উপস্থাপনা, বিখ্যাত এবং অনুপ্রেরণামূলক গল্প, লোভী বিড়াল এবং বাঁদর

🎧 Listen in Audio
0:00

উপস্থাপনা, বিখ্যাত এবং অনুপ্রেরণামূলক গল্প, লোভী বিড়াল এবং বাঁদর

একটি জঙ্গল ছিল, যেখানে সব প্রাণী আনন্দে একসাথে বাস করত। সমস্ত প্রাণী জঙ্গলের নিয়ম মেনে চলত এবং প্রতিটি উৎসব একসাথে উদযাপন করত। সেই প্রাণীদের মধ্যে চিনি এবং মিনি নামের দুটি বিড়ালও ছিল। তারা দুজনেই খুব ভালো বন্ধু ছিল এবং একে অপরের সঙ্গ কখনও ছাড়ত না। অসুস্থতায় একে অপরের যত্ন নেওয়া, বাইরে একসাথে যাওয়া, এমনকি তারা দুজনে একসাথে খাবারও খেত। জঙ্গলে বসবাসকারী সব প্রাণী তাদের বন্ধুত্বের প্রশংসা করত। একবার কি হল, মিনির কিছু কাজের জন্য বাজারে যেতে হয়েছিল, কিন্তু কোনো কারণে চিনি তার সাথে যেতে পারেনি। চিনি একা থাকতে বিরক্ত হয়ে ভাবল, সেও বাজারে ঘুরে আসবে।

রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় সে একটি রুটির টুকরো পেল। তার মনে হল, সে একাই এই রুটি খাবে এবং লোভ করে সেই টুকরো নিয়ে বাড়ি এল। যেই সে রুটির টুকরোটি খেতে যাবে, অমনি মিনি সেখানে এসে হাজির। মিনি তার হাতে রুটি দেখে তাকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল, “চিনি, আমরা তো সব ভাগ করে খাই এবং তুই আমার সাথেই খাস, তাহলে আজ তুই আমাকে রুটি দিবি না?” চিনি মিনিকে দেখে ঘাবড়ে গেল এবং মনে মনে মিনিকে বলতে লাগল। এই শুনে চিনি অপ্রস্তুত হয়ে বলল, “আরে না, আমি তো রুটির দুটো সমান ভাগ করছিলাম, যাতে আমরা দুজনেই সমান রুটি পাই।”

মিনি সবকিছু বুঝতে পেরেছিল এবং তার মনেও লোভ জেগেছিল, কিন্তু সে কিছু বলল না। যেই রুটির টুকরো করা হল, মিনি চেঁচিয়ে বলল যে, “আমি কম রুটি পেয়েছি।” রুটি যেহেতু চিনি পেয়েছিল, তাই সে তাকে কম দিতে চেয়েছিল। তবুও সে বলল যে, “রুটি তো সমান ভাবেই দেওয়া হয়েছে।” এই নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়ে গেল এবং ধীরে ধীরে এই ঘটনা পুরো জঙ্গলে ছড়িয়ে পড়ল। সব প্রাণী তাদের দুজনকে ঝগড়া করতে দেখছিল। ঠিক সেই সময় সেখানে একটি বাঁদর এল এবং বলল যে, “আমি দুজনের মধ্যে সমান রুটি ভাগ করে দেব।” সব প্রাণী বাঁদরের কথায় রাজি হলো।

অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুজনে বাঁদরকে রুটি দিল। বাঁদর কোথা থেকে যেন একটা দাঁড়িপাল্লা নিয়ে এল এবং দুটো দিকে রুটির টুকরো রাখল। যে দিকে ওজন বেশি থাকত, সে দিকের কিছুটা রুটি, “আমি এই রুটিকে অন্য দিকের রুটির ওজনের সমান করছি,” এই কথা বলে খেত। সে জেনেশুনে বেশি রুটির টুকরো খেত, যার ফলে অন্য দিকের রুটি ওজনে বেশি হয়ে যেত। এইভাবে করতে করতে দুই দিকে রুটির খুব ছোট ছোট টুকরো অবশিষ্ট থাকল। বিড়াল দুটি যখন এত কম রুটি দেখল, তখন তারা বলতে লাগল, “আমাদের রুটির টুকরোগুলো ফেরত দাও। আমরা বাকি রুটি ভাগ করে নেব।” তখন বাঁদর বলল, “আরে বাহ! তোমরা দুজনেই খুব চালাক। আমাকে আমার পরিশ্রমের ফল দেবে না?” এই কথা বলে বাঁদর দুটো পাল্লায় থাকা রুটির টুকরোগুলো খেয়ে চলে গেল এবং দুটি বিড়াল একে অপরের দিকে তাকিয়ে রইল।

এই গল্প থেকে আমরা শিখতে পারি যে, আমাদের কখনও লোভ করা উচিত নয়। আমাদের কাছে যা আছে, তাতেই সন্তুষ্ট থাকা উচিত এবং একে অপরের সাথে মিলেমিশে থাকা উচিত। লোভ করলে আমাদের কাছে যা আছে, তাও হারাতে হতে পারে।

আমাদের প্রচেষ্টা হল, এভাবেই যেন আমরা আপনাদের সকলের জন্য ভারতের অমূল্য ধন, যা সাহিত্য, শিল্পকলা এবং গল্পের মধ্যে রয়েছে, তা সহজ ভাষায় পৌঁছে দিতে পারি। এইরকমই অনুপ্রেরণামূলক গল্প-কাহিনি পড়ার জন্য subkuz.com-এর সাথে থাকুন।

Leave a comment