প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই বলেছেন, ভারতের সংবিধানই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, সংসদ নয়।
দিল্লি: ভারতের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice of India) বিআর গভাই সংবিধান এবং সংসদের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে আলোচনার পর স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে দেশের সংবিধানই সবচেয়ে উপরে। তিনি আরও বলেছেন যে গণতন্ত্রের তিনটি স্তম্ভ—কার্যনির্বাহী, আইনসভা এবং বিচারসভা—সংবিধানের অধীনে কাজ করে। অ্যামरावतीতে একটি অনুষ্ঠানে তিনি এই ধারণাগুলো প্রকাশ করেছেন।
সংবিধান গণতন্ত্রের ভিত্তি
সিজিআই গভাই স্পষ্ট করে বলেছেন যে কিছু মানুষ সংসদকে শ্রেষ্ঠ মনে করলেও, তাঁদের মতে সংবিধান সবচেয়ে উপরে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সংবিধানের ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং তিনটি অঙ্গকে তার সীমানার মধ্যে থেকে কাজ করতে হয়। সংসদের সংবিধান সংশোধনের অধিকার আছে, কিন্তু এটি তার মূল কাঠামো পরিবর্তন করতে পারে না।
সংবিধানের মূল কাঠামোর পরিবর্তন अस्वीकार्य
তিনি তাঁর ভাষণে ব্যাখ্যা করেন যে সংবিধানের মূল কাঠামো (basic structure) কোনো সংশোধনে স্পর্শ করতে পারবে না। এই মন্তব্যটি সেই বিতর্কের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে প্রায়ই প্রশ্ন ওঠে যে সংসদের কাছে অসীম সংশোধনের ক্ষমতা আছে কিনা। তিনি বলেন, সংবিধান শুধু একটি আইনি নথি নয়, এটি আমাদের গণতন্ত্রের আত্মা।
অ্যামারাভিটিতে সম্মাননা
প্রধান বিচারপতি বিআর গভাই তাঁর নিজের শহর অ্যামারাভিটিতে সফরকালে ছিলেন। এই সময় আয়োজিত সম্মাননা অনুষ্ঠানে তিনি শুধু সংবিধানের শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে তাঁর মতামত জানাননি, বরং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, বিচারকদের ভূমিকা এবং জনগণের অধিকার রক্ষার বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
বিচারকের স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ
সিজিআই বিচারকদের পরামর্শ দিয়েছেন যে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়াই বিচারিক স্বাধীনতার আসল পরিচয়। তিনি বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেই কেবল স্বাধীনতা প্রদর্শন হয় না। বিচার πρέπει να λειτουργεί με ακεραιότητα και να προστατεύει τη συνταγματική ομοιότητα και τα δικαιώματα των πολιτών.
সিদ্ধান্তে জনমত প্রভাব ফেলা উচিত নয়
তিনি আরও বলেন যে বিচারকদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এটা ভাবা উচিত নয় যে সমাজ কী বলবে। তিনি বলেন, “আমাদের স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে হবে। মানুষের প্রতিক্রিয়া বা সমালোচনা আমাদের সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করা উচিত নয়।” এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয় যে সিজিআই বিচার বিভাগের নিরপেক্ষতাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন।
বিচারিক ক্ষমতার সাথে দায়িত্বও জরুরি
প্রধান বিচারপতি গভাই জানান যে বিচার বিভাগের কাছে যে ক্ষমতা আছে, তা শুধু অধিকার নয়, একই সাথে একটি বিশাল দায়িত্বও। তিনি বলেন, বিচারকরা সংবিধানের মৌলিক নীতি এবং নাগরিকদের অধিকারের রক্ষক। তাঁদের কর্তব্য হল কোনো চাপের কাছে না buckling এবং নিরপেক্ষ ও ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্ত নেওয়া।
বুলডোজার ন্যায়বিচারেও
বিআর গভাই তাঁর একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে জানান যে তিনি ‘বুলডোজার ন্যায়বিচার’ের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন এবং সেখানে ‘আশ্রয়ের অধিকার’ (Right to Shelter) নাগরিকদের একটি মৌলিক অধিকার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেন, শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে কোনো ব্যক্তিকে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা যাবে না।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং পিতার ইচ্ছা
প্রধান বিচারপতি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের একটি ঘটনাও ভাগ করে নেন। তিনি বলেন যে ছোটবেলায় তিনি স্থপতি হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর বাবা চান তিনি আইনজীবী बनें। তিনি জানান যে তাঁর বাবাও আইনজীবী হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে তাঁকে জেলে যেতে হয়েছে এবং তিনি তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে পারেননি। তাঁর বাবার সেই ইচ্ছাই তিনি পূরণ করেছেন।