রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর প্রধান মোহন ভাগবত আজ পুনেতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন, যেখানে তিনি সংঘের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোকপাত করে বলেন যে, সংঘের কাজ হল সমগ্র হিন্দু সমাজকে স্নেহ এবং আপনত্বের भावना দিয়ে একত্রিত করা।
মহারাষ্ট্র: রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সরসংঘচালক মোহন ভাগবত আজ পুনেতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তাঁর বক্তব্য পেশ করেন। এই অনুষ্ঠানটি বিশিষ্ট আয়ুর্বেদ চিকিৎসক ও সমাজসেবী বৈদ্য পিভিআই খাদিরওয়ালের জীবনীর উপর ভিত্তি করে রচিত একটি বইয়ের প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত হয়েছিল। তাঁর ভাষণে মোহন ভাগবত বুদ্ধির সঠিক ব্যবহার এবং সমাজে স্নেহ ও আপনত্বের ভাবনার গুরুত্বের উপর জোর দেন।
মোহন ভাগবত বলেন, মানুষ ও পশুর মধ্যে সবচেয়ে বড় পার্থক্য হল বুদ্ধি, কিন্তু মানুষ যদি এই বুদ্ধির অপব্যবহার করে, তবে সেটিই তার পতনের কারণ হতে পারে। তিনি আরও বলেন, বুদ্ধিমান ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ জীবনকে উন্নত করতে পারে, কিন্তু যদি এর ব্যবহার স্বার্থপরতা, ক্রোধ বা ঘৃণার জন্য করা হয়, তবে সেই বুদ্ধিই তাকে খারাপ করে তোলে।
তিনি বলেন, মানুষকে যা খারাপের দিকে যাওয়া থেকে বিরত রাখে, তা হল আপনত্ব ও করুণার ভাবনা। সমাজে যদি এই ভাবনা বজায় থাকে, তবে মানুষ একে অপরের প্রতি সহযোগিতা ও ভালোবাসার মনোভাব পোষণ করবে, যা সমাজকে শক্তিশালী করবে।
সামাজিক একতার উপর জোর
মোহন ভাগবত বলেন, সংঘের উদ্দেশ্য হল হিন্দু সমাজকে স্নেহ ও একতার भावना দিয়ে যুক্ত করা। তিনি আরও বলেন, সংঘ लगातार সমাজকে এমন সব মূল্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চেষ্টা করে, যা বর্তমান সময়ে মানুষ ভুলতে বসেছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, যদি কেউ আপনার প্রতি আপনত্ব দেখায়, তবে আপনারও তার প্রতি স্নেহ ও করুণা রাখা উচিত। এই भावना সমাজকে একত্রিত করে এবং খারাপকে দূর করতে সহায়ক হয়।
তিনি আরও বলেন, হিন্দু সমাজ সর্বদা বিশ্বকে একত্রিত করার ধারণাকে গ্রহণ করেছে। বর্তমানে ‘গিভিং ব্যাক’-এর যে ধারণা নিয়ে ইংরেজি ভাষায় আলোচনা হয়, তা ভারতের সংস্কৃতিতে বহু শতাব্দী ধরে বিদ্যমান। তিনি বলেন, আমাদের সমাজ সবসময় অন্যদের কল্যাণের জন্য কাজ করতে বিশ্বাস করে এসেছে।
বৈদ্য খাদিরওয়ালেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি
মোহন ভাগবত এই অনুষ্ঠানে আয়ুর্বেদ চিকিৎসক বৈদ্য খাদিরওয়ালের অবদান স্মরণ করেন। তিনি বলেন, খাদিরওয়ালে আয়ুর্বেদকে জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে এবং পরোপকারের भावना নিয়ে কাজ করতে জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। ভাগবত শ্রোতাদের বৈদ্য খাদিরওয়ালের মূল্যবোধ ও আদর্শকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, খাদিরওয়ালে জি আমাদের দেখিয়েছেন কিভাবে চিকিৎসা কেবল পেশা নয়, সেবাও হতে পারে। আমাদের তাঁর থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সমাজের জন্য বাঁচা উচিত।
সামूहिक চিন্তাধারার আলোচনা
অনুষ্ঠানে মোহন ভাগবত তাঁর সাম্প্রতিক নাগপুর সফরের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি পুনরায় বলেন যে, কোনো বড় কাজ একা করা সম্ভব নয়। স্বাধীনতা সংগ্রামের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা কোনো এক ব্যক্তির অবদান ছিল না, বরং এটি ছিল সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল।
তিনি বলেন, সংঘেরও একই দর্শন যে সমাজের মঙ্গলের জন্য সম্মিলিত চিন্তা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। ভাগবত আরও বলেন, সংঘের কাজ কেবল কয়েকজনের নয়, বরং সমগ্র সমাজের দায়িত্ব। সমাজ যখন আপনত্ব ও সামূহিকতার भावना নিয়ে এগিয়ে যাবে, তখনই দেশে প্রকৃত ঐক্য ও উন্নয়ন সম্ভব হবে।