরুড় পুরাণে গঙ্গা নদীকে মোক্ষদায়িনী হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কলিকালে এর জল অত্যন্ত পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। ধর্মীয় কাজে গঙ্গাজল বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। প্রত্যেকেই বাড়িতে গঙ্গাজল রাখবে এবং মাঝে মাঝে গঙ্গাস্নান করবে।

গরুড় পুরাণের উদ্দেশ্য কী?

মৃত্যুর পর গরুড় পুরাণ পাঠের উদ্দেশ্য হল সাধারণ মানুষকে কোন পথ ধর্মের এবং কোন পথ অধর্মের তা জানানো। এটি জেনে ব্যক্তি আত্মালোচনা করবে এবং নিজেকে সৎ কাজের দিকে নিয়ে যাবে। এছাড়াও, গরুড় পুরাণ শ্রবণ করার ফলে মৃত আত্মার শান্তি হয় এবং তারা মোক্ষের পথ জানতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়। এরপর, তারা কষ্ট ভুলে ভগবানের দেখানো পথে অগ্রসর হয়। সেখানে আত্মা প্রেতত্ব ছেড়ে সদ্গতি লাভ করে।

 

Leave a comment