আলিগড়-এর খের থানা এলাকায় একটি লজ্জাজনক ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে এক দলিত যুবককে শনি মন্দিরে (Shani Mandir) তিলক লাগানোর কারণে কয়েকজন লোক নির্মমভাবে মারধর করেছে। ঘটনাটি ২৩শে জুনের। জানা গেছে, জাঠব সম্প্রদায়ভুক্ত রাজু নামক এক ব্যক্তি শিওয়ালা খালের কাছে অবস্থিত শনি মন্দিরে যান এবং কপালে তিলক লাগান। অভিযোগ, মন্দিরে উপস্থিত কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি প্রথমে তাঁর জাতি জানতে চান এবং তারপর বলেন, "তুই মুসলমান।" এর উত্তরে রাজু নিজেকে দলিত বলে পরিচয় দেন। এরপরও অভিযুক্তরা তাঁর উপর হামলা চালায়। পুরো ঘটনার ভিডিও কেউ রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেয়, যার ফলে বিষয়টি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর পুলিশ নড়েচড়ে বসেছে। খের থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ভাইরাল ভিডিওর মাধ্যমে অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। আক্রান্ত ব্যক্তির বয়ান রেকর্ড করে মামলা রুজু করা হয়েছে। এই ঘটনা শুধু সামাজিক বৈষম্যের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে না, বরং ধর্মীয় স্থানগুলোতে আজও জাতিগত মানসিকতা কতটা গভীর, সেই প্রশ্নও তোলে।
হাতে ফ্র্যাকচার হয়েছে
উত্তরপ্রদেশের আলিগড় থেকে আসা এই ঘটনাটি আবারও জাতিগত ভেদাভেদ এবং ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আক্রান্ত রাজু, যিনি জাঠব সম্প্রদায়ের, জানিয়েছেন যে তিনি যখন শনি মন্দিরে তিলক লাগান, তখন কিছু লোক প্রথমে তাঁর জাতি জানতে চায় এবং পরে তাঁর জাতির ভিত্তিতে তাঁকে মারধর করে। এই হামলায় রাজুর গুরুতর আঘাত লাগে এবং তাঁর একটি হাতে ফ্র্যাকচার হয়।
রাজু জানিয়েছেন, ঘটনার পর তিনি প্রথমে স্থানীয় ফাঁড়ি এবং পরে থানায় যান, কিন্তু কোথাও তাঁর অভিযোগ শোনা হয়নি। অবশেষে, তিনি আলিগড়ের সিনিয়র পুলিশ সুপারের (এসএসপি) অফিসে যান, যেখানে এফআইআর (FIR) দায়ের করা হয়। এখন পুলিশ ভাইরাল ভিডিও এবং অন্যান্য সূত্র ধরে অভিযুক্তদের চিহ্নিত ও গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
খেত থেকে ফিরছিলেন
আলিগড়ের খের থানা এলাকায় দলিত যুবকের মন্দিরে তিলক লাগানোর কারণে মারধরের ঘটনাটি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বর্তমানে, আক্রান্তের স্ত্রী পুরো ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে জানিয়েছেন যে তাঁর স্বামী ক্ষেতে কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন, সেই সময় বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টি থেকে বাঁচতে তিনি কাছেই অবস্থিত শনি মন্দিরে আশ্রয় নেন। মন্দিরে পূজা করার পর তিনি যখন কপালে তিলক লাগান, তখন সেখানে উপস্থিত কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁর জাতি জানতে চায় এবং এরপর তাঁকে নির্মমভাবে মারধর করে।
ঘটনার পর আক্রান্ত পরিবার স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করে, যার ভিত্তিতে পুলিশ মামলা রুজু করেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে ঘটনার তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে এবং অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভাইরাল ভিডিওর পর প্রশাসনও সক্রিয় হয়েছে এবং পুরো ঘটনার উপর নজর রাখছে।