আলীফ লাইলা - দরিয়াবারের রাজকুমারীর গল্প
রাজকুমারী জেনুসনাম এবং হেরনের ৪৯ জন রাজপুত্রকে গল্প শোনাতে শুরু করলেন। তিনি বললেন, “আমি কায়রোর কাছাকাছি দরিয়াবার দ্বীপের বাদশাহর কন্যা। আমার পিতা বহু বছর ধরে প্রার্থনা করেছিলেন, তারপর আমি জন্মগ্রহণ করেছি। তিনি আমাকে রাজনীতি, ঘোড়ায় চড়া এবং রাজ্য পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সকল দক্ষতা শিখিয়েছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল আমার পর আমিই দরিয়াবারের সকল কাজকর্ম দেখবো।” রাজকুমারী আরও বললেন, “একদিন আমার পিতা শিকার করতে বনে গেলেন। যাওয়ার সময় তিনি ঘন বনে পৌঁছে গেলেন। সেখানে তিনি একজন লম্বা লোককে দেখলেন, যার কাছে একজন নারী ও একজন ছোটো বাচ্চা বসে কাঁদছিল। সেই লোকটি প্রচুর খাবার খাওয়ার পর সেই নারীর সাথে বিয়ে করার জন্য জোরাজুরি করতে লাগল। নারীটি রাজি না হলে তিনি তার উপর রেগে গেলেন। আমার পিতা দূর থেকে সব দেখছিলেন। যখন তিনি দেখলেন সেই লোকটি নারীটির উপর হাত তুলতে যাচ্ছে, তখন তিনি তার ধনুক-বাণ থেকে বাণ ছুড়ে মারলেন, যা সোজা সেই লোকটির বুকে গিয়ে লাগল। তৎক্ষণাৎ সেই দানবের মৃত্যু হলো।
আমার পিতা সেই নারীর কাছ থেকে তার গল্প জিজ্ঞাসা করলেন। নারীটি বললেন, “আমি কাছাকাছি সরাসং উপজাতির প্রধানের কন্যা এবং আপনি যাকে মেরেছেন সে আমাদের বাড়িতে কাজ করত। তার অনেক আগে থেকেই আমার উপর তার নজর ছিল। একদিন সুযোগ পেয়ে সে আমাকে এবং আমার ছেলেকে এই বনে নিয়ে এসে বিয়ে করার জন্য জোরাজুরি করতে লাগল। এখন আমি বুঝতে পারছি না আমি বাড়ি ফিরে কী বলবো।” রাজকুমারী বললেন, “সেই নারীর কথা শুনে আমার পিতা তাকে নিয়ে তার প্রাসাদে চলে আসেন। তারা সেই নারী এবং তার ছেলের যত্ন নিলেন। যখন সেই নারীর ছেলে বড় হলো, তখন সবাই আমার এবং ছেলেটির বিয়ে নিয়ে কথা বলতে শুরু করলো। ছেলেটি শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান ছিল, তাই আমার পিতা আমাদের বিয়ে ঠিক করে দিলেন। এরপর বিয়ের কয়েকদিন আগে ছেলেটিকে বলা হলো, ‘তুমি আমার মেয়ের সাথে বিয়ে করছো। বিয়ের পর আমি তোমাকে এখানকার বাদশাহ বানাবো।’ এই কথা শুনে ছেলেটি খুব খুশি হলো। এই সময় দরিয়াবারের বাদশাহ বললেন, ‘তবে, আমারও একটা শর্ত আছে।’
```