রায়পুরের পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় অডিটোরিয়ামে বুধবার জরুরি অবস্থার ৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে 'সংবিধান হত্যা দিবস' অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছত্তিশগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেব সাই এই অনুষ্ঠানে জরুরি অবস্থার বেদনাদায়ক দিনগুলির স্মৃতিচারণ করে বলেন, এটি কেবল ইতিহাসের একটি তারিখ নয়, বরং এমন একটি অভিজ্ঞতা যা আমি এবং আমার পরিবারে বসবাস করেছি। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে এই দিনের সত্যতা অবশ্যই জানতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান যে তাঁর বড়ো পিতা স্বর্গীয় নরহরি প্রসাদ সাইকে জরুরি অবস্থার সময় ১৯ মাস জেল খাটতে হয়েছিল। তিনি বলেন, সেই সময় গণতন্ত্রের সৈনিকদের বাড়িতে উপোস করে থাকতে হতো, এমনকি উনুনও জ্বলত না এবং মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করা হয়েছিল।
যুবকদের সচেতন থাকার আবেদন
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সাই গণতন্ত্রের সৈনিক পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁদের শাল, শ্রীফল ও স্মারক চিহ্ন প্রদান করেন। তিনি জানান যে রাজ্য সরকার এমন পরিবারগুলিকে ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক সম্মাননা রাশি প্রদান করছে, যা তাঁদের সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একটি প্রচেষ্টা।
মুখ্যমন্ত্রী ছাত্র ও যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, সংবিধান রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী ও জীবিত রাখতে জনসচেতনতা এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি।
গণতন্ত্রের উপর কলঙ্ক লেপন করা হয়েছিল
ছত্তিশগঢ় বিধানসভার অধ্যক্ষ ড. রমন সিং অনুষ্ঠানে জরুরি অবস্থাকে ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর সবচেয়ে বড় আঘাত হিসাবে বর্ণনা করে বলেন, ২৫শে জুন ১৯৭৫ সেই দিন ছিল যখন গোটা দেশ একটি উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত হয়েছিল। হাজার হাজার মানুষকে কোনও আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই জেলে বন্দী করা হয়েছিল এবং তাঁদের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এটি কেবল রাজনৈতিক দমন ছিল না, বরং গণতন্ত্রের আত্মাকে ধ্বংস করার চেষ্টা ছিল।
ড. সিং যুবকদের আবেদন করেন যে তাঁরা জরুরি অবস্থার ইতিহাস পাঠ করুন এবং তা থেকে শিক্ষা নিন। তিনি সতর্ক করেন যে নাগরিকরা যদি সচেতন না হন তবে এমন পরিস্থিতি আবারও ফিরে আসতে পারে।
বিশেষ প্রদর্শনীতে জরুরি অবস্থার কালো সত্যের চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী সাই এবং বিধানসভার অধ্যক্ষ ড. রমন সিং অনুষ্ঠানের সময় জরুরি অবস্থা অবলম্বনে একটি বিশেষ প্রদর্শনীও পরিদর্শন করেন। এই প্রদর্শনীতে সেই সময়ের দমনমূলক নীতি, নাগরিক অধিকার হরণ এবং প্রেস সেন্সরশিপ ছবি ও দলিলের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছিল। উভয় নেতাই এই উদ্যোগকে নতুন প্রজন্মের কাছে গণতন্ত্রের মূল্য বোঝানোর একটি প্রচেষ্টা হিসেবে বর্ণনা করেন এবং গণতন্ত্রের সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।