একটি জাদুঘর, যা বহু বছর ধরে বন্ধ ছিল, হঠাৎ করেই আবার খুলতে চলেছে। এই জাদুঘরটি দেওয়ালে ঝুলন্ত ভূতুড়ে ছবির জন্য বিখ্যাত ছিল, যা কেবল ভয়ঙ্করই ছিল না, বরং তাদের এক ধরণের রহস্যময় প্রভাব ছিল যা দেখলে মানুষ প্রায়ই অস্বস্তি বোধ করত। এই জাদুঘর নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে নানা রকমের গুজব ছিল, তবুও একটি সরকারি আদেশ এটিকে আবার জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই জাদুঘরটি তার ভূতুড়ে ছবিগুলির জন্য পরিচিত ছিল, যার মধ্যে কিছু ছবি এতটাই রহস্যময় ছিল যে মনে হত যেন ছবিগুলি দর্শকদের সাথে কথা বলছে। কিন্তু এবার জাদুঘরটি আবার খোলা সেসব মানুষের জন্য একটি বিপজ্জনক পদক্ষেপ হয়ে উঠল, যারা এই ছবিগুলির ভূতুড়ে প্রভাব সম্পর্কে ভালোভাবে পরিচিত ছিল। যদিও কিছু মানুষ জাদুঘরটি ঘুরে দেখার জন্য উৎসাহিত ছিল, কিছু বৃদ্ধ মানুষ এ নিয়ে ভীত ছিল। তাদের ধারণা ছিল এই জাদুঘরে আবার পা রাখা মৃত্যুর মুখে পা রাখার সমান।
জাদুঘরের প্রথম দিন: হঠাৎ করেই নিখোঁজ লোকজন
জাদুঘরের প্রথম দিনে, অনেক লোক জাদুঘর ঘুরে দেখার জন্য এসেছিল। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত জাদুঘর সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত ছিল। লোকেরা টিকিট নেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল, এবং জাদুঘরে প্রবেশ করার পর, প্রত্যেকের মুখে বিস্ময় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। তারা যে ছবিগুলি দেখেছিল, সেগুলি সত্যিই ভয়ঙ্কর এবং ভূতুড়ে ছিল। কিছু ছবি এতটাই জীবন্ত মনে হয়েছিল যেন তারা দর্শকদের সাথে কথা বলছে।
কিন্তু জাদুঘরে একটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। একটি পরিবারের শিশু হঠাৎ করেই নিখোঁজ হয়ে যায়। তার মা-বাবা জাদুঘরের প্রতিটি ঘরে গিয়ে তাকে খুঁজে পেতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তার কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। চিন্তিত পিতামাতা জাদুঘরের রক্ষীদের সাথে যোগাযোগ করে এই তথ্য জানিয়েছিল। রক্ষীরা CCTV ক্যামেরার মাধ্যমে শিশুটিকে খুঁজে পেতে চেষ্টা করে, কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, তাদের কোনও শিশু দেখা যায়নি। ঠিক তখনই আরও কয়েকজন এসে জাদুঘরে তাদের আত্মীয়স্বজনদের হারিয়ে ফেলার কথা বলে। রক্ষী এবং জাদুঘরের কর্মীরা অবাক হয়ে গেল কারণ এতক্ষণে অনেক লোক নিখোঁজ হয়ে গেছে।
পুলিশের প্রবেশ: জাদুঘরে কি ঘটছে?
এই ঘটনা এতটাই গুরুতর হয়ে ওঠে যে জাদুঘরের নিরাপত্তা দল অবিলম্বে পুলিশকে অবহিত করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশের গাড়ি জাদুঘরে পৌঁছে যায়। জাদুঘরের তল্লাশি শুরু হয়, কিন্তু কোনও নিখোঁজ ব্যক্তির কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পুলিশের তদন্তে একটি অবাক করা তথ্য সামনে আসে। একজন পুলিশ কর্মকর্তার নজর দেওয়ালে ঝুলন্ত একটি ভূতুড়ে ছবিতে পড়ে, যেখানে একজন মানুষ গাছে উল্টে ঝুলছে এবং তার পিছনে একজন মহিলার ভূত দেখা যাচ্ছে। পুলিশ কর্মকর্তা জাদুঘরের রক্ষীকে জিজ্ঞাসা করে, "এই ছবি আগেও এখানে ছিল?" রক্ষী জাদুঘর সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানত না, তাই সে জাদুঘরের কর্তৃপক্ষের কাছে জিজ্ঞাসা করে এবং জানতে পারে যে এই ছবিগুলি কয়েক শত বছর পুরানো।
পুলিশ কর্মকর্তা এই ব্যাপারটি বুঝতে পারছিল না। সে ভাবছিল যদি এই ছবিগুলি শত বছর পুরানো হয় তাহলে এতে আজকের যুগের মানুষ কীভাবে দেখা যেতে পারে? তারপর পুলিশ কর্মকর্তা অন্যান্য ছবিগুলিতে নজর দেয়। তারা দেখে যে ছবিগুলিতে যারা ছিল, তারা জাদুঘরে ঘুরতে আসা লোকেরাই। এটা দেখে পুলিশ কর্মকর্তার উদ্বেগ বেড়ে যায়। এখন এই ঘটনা পুলিশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, তাই একজন ভূত বিশেষজ্ঞকে ডাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ভূত বিশেষজ্ঞের প্রবেশ: জাদুঘরে ঘটে যাওয়া ঘটনা
কিছুক্ষণের মধ্যেই ভূত বিশেষজ্ঞ জাদুঘরে পৌঁছে যান এবং সমস্ত ছবি সাবধানে দেখেন। যখনই ভূত বিশেষজ্ঞ জাদুঘরের ভিতরে এসে লোকজন দেখা শুরু করে, হঠাৎ করেই সব নিখোঁজ লোকেরা ছবিগুলিতে জীবন্ত হয়ে ওঠে। যাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়, তারা সকলেই জাদুঘরের ভিতরে হারিয়ে যাওয়া লোকেরাই। লোকেরা তাদের আত্মীয়স্বজনদের দেখে আনন্দের সাথে নাচতে থাকে এবং মনে হয় তারা এখন মুক্তি পেয়েছে।
কিন্তু ঠিক তখনই একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। যখন লোকেরা জাদুঘর থেকে বের হতে শুরু করে, হঠাৎ করে একজন ব্যক্তির মাথায় গুলি লাগে। গুলি চলতে থাকে এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লোকেরা বুঝতে পারে না কি হচ্ছে, তার আগেই আরও বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়।
পুলিশে ঢুকে পড়া ভূত: একটি নতুন রহস্য
পুলিশ কর্মকর্তারা সম্পূর্ণরূপে ভীত হয়ে যায়, কারণ গুলি চালানোর পিছনে কেউ নয়, তাদের নিজস্ব পুলিশ কর্মীরা। পুলিশ কর্মকর্তারা ভূত বিশেষজ্ঞের কাছে যান এবং তাকে জিজ্ঞাসা করেন, "আমার লোকেরা হঠাৎ করে এতটাই ক্রুদ্ধ কেন হয়ে উঠল, যারা সাধারণ মানুষকে গুলি করছে?" ভূত বিশেষজ্ঞ সন্দেহ করেন যে আত্মারা এখন পুলিশ কর্মীদের দেহে প্রবেশ করেছে। কিন্তু সে এটা কীভাবে সারাবে তা সে জানত না।
তারপর ভূত বিশেষজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তাকে বলে যে জাদুঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া উচিত, যাতে এই সমস্যা আরও বড় হওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। পুলিশ কর্মকর্তারা ভূত বিশেষজ্ঞের সাথে জাদুঘর থেকে বেরিয়ে আসে এবং জাদুঘরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গুলি চালানো বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠেছে যে জাদুঘরটি আবার খোলা সঠিক ছিল কি না?
জাদুঘরে আর কোন ভূতুড়ে ছবি ছিল না, কিন্তু জীবন্ত ভূত অবশ্যই এসেছিল। জাদুঘর খোলার সাথে জড়িত এই গল্পটি কেবল একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা নয়, বরং এটি আমাদের বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে যে কিছু আবার খোলার আগে তার প্রভাব এবং পরিণামগুলির উপর বিবেচনা করা জরুরী। জাদুঘরের ঘটনাটি শাসনের সিদ্ধান্তের উপর প্রশ্ন তোলে এবং মানুষকে বুঝতে দেয় যে কখনও কখনও পুরানো জিনিসগুলি আবার উন্মোচন করা নতুন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।