দিল্লীর তিমারপুর এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এমন একটি খবর এসেছে, যা সবাইকে হতবাক করে দিয়েছে। এখানে, ২৬ বছর বয়সী এক যুবক, সামান্য টেম্পোর সামনের সিটে বসা নিয়ে হওয়া বিবাদের জেরে নিজের বাবাকে গুলি করে হত্যা করেছে। মৃতের পরিচয়, ৬০ বছর বয়সী সুরেন্দ্র সিং, যিনি কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী (সিআইএসএফ) থেকে অবসরপ্রাপ্ত সাব-ইনস্পেক্টর ছিলেন।
ঘটনাটি তিমারপুরের এমএস ব্লকের কাছে সন্ধ্যা প্রায় ৭:৩০-এর দিকে ঘটে। পুলিশের মতে, পুরো পরিবার উত্তরাখণ্ডের পৈতৃক গ্রামে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তারা একটি টেম্পো ভাড়া করেছিল এবং জিনিসপত্র লোড করা হচ্ছিল। সেই সময় সুরেন্দ্র সিং এবং তাঁর ছেলে দীপকের মধ্যে এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হয় যে, টেম্পোর সামনের সিটে কে বসবে। বিতর্ক বাড়লে, দীপক বাবার লাইসেন্স করা বন্দুক বের করে আনে এবং রাগের বশে গুলি চালায়।
গুলি লাগার সঙ্গে সঙ্গেই সুরেন্দ্র লুটিয়ে পড়েন
টহলরত পুলিশকর্মীরা গুলির শব্দ শুনে ঘটনাস্থলের দিকে ছুটে যান। সেখানে তাঁরা দেখেন, সুরেন্দ্র সিং রক্তে ভেসে ফুটপাতে পড়ে আছেন এবং আশেপাশের লোকেরা অভিযুক্তের কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। সুরেন্দ্রকে দ্রুত এইচআরএইচ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে ডাক্তাররা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গেছে, তাঁর মুখ ও গালে গুলি লেগেছিল।
পুলিশ ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত দীপককে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে। তল্লাশির সময় তাঁর কাছ থেকে বাবার লাইসেন্স করা রিভলবার এবং ১১টি তাজা কার্তুজও উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে হত্যার মামলা রুজু করা হয়েছে এবং পুলিশ পুরো ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করছে।
মানসিক স্থিতিরও তদন্ত চলছে
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত দীপকের স্বভাব আগে থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল এবং সে অনেকবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিবাদ করেছে। বর্তমানে পুলিশ তাঁর মানসিক স্থিতির তদন্ত করারও প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়াও, যে বন্দুক থেকে গুলি চালানো হয়েছে, সেটি লাইসেন্স করা ছিল কিনা এবং তার ব্যবহার আইন অনুযায়ী করা হয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই ঘটনা রাজধানীতে আবারও এই প্রশ্ন তুলেছে যে, রাগ এবং অহংকারে সম্পর্কগুলো কতটা বিপজ্জনক মোড় নিতে পারে। পুলিশ জানিয়েছে, মামলার প্রতিটি দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দ্রুত চার্জশিট দাখিল করা হবে।