শেখ চিল্লির বোকামি: লবণ ও তুলার বস্তার গল্প

🎧 Listen in Audio
0:00

নিজের বোকামির কারণে শেখচিল্লি অনেক চাকরি হারিয়েছিল। কিছুদিন পর শেখচিল্লি তার কাছের একটি দোকানে কাজ পেল। প্রতিদিন দোকানদার তাকে কিছু জিনিস অন্য জায়গায় পৌঁছে দিতে বলত। একদিন দোকানদার শেখকে এক বস্তা লবণ দিয়ে অন্য গ্রামে পৌঁছে দিতে বলল। শেখও আনন্দের সাথে বস্তাটি মাথায় নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। পথে একটি নদী পড়ত। পার হওয়ার সময় হঠাৎ লবণের বস্তাটি নদীতে পড়ে গেল। কোনোমতে শেখ নদী থেকে বস্তাটি তুলে আবার মাথায় নিল।

বস্তাটি পানিতে পড়ার কারণে অনেকটা লবণ গলে গিয়েছিল, তাই শেখের বস্তাটি হালকা লাগছিল। ওজন কম হওয়ার কারণে শেখ দ্রুত সেখানে পৌঁছে গেল, যেখানে তাকে যেতে বলা হয়েছিল। লবণের বস্তাটি সেখানে রেখে শেখ দোকানে ফিরে আসতে লাগল। এদিকে, শেখ যেখানে বস্তাটি পৌঁছে দিয়েছিল, সেখান থেকে দোকানদার পর্যন্ত এই খবর পৌঁছাল যে বস্তাটি হালকা ছিল। ওদিকে, শেখ যেইমাত্র দোকানে ফিরে এল, তার মালিক বস্তার ওজন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। শেখ তাকে সব ঘটনা খুলে বলল। দোকানদার এটিকে শেখের অজান্তে হওয়া ভুল ভেবে ক্ষমা করে দিল এবং তাকে অন্য কাজে লাগিয়ে দিল।

কয়েকদিন পর দোকানদার শেখকে তুলোর বস্তা দিয়ে সেই একই ঠিকানায় পাঠাল যেখানে সে লবণ নিয়ে গিয়েছিল। শেখ তৎক্ষণাৎ তুলোর বস্তাটি তুলে নিল এবং সামনের দিকে এগোতে লাগল। তুলোর বস্তাটি হালকা ছিল, কিন্তু শেখের মনে লবণের বস্তা হালকা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ঘুরছিল। এটাই ভাবতে ভাবতে শেখচিল্লি সেই নদীর কাছে পৌঁছল, যেখানে লবণের বস্তাটি পড়েছিল। শেখের মনে হল, লবণের বস্তা এখানে পড়ার কারণে হালকা হয়ে গিয়েছিল, তাই এই তুলোর বস্তাটিও যদি নদীতে ফেলে দেওয়া যায়। এই ভেবে শেখ তুলোর বস্তাটি নদীতে ফেলে দিল এবং কিছুক্ষণ পর সেটি তোলার চেষ্টা করতে লাগল।

ততক্ষণে তুলো অনেকটা জল শুষে নিয়েছিল এবং হালকা বস্তাটি ভারী হয়ে গিয়েছিল। কোনোমতে শেখ সেই ভারী বস্তাটি কাঁধে তুলে সেই ঠিকানায় পৌঁছল, যেখানে লবণ নিয়ে গিয়েছিল। এইবার বস্তাটি ভারী দেখে সেই ব্যক্তি আবার দোকানদারকে খবর দিল। যেইমাত্র শেখ দোকানে পৌঁছল, মালিক তাকে জিজ্ঞাসা করল যে আজ বস্তাটি এত ভারী কেন। শেখ বলল, “মালিক, আজ আবার বস্তাটি পানিতে পড়ে গিয়েছিল।” দোকানদার বুঝতে পারল যে শেখচিল্লি এই বস্তাটিও লবণের বস্তার মতো হালকা করতে চেয়েছিল, তাই জেনেশুনে বস্তাটি পানিতে ফেলেছে। এই কারণে রেগে গিয়ে দোকানদার শেখচিল্লিকে তার দোকান থেকে বের করে দিল এবং আবারও শেখচিল্লির চাকরি চলে গেল।

এই গল্প থেকে এই শিক্ষা পাওয়া যায় যে – যারা কাজচুরি করার চেষ্টা করে তাদের কাজ আরও বেড়ে যায়। এছাড়াও, সব পরিস্থিতিতে একই নিয়ম প্রযোজ্য হয় না, তাই একবার বস্তা পড়ে হালকা হয়ে গিয়েছিল আর দ্বিতীয়বার ভারী।

Leave a comment