যোগী আদিত্যনাথের কড়া সমালোচনা: ইটাওয়া বিতর্ক ও উত্তরপ্রদেশের উন্নয়ন

ইটাওয়াতে কথাবাচকদের নিয়ে বিতর্কের মধ্যে, সমাজবাদী পার্টির (সপা) অভিযোগের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বিরোধীদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি পূর্ববর্তী সরকারগুলির বিরুদ্ধে জাতিবাদ, মাফিয়াবাদ এবং পরিবারতন্ত্রকে উৎসাহিত করার অভিযোগ এনেছেন।

UP নিউজ: উত্তরপ্রদেশের ইটাওয়া জেলায় কথাবাচকদের কথিত অপমান নিয়ে চলা রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ একটি বড় মন্তব্য করেছেন। সমাজবাদী পার্টি (সপা)-র তরফে উত্থাপিত অভিযোগগুলির জবাব দিতে গিয়ে তিনি বিরোধী দলগুলির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী এই বিতর্ক প্রসঙ্গে সরাসরি সপার নাম না নিলেও, তাঁর বক্তব্যে রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট ছিল।

পূর্ববর্তী সরকারগুলির তীব্র সমালোচনা

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ২০১৭ সালের আগে উত্তরপ্রদেশ দাঙ্গা, মাফিয়ারাজ এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্য পরিচিত ছিল। তিনি আরও বলেন, সেই সময়ে রাজ্যটি কন্যা এবং ব্যবসায়ীদের জন্য সবচেয়ে অরক্ষিত রাজ্যে পরিণত হয়েছিল। যোগী আরও অভিযোগ করেন যে, পূর্ববর্তী সরকারগুলির সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল কেবল জাতিগত সংঘাত এবং পরিবারতন্ত্রকে উৎসাহিত করা। তিনি বলেন, "আগের সরকারগুলি কেবল নিজেদের পরিবারের জন্য কাজ করেছে। এক জেলা, এক মাফিয়ার নীতিতে সরকার চলেছে।"

কথাবাচকদের সম্মানের উপর জোর

ইটাওয়াতে কথাবাচকদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে সমাজবাদী পার্টি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছিল। সপা এটিকে ধর্মীয় ভাবাবেগের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি বিষয় হিসাবে উল্লেখ করে সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। এর প্রতিক্রিয়ায় যোগী আদিত্যনাথ, পরোক্ষভাবে সপাকে আক্রমণ করে বলেন যে, ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি সম্মান জানানো সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। তিনি স্পষ্ট করেন যে, রাজ্যে কোনও ধর্মীয় কার্যকলাপকে অপমান করার অনুমতি দেওয়া হবে না।

MSME কর্মসূচিতে যুবকদের জন্য বার্তা

মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ লখনউতে আয়োজিত বিশ্ব MSME দিবসের অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন। সেই সময় তিনি যুবকদের কর্মসংস্থান এবং স্ব-কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি নতুন উদ্যোগের ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার প্রতিটি যুবকের প্রতিভা এবং শক্তিকে রাজ্যের উন্নয়নে ব্যবহার করতে চায়। যোগী জোর দিয়ে বলেন, "আমাদের কাছে কারও জাতি নয়, তার প্রতিভা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তাদের একটি প্ল্যাটফর্ম দিতে চাই। মুখ্যমন্ত্রী যুব স্কিম সেই দিকে একটি বড় পদক্ষেপ।"

জাতিগত রাজনীতির উপর আক্রমণ

মুখ্যমন্ত্রী যোগী পূর্ববর্তী সরকারগুলির নীতির সমালোচনা করে বলেন যে, আগের সরকারগুলি জাতিগত সংঘর্ষে জড়িত ছিল এবং যুবকদের পরিচয় নিয়ে সংকটে পড়তে হয়েছিল। তিনি বলেন, এখন সরকারের প্রধান লক্ষ্য হল প্রত্যেক নাগরিককে সমান সুযোগ দেওয়া, তারা যে কোনও ধর্ম, জাতি বা অঞ্চলের হোক না কেন। তিনি আরও বলেন যে, ডাবল ইঞ্জিন সরকার সামাজিক ন্যায়বিচারকে শক্তিশালী করেছে এবং কোনও প্রকার বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করছে।

উত্তর প্রদেশের অর্থনৈতিক উন্নতি

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে রাজ্যের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন। তিনি জানান যে, রাজ্যের রপ্তানি এখন দুই লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এছাড়াও, মাথাপিছু আয় ৪৬ হাজার টাকা থেকে বেড়ে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা হয়েছে। যোগী জানান যে, রাজ্যের জিডিপি ১২ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩১ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। তিনি দাবি করেন যে, এই অগ্রগতি ডাবল ইঞ্জিন সরকারের প্রকল্প এবং স্বচ্ছতার কারণে সম্ভব হয়েছে।