টেক্সম্যাকো রেলের শেয়ারে বড় উল্লম্ফন: ক্যামেরুনের সঙ্গে বিশাল চুক্তি

টেক্সম্যাকো রেলের শেয়ারে বড় উল্লম্ফন: ক্যামেরুনের সঙ্গে বিশাল চুক্তি
সর্বশেষ আপডেট: 7 ঘণ্টা আগে

টেক্সম্যাকো রেলের শেয়ারের দাম বৃদ্ধি: জুন মাসের ২৬ তারিখে টেকম্যাকো রেলের শেয়ারের প্রাথমিক कारोबार চলাকালীন প্রায় ৯ শতাংশের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার, টেকম্যাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সাফল্য অর্জন করেছে। কোম্পানিটি ক্যামেরুনের একটি প্রধান কোম্পানির কাছ থেকে ৫৩৬.৬ কোটি টাকার বিশাল অর্ডার পেয়েছে। এই খবরটি বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই টেকম্যাকোর শেয়ারগুলোতে জোরালো উত্থান দেখা যায় এবং শেয়ারের দাম ৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।

এই অর্ডারটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি ‘মেক ফর ওয়ার্ল্ড’ ভিশনের অধীনে ভারত থেকে বিদেশে উৎপাদন এবং সরবরাহ করার ক্ষেত্রে একটি বড় পদক্ষেপ। এখন কোম্পানিটি শুধু দেশের রেল প্রকল্পের কাজ নয়, বিশ্ব বাজারেও নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করছে।

নতুন অর্ডারটি কী এবং কার কাছ থেকে পাওয়া গেল

টেক্সম্যাকো রেল এই চুক্তিটি ক্যামেরুনের কোম্পানি CAMALCO SA থেকে পেয়েছে। এই চুক্তির অধীনে টেকম্যাকোকে ১,৬০০টির বেশি ওপেন মালবাহী ভ্যাগন (ফ্রेट ভ্যাগন) ডিজাইন, তৈরি এবং সম্পূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। এই ফ্রेट ভ্যাগনগুলো বক্সাইট খনিজ পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হবে।

কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে টেকম্যাকো এই ভ্যাগনগুলো সম্পূর্ণভাবে ভারতে তৈরি করবে এবং পরে সেগুলো ক্যামেরুনে পাঠানো হবে। কোম্পানিটির প্রকৌশল দক্ষতা, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং উৎপাদন ক্ষমতার কারণে এই অর্ডারটি তাদের দেওয়া হয়েছে।

অর্ডার বইয়ে বড় বৃদ্ধি

এই নতুন চুক্তি পাওয়ার পর টেকম্যাকো রেলের মোট অর্ডার বইয়ের পরিমাণ বেড়ে ৭,৮২০ কোটি রুপি হয়েছে। কোম্পানির representatives-রা জানিয়েছেন যে এই অর্ডারটি শুধুমাত্র টেকম্যাকোর জন্য ব্যবসায়িক লাভের সুযোগ নয়, বরং এর মাধ্যমে কোম্পানিটি আফ্রিকা সহ অন্যান্য উদীয়মান বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে।

কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান ইন্দ্রজিৎ মুখার্জী জানিয়েছেন যে এই অর্ডারটি ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানুফ্যাকচারিং সক্ষমতাকে বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরেছে, যা প্রধানমন্ত্রীর ‘মেক ফর ওয়ার্ল্ড’ ভিশনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

ক্যামেরুনের কোম্পানির আস্থা

ক্যামেরুনের কোম্পানি CAMALCO SA-এর সিইও राणा प्रताप Singh এই চুক্তি নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করে বলেছেন যে এই সহযোগিতা তাদের দেশে অবকাঠামো উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তিনি টেকম্যাকোর প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং সময় মতো সরবরাহ করার ক্ষমতার প্রশংসা করেছেন।

অন্যান্য চুক্তি থেকে লাভ

টেক্সম্যাকো রেল এই মাসে শুরুর দিকেও রেলওয়ের দুটি বড় চুক্তি পেয়েছে। ১০ জুন, কোম্পানিটি মুম্বাই রেলওয়ে ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (MRVC)-এর কাছ থেকে ৪৪.০৪ কোটি টাকার চুক্তি পেয়েছিল। এই চুক্তিটি সেন্ট্রাল রেলওয়ের তৃতীয় এবং চতুর্থ লাইন এবং সংশ্লিষ্ট নির্মাণ কাজের সাথে জড়িত।

এছাড়াও, ৩ জুন MRVC কোম্পানিটিকে আরেকটি চুক্তি হস্তান্তর করে, যার মোট মূল্য ১২২.৩১ কোটি টাকা। এই প্রকল্পটি ওয়েস্টার্ন রেলওয়ের জন্য ট্র্যাকশন ট্রান্সফরমার এবং টেকনিক্যাল ইনস্টলেশনের সাথে সম্পর্কিত, যা ৩০ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।

এই সমস্ত প্রকল্পের মাধ্যমে এটা স্পষ্ট যে টেকম্যাকো রেলের চাহিদা শুধু ভারতে নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও দ্রুত বাড়ছে।

শেয়ার বাজারে জোরালো প্রতিক্রিয়া

এই খবরটি বাজারে আসার পর টেকম্যাকো রেলের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উৎসাহের আবহ তৈরি হয়েছে। বৃহস্পতিবারের প্রাথমিক कारोबारতে কোম্পানির শেয়ার প্রায় ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। টেকম্যাকোর শেয়ার দিনের শুরুতে ২.৬ শতাংশ acima খোলা হয়েছিল এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়। এই উত্থান বাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কোম্পানির প্রতি আস্থা বাড়িয়ে দিয়েছে।

শক্তিশালী ব্যবস্থাপনা এবং কৌশলগত চিন্তা

কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী জানিয়েছেন যে এই ধরনের আন্তর্জাতিক চুক্তি টেকম্যাকোর কৌশলগত চিন্তাভাবনা এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ফল। তিনি আরও জানান যে টেকম্যাকোর লক্ষ্য শুধু ভারতে নয়, বিশ্ব বাজারে রেলওয়ে সরঞ্জাম এবং পরিষেবাগুলির প্রধান সরবরাহকারী হওয়া।

শিল্পে টেকম্যাকোর অবস্থান

টেক্সম্যাকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ভারতের अग्रणी রেলওয়ে অবকাঠামো কোম্পানির মধ্যে অন্যতম। এই কোম্পানি রেল ফ্রेट ভ্যাগন, ব্রিজ গर्डर, রেল সিগন্যালিং সরঞ্জাম, হাইড্রোলিক ব্রিজ প্ল্যাটফর্ম এবং ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং কাজের সাথে বিশেষভাবে পরিচিত। কোম্পানির সদর দফতর कोलकाता, পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত।

টেক্সম্যাকো দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় রেলওয়ের সাথে কাজ করে আসছে এবং এখন আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করছে। কোম্পানিটির কৌশল হলো প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত, গুণগত মানসম্পন্ন এবং সময় মতো ডেলিভারি প্রদান করে বিশ্বব্যাপী গ্রাহক ভিত্তি তৈরি করা।

ভারতের জন্য গৌরব

এই চুক্তিটি ভারতের ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরের জন্য একটি বড় অর্জন। এটি ভারতের বিশ্বব্যাপী সুনাম বৃদ্ধি করবে এবং ভবিষ্যতে অন্যান্য আন্তর্জাতিক অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে।

Leave a comment