আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনা: ২৪১ প্রাণহানি, তদন্তের দাবী

আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনা: ২৪১ প্রাণহানি, তদন্তের দাবী
সর্বশেষ আপডেট: 14-06-2025

আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় সমগ্র দেশ কেঁপে উঠেছে। এই দুর্ঘটনা নিয়ে এখন বিমান বিশেষজ্ঞ ও সাবেক কর্মকর্তাদের মধ্যে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে।

Air India Plane Crash: আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় সমগ্র দেশ কেঁপে উঠেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করা এই বিমানটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই দুর্ঘটনার শিকার হয়, যাতে ২৪১ জনের প্রাণহানি ঘটে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় গুজরাটের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানীসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি প্রাণ হারান।

এখন এই দুর্ঘটনা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে, বিশেষ করে যখন জানা গেছে যে DGCA (नागरिक उड्डयन महानिदेशालय) এর আগেই এয়ার ইন্ডিয়াকে এই বিমানের নিরাপত্তা নিয়ে সতর্কীকরণ পত্র পাঠিয়েছিল।

দুর্ঘটনার পটভূমি: কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল?

এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI-187, আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার দুপুর ১:৩৮ মিনিটে উড্ডয়ন করে। বিমানে ২৩০ জন যাত্রী ও ১২ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। উড্ডয়নের ৬ মিনিটের মধ্যেই হঠাৎ করে ডান ও বাম উভয় ইঞ্জিনই ব্যর্থ হয়। পাইলট জরুরী অবতরণের চেষ্টা করেন, কিন্তু বিমানটি SVP হাসপাতালের হোস্টেল চত্বরে আছড়ে পড়ে এবং অবিলম্বে আগুনে লেগে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, বিমানের উচ্চতা হঠাৎ করে কমে যায় এবং জোরালো ধাক্কায় তা মাটিতে আছড়ে পড়ে। বিমানটি পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং উদ্ধার কাজে নিয়োজিত অগ্নি নির্বাপকদেরও কঠোর পরিশ্রম করতে হয়।

DGCA-এর সতর্কীকরণ ও এয়ার ইন্ডিয়ার অবহেলা?

नागरिक उड्डयन मंत्रालय-এর সাবেক যুগ্ম সচিব ডাঃ সনৎ কৌল এই দুর্ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, এটি শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি নয়, বরং তদারকি ও দায়বদ্ধতার অভাবের ফলাফলও হতে পারে। ডাঃ কৌল দাবি করেছেন যে DGCA এর আগেও এয়ার ইন্ডিয়াকে চিঠি লিখে এই বিমান ও এর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অনেক সতর্কবার্তা দিয়েছিল। এটি ইঙ্গিত করে যে বিমানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গুরুতর বিষয়গুলিকে উপেক্ষা করা হয়েছিল।

তিনি বলেন, প্রশ্ন উঠছে যে কীভাবে দুটি ইঞ্জিন একসাথে ব্যর্থ হতে পারে? কি রক্ষণাবেক্ষণে ত্রুটি ছিল? কি বিমানের প্রাক-উড্ডয়ন পরীক্ষা সঠিকভাবে হয়নি?

বিমানের বয়স ও বোয়িংয়ের ক্ষয়িষ্ণু সুনাম

দুর্ঘটনার শিকার বোয়িং 787 ড্রিমলাইনার মডেলের বিমানটির বয়স মাত্র ১০ বছর। যদিও বোয়িং একটি ১০০ বছরের প্রাচীন খ্যাতনামা সংস্থা, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তাদের বিমান নিয়ে ধারাবাহিকভাবে অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমেরিকায়ও FAA (Federal Aviation Administration) বোয়িংয়ের মান পরীক্ষা করছে।

ডাঃ কৌলের মতে, ভারতে বিমান চলাচলের নিয়মাবলী আন্তর্জাতিক মানের, কিন্তু যতক্ষণ না কার্যকরী পর্যায়ে কঠোরভাবে তা মানা হবে, ততক্ষণ ঝুঁকি থেকেই যাবে। এই দুর্ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে ভারত সরকার একটি উচ্চ-স্তরের যৌথ তদন্ত দল গঠন করেছে। এছাড়াও, আমেরিকা থেকে NTSB (National Transportation Safety Board) এবং বোয়িং সংস্থার একটি বিশেষজ্ঞ দলও ভারতে আসছে।

ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখন এর ডেটা বিশ্লেষণ থেকে জানা যাবে প্রযুক্তিগত ত্রুটির আসল কারণ কী ছিল— কি এটি ডিজাইনের ত্রুটি ছিল, রক্ষণাবেক্ষণে অবহেলা না পাইলটের কোন ভুল ছিল।

মৃতদের মধ্যে অনেক বিদেশী নাগরিক, সরকারের সাহায্যের চেষ্টা

এই দুর্ঘটনায় ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ ও ১ জন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন। অনেক দেশের সরকার দুর্ঘটনা সম্পর্কে ভারত সরকারের কাছ থেকে তথ্য চেয়েছে এবং সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে। ভারত সরকার দুর্ভোগীদের পরিবারকে সর্বাত্মক সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং দুর্ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

Leave a comment