ইটাওয়া বিতর্ক: মুখ খুললেন কুমার বিশ্বাস, ধর্মীয় নেতাদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন

ইটাওয়া বিতর্ক: মুখ খুললেন কুমার বিশ্বাস, ধর্মীয় নেতাদের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন
সর্বশেষ আপডেট: 10 ঘণ্টা আগে

উত্তর প্রদেশের ইটাওয়ায় এক কথাবাচককে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হওয়া বিতর্ক থামবার কোনও লক্ষণ নেই। এবার এই বিষয়ে কবি ও চিন্তাবিদ ড. কুমার বিশ্বাসও মুখ খুলেছেন। একটি সংবাদ চ্যানেলের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি বলেন যে, আস্থা এবং ভক্তিকে জাতপাতের গন্ডিতে বেঁধে রাখা শুধু অনুচিতই নয়, বরং সমাজে নেতিবাচক বিভাজনও তৈরি করে।

কুমার বিশ্বাস বলেন, কথাবাচকের কাজ হল ভগবান এবং ভক্তদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করা, সমাজের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করা নয়। তিনি ইটাওয়া বিতর্ককে সম্পূর্ণভাবে অনাবশ্যক এবং দুর্ভাগ্যজনক বলে অভিহিত করেন এবং বলেন যে, এই ধরনের ঘটনা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পবিত্রতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। এছাড়াও তিনি আবেদন করেন যে, সমাজকে জাতিবাদের ঊর্ধ্বে উঠে একতা ও ধর্মীয় সমন্বয়ের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত।

ধর্মীয় নেতাদের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন

ড. বিশ্বাস এই বিতর্কে ধর্মীয় জগতের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, যখন কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান নিয়ে সমাজে সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন আধ্যাত্মিক নেতৃত্বের দায়িত্ব থাকে এগিয়ে এসে পরিস্থিতি স্পষ্ট করা। তাঁর এই মন্তব্যের প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের সমর্থন দেখা যাচ্ছে এবং ব্যবহারকারীরা এটিকে সময়োপযোগী ও জরুরি হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।

ইটাওয়ার কথাবাচক বিতর্ক আসলে কী?

এই বিতর্ক শুরু হয় ২১ জুন, ইটাওয়া জেলার দন্দরপুর গ্রামে আয়োজিত ভাগবত কথার সময়, যখন কথাবাচক মুকুট মণি যাদব এবং সন্ত সিং যাদবের বিরুদ্ধে তাঁদের জাতি গোপন করে ব্রাহ্মণ সেজে কথা বলার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং কথাবাচকদের মারধর করা হয়।

পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় যখন কথার যজমান রেনু তিওয়ারি মুকুট মণি যাদবের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ আনেন। ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরেই পুলিশ চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। এছাড়াও কথাবাচকদের বিরুদ্ধে জাল আধার কার্ড এবং প্রতারণার মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে, ঘটনার গভীর তদন্ত চলছে।

রাজনীতিতেও বিতর্কের আঁচ

বিবাদের পর এই ঘটনা এখন রাজনৈতিক রূপ নিয়েছে। সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব এটিকে জাতিগত হামলা বলে সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অন্যদিকে, ব্রাহ্মণ মহাসভা কথাবাচকদের আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে এর তদন্তের দায়িত্ব ঝাঁসি পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন। এছাড়াও গ্রামে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে, এই ঘটনা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মর্যাদা, জাতিগত পরিচয় এবং রাজনৈতিক বাগ্মিতার ত্রিভুজে আটকে রয়েছে।

Leave a comment