বারাণসী শহর নিয়ে পৌরাণিক কাহিনী

🎧 Listen in Audio
0:00

বারাণসী শহর নিয়ে পৌরাণিক কাহিনী

বারাণসী, যা কাশী এবং বেনারস নামেও পরিচিত, হিন্দু ধর্মের পবিত্রতম শহরগুলির মধ্যে একটি। এই শহরের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি অত্যন্ত প্রাচীন এবং সমৃদ্ধ। বারাণসী নিয়ে অনেক পৌরাণিক কাহিনী প্রচলিত আছে, যার মধ্যে প্রধান একটি কাহিনী ভগবান শিবের সাথে সম্পর্কিত।

 

ভগবান শিব এবং বারাণসীর প্রতিষ্ঠা:

পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, বারাণসীর সম্পর্ক সরাসরি ভগবান শিবের সাথে। মনে করা হয় যে এই শহরটি স্বয়ং ভগবান শিব দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এক সময়, ভগবান শিব ও মাতা পার্বতী কৈলাস পর্বত ছেড়ে পৃথিবীতে আসার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা এমন একটি জায়গার সন্ধান করছিলেন যা শান্ত এবং পবিত্র হবে। তাঁদের অনুসন্ধান শেষ হয় যখন তাঁরা গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত একটি সুন্দর স্থানে পৌঁছান। তাঁরা এটিকে তাঁদের বাসস্থান বানানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং এর নাম দেন 'কাশী', যার অর্থ 'আলোর স্থান'।

ভগবান শিব বলেছিলেন যে কাশীতে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তি তাঁর সুরক্ষায় থাকবে এবং কখনও কোনও প্রকার কষ্ট পাবে না। আরও মনে করা হয় যে কাশীতে মৃত্যু লাভকারী ব্যক্তি সরাসরি মোক্ষ লাভ করে এবং পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তি পায়। এই কারণে বারাণসীকে মোক্ষ নগরীও বলা হয়।

 

বিষ্ণু ও শিবের কাহিনী:

অন্য একটি পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, ভগবান বিষ্ণু একবার কাশীতে এসে তপস্যা করেছিলেন। তাঁর তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে ভগবান শিব তাঁকে দর্শন দেন এবং বর দেন যে, যে ব্যক্তি কাশীতে এসে গঙ্গায় স্নান করবে এবং তাঁর (শিব) ধ্যান করবে, সে মোক্ষ লাভ করবে। তাই, বারাণসীতে গঙ্গা স্নান ও শিব পূজার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।

দুর্গাকুণ্ড ও দুর্গা মন্দিরের কাহিনী:

বারাণসীতে অবস্থিত দুর্গাকুণ্ড ও দুর্গা মন্দিরেরও একটি পৌরাণিক কাহিনী আছে। কথিত আছে যে এই স্থানে দেবী দুর্গা মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন। এখানকার মন্দির ও পুকুর এই ঘটনার স্মৃতিতে নির্মিত হয়েছে। প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় হাজার হাজার ভক্ত এই মন্দিরে আসেন এবং দেবী দুর্গার পূজা করেন।

 

এই পৌরাণিক কাহিনীগুলি বারাণসীকে একটি বিশেষ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য দিয়েছে। এই শহরটি শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি ভারতীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতার একটি প্রধান কেন্দ্রও বটে।

Leave a comment