নাগৌরের সাংসদ হনুমান বেনিওয়াল একটি পোস্ট শেয়ার করে জানিয়েছেন যে, রাজস্থানের ভরতপুর, ধোলপুর এবং ডিগ জেলার জাঠ সমাজকে কেন্দ্রে ওবিসি সংরক্ষণের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে আগামী ২৯ জুন ভরতপুরের ডেহরা মোড়ে প্রস্তাবিত জনসভায় যোগদানের জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
হানুম্যান বেনিওয়াল: রাজস্থানে জাঠ সংরক্ষণ নিয়ে আবারও পরিস্থিতি গরম হতে শুরু করেছে। ভরতপুর, ধোলপুর এবং ডিগ জেলার জাঠ সমাজ কর্তৃক কেন্দ্রের ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পুরনো দাবি নিয়ে আগামী ২৯ জুন ভরতপুরের ডেহরা মোড়ে (আগ্রা-জয়পুর হাইওয়ে) এক বিশাল জনসভার আয়োজন করা হচ্ছে। এই হুঙ্কার সভায় নাগৌর সাংসদ এবং রাষ্ট্রীয় লোকতান্ত্রিক পার্টির (আরএলপি) আহ্বায়ক হনুমান বেনিওয়ালও উপস্থিত থাকবেন।
হনুমান বেনিওয়াল নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট শেয়ার করে জানিয়েছেন যে, জাঠ সংরক্ষণ সংগ্রাম সমিতির আহ্বায়ক নেম সিং ফৌদার এবং অন্যান্য সমাজের প্রতিনিধিরা জয়পুরে তাঁর বাসভবনে এসে হলুদ চাল দিয়ে এই জনসভায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যা তিনি সানন্দে গ্রহণ করেছেন। বেনিওয়াল বলেন, আমি আগেও রাস্তা থেকে সংসদ পর্যন্ত ভরতপুর, ধোলপুর এবং ডিগের জাঠ সমাজের জন্য কেন্দ্রে ওবিসি সংরক্ষণের দাবি জোরালোভাবে তুলেছি এবং ভবিষ্যতেও সমাজের পাশে থেকে প্রতিটি লড়াইয়ে সামিল থাকব।
তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়ে লিখেছেন, আমি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং সামাজিক ন্যায়বিচার মন্ত্রী ডক্টর বীরেন্দ্র কুমারকে অনুরোধ করছি যে, জাঠ সমাজের এই সংবেদনশীল দাবির বিষয়ে দ্রুত ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।
তিন জেলার জাঠ কেন বঞ্চিত?
রাজস্থানের অধিকাংশ জেলায় জাঠ সমাজ কেন্দ্রের ওবিসি সংরক্ষণের সুবিধা পাচ্ছে, কিন্তু ভরতপুর, ধোলপুর এবং ডিগ জেলাকে এই সুবিধা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই কারণে এই জেলার জাঠরা দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করছেন। এই জেলার জাঠ নেতাদের বক্তব্য হল, অন্যান্য জাঠ সমাজের মতো এখানকার মানুষও সামাজিক এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে পিছিয়ে আছে, কিন্তু কেন্দ্রের তালিকায় নাম না থাকার কারণে তারা শিক্ষাগত এবং চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই কারণে, বিগত কয়েক বছরে জাঠ সমাজের মধ্যে কেন্দ্র সরকারের প্রতি ক্ষোভ বেড়েছে। লোকসভা নির্বাচনের সময়ও ভরতপুর এবং ধোলপুরে জাঠ সমাজ ‘গঙ্গাজল অভিযান’ চালিয়ে বিজেপি প্রার্থীদের ভোট না দেওয়ার শপথ নিয়েছিল, যার প্রভাব নির্বাচনী ফলাফলেও দেখা গেছে।
২৯ জুন হবে বড় শক্তি প্রদর্শন
এবার আবার জাঠ সমাজ সংরক্ষণ নিয়ে হুঙ্কার দিচ্ছে। ২৯ জুন ডেহরা মোড়ে হতে যাওয়া এই জনসভায় রাজ্যজুড়ে হাজারো মানুষের সমাগমের সম্ভাবনা রয়েছে। জাঠ সংরক্ষণ সংগ্রাম সমিতি গ্রাম-গঞ্জে গিয়ে হলুদ চাল বিতরণ করে লোকজনকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। এই হুঙ্কার সভায় আগামী আন্দোলনের কৌশল তৈরি করা হবে এবং সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর জন্য পরবর্তী পদক্ষেপের রূপরেখা তৈরি করা হবে।
হনুমান বেনিওয়ালের অংশগ্রহণে এই সভা আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বেনিওয়ালের জাঠ সম্প্রদায়ে ভালো প্রভাব রয়েছে এবং তিনি সময়ে সময়ে সমাজের বিভিন্ন বিষয় সংসদে উত্থাপন করেছেন।
সমাজের একতার উপর জোর
অনুষ্ঠানের আয়োজক নেম সিং ফৌদার বলেছেন, আমরা কেবল আমাদের অধিকারের দাবি জানাচ্ছি। যদি রাজস্থানের অন্যান্য জেলার জাঠরা ওবিসি-তে আসতে পারে, তাহলে ভরতপুর, ধোলপুর এবং ডিগের মানুষেরা কেন পারবে না? আমাদের বছরের পর বছর ধরে উপেক্ষা করা হচ্ছে। এবার আমরা চুপ করে থাকব না। ফৌদার জানান, সভার পরে এই দাবি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চূড়ান্ত আল্টিমেটাম দেওয়া হবে। সরকার সময় মতো সিদ্ধান্ত না নিলে, আন্দোলন আরও তীব্র করা হবে এবং প্রয়োজনে দিল্লি পর্যন্ত পদযাত্রা করা হবে।
হনুমান বেনিওয়ালও হুঙ্কার সভায় যোগদানের ঘোষণা করে বলেছেন যে, তিনি সমাজের শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে প্রতিটি পদক্ষেপে তাদের সঙ্গে থাকবেন। এটি কেবল ভরতপুর, ধোলপুর এবং ডিগের মানুষের সমস্যা নয়, বরং এটি পুরো রাজস্থানের জাঠ সমাজের প্রশ্ন। আমি এই লড়াইয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকব।