হিমাচল প্রদেশে ভারী বর্ষণে এ পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন ৪ জন, ৫৩টি রাস্তা বন্ধ এবং ২৯.১৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের জন্য অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।
হিমাচল বর্ষা: হিমাচল প্রদেশে বর্ষার তাণ্ডব অব্যাহত। গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টি রাজ্যটির বিভিন্ন অংশে ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে। রাজ্য জরুরি অপারেশন কেন্দ্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০ জুন থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত বৃষ্টি-সংক্রান্ত ঘটনায় ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও ৪ জন নিখোঁজ এবং ৬৬ জন আহত হয়েছেন।
ভারী বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি
হিমাচল প্রদেশে এই এক সপ্তাহে বৃষ্টির কারণে মোট ২৯.১৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির মধ্যে রাস্তা, বাড়ি, দোকান, গোশালা এবং পানীয় জল প্রকল্পগুলি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। শুধুমাত্র লোক নির্মাণ বিভাগ (PWD)-এরই ২৭.৪৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
৬টি বাড়ি ধ্বংস, ৮টির ক্ষতি
রাজ্যজুড়ে এ পর্যন্ত ৬টি বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে, যেখানে ৮টি বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ৭টি দোকান এবং ৮টি গোশালারও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনাগুলিতে মোট ৩৭টি গবাদি পশু এবং পাখি ভেসে গেছে।
৫৩টি রাস্তা বন্ধ, পরিবহন ও বিদ্যুতের উপর প্রভাব
প্রদেশে ভারী ভূমিধস এবং জল जमा হওয়ার কারণে ৫৩টি রাস্তা যান চলাচলের জন্য সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। কুল্লু জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে ২৩টি রাস্তা বন্ধ রয়েছে।
একইভাবে, মান্ডি জেলায় ১৬টি রাস্তা এখনও বন্ধ রয়েছে। নিরমন্ড এবং আনি-র মতো অঞ্চলে জল সরবরাহ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। এখানে ৭৪টি ট্রান্সফরমার এবং ১১৮টি পানীয় জল প্রকল্প কাজ করছে না। রাজ্যজুড়ে মোট ১৩৫টি বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার এবং ১৪৭টি পানীয় জল প্রকল্প বন্ধ রয়েছে।
অন্যান্য জেলার পরিস্থিতি
কিনৌরে ৩৩টি পানীয় জল প্রকল্প বন্ধ রয়েছে, যার কারণে হাজার হাজার মানুষ জল সংকটের সম্মুখীন হচ্ছেন। আবহাওয়া দপ্তর পরিস্থিতি বিবেচনা করে জনগণকে অত্যন্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর হিমাচল প্রদেশের জন্য আগামী ৩ জুলাই পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে। বিশেষ করে ২৯ জুন তারিখে অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যে কারণে রাজ্যে অরেঞ্জ অ্যালার্ট ঘোষণা করা হয়েছে।
বন্যার আশঙ্কা এবং সতর্কতা
শিমলা এবং সিরমৌর জেলার জন্য আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফ্ল্যাশ ফ্লাডের (হঠাৎ বন্যা) সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রশাসন নাগরিকদের নদী, নালা এবং ভূমিধসপ্রবণ এলাকা থেকে দূরে থাকার আবেদন জানিয়েছে।