চিন্টু বাঁদরের দুষ্টুমি এবং তার শাস্তি

🎧 Listen in Audio
0:00

জঙ্গলে চিন্টু নামের একটি বাঁদর থাকত। তার দুষ্টুমিতে বনের সমস্ত পশুরা অতিষ্ঠ হয়ে থাকত। সে ছিল খুব দুষ্টু এবং চালাক, যে তার প্রতিটি দুষ্টুমি থেকে সহজেই বেঁচে যেত। কখনও গাছ থেকে ফল ফেলে দিত, তো কখনও পশুদের নিয়ে ঠাট্টা করত, এবং প্রতিবার যখন তার চালাকি ধরা পড়ত, তখন সে দুষ্টুমিতে হাসত এবং অন্যদের বিরক্ত করে চলে যেত। কিন্তু এইবার তার দুষ্টুমি তার জন্য ভারী হতে চলেছে।

চিন্টুর দুষ্টুমি

এটি একটি শীতের সকালের গল্প, যখন চিন্টু বাঁদরটি জঙ্গলের পুকুরের ধারে থাকা হাঁসগুলোর সাথে দুষ্টুমি করার মনস্থির করে। সে প্রথমে গাছ থেকে আঠা সংগ্রহ করে এবং তারপর সেই আঠা পুকুরের কাছের একটি পাথরের উপরে লাগিয়ে দেয়। সে জানত যে হাঁসগুলো রোজ সকালে পুকুরে স্নান করতে আসে এবং সেই পাথরের উপর বসে। এইবার সে চেয়েছিল যে হাঁসগুলো এই আঠালো পাথরের উপর আটকে যাক এবং তারপর সে তার দুষ্টুমিতে মজা করতে পারে।

হাঁসদের রাগ এবং মোরগদের সাহায্য

যেমনটা সে ভেবেছিল, হাঁসগুলো সকালে পুকুরের দিকে আসে এবং পাথরের উপর বসে। কিছুক্ষণ পর যখন তারা সাঁতার কাটার জন্য ওঠে, তখন তারা অনুভব করতে শুরু করে যে তাদের শরীর পাথরের সাথে আটকে গেছে। হাঁসগুলো ঘাবড়ে গিয়ে চেঁচামেচি করতে শুরু করে এবং তাদের ডানা ঝাপটাতে থাকে, কিন্তু কোন লাভ হয় না। চিন্টু বাঁদর গাছ থেকে নেমে হাঁসগুলোর মজা করছিল এবং খুশি হচ্ছিল। কিন্তু হাঁসগুলো রেগে যায়। তারা চাইছিল যে কোনোভাবে তাদের এই বিপদ থেকে উদ্ধার করা হোক। তখনই মোরগের দল জল পান করার জন্য পুকুরের কাছে আসে। হাঁসগুলো মোরগদের তাদের সমস্যার কথা জানায় এবং মোরগগুলো আঠার উপর জল ঢেলে সেটি নরম করে, যার ফলে হাঁসগুলো সহজে মুক্ত হয়ে যায়। হাঁসগুলো মোরগদের ধন্যবাদ জানায় এবং আবার পুকুরে সাঁতার কাটতে শুরু করে।

হাঁস মণির পরিকল্পনা

কিন্তু হাঁসগুলোর মধ্যে একটি হাঁস, যার নাম ছিল মণি, সে চিন্টু বাঁদরকে শাস্তি দেওয়ার মনস্থির করে। মণি বুঝতে পেরেছিল যে বাঁদরটি দুষ্টুমি করেছে এবং এখন তার শাস্তি পাওয়া উচিত। সে এই বিষয়ে একটি পরিকল্পনা করে এবং ঠিক করে যে পরের দিন তাকে শেখাতে হবে যে দুষ্টুমির শাস্তি কী হয়।

চিন্টুর ভুল এবং শাস্তি

পরের দিন সকালে, চিন্টু বাঁদর পুকুরে স্নান করতে যায়। সে ঘুমে ছিল এবং চোখ রগড়াতে রগড়াতে পুকুরের ধারে বসে ছিল। হঠাৎ, সে অনুভব করে যে তার লেজ কিছুতে আটকে গেছে। যখন সে তার লেজ নাড়ায়, তখন সে বুঝতে পারে যে সে জালে ফেঁসে গেছে। চিন্টু নিজেকে ছাড়ানোর যত চেষ্টা করতে থাকে, তার অবস্থা ততই খারাপ হতে থাকে। সে বুঝতে পেরেছিল যে এটি সেই শাস্তি, যা তার প্রাপ্য ছিল।
সে এখন বুঝতে পেরেছিল যে জঙ্গলের অন্যান্য পশুদের বিরক্ত করা এবং দুষ্টুমি করার ফল কী হতে পারে। তখনই সে আওয়াজ শুনতে পায় এবং দেখে যে হাঁস এবং একজন শিকারী তার দিকে তাকিয়ে আছে।

শিকারীর বিরক্ত করা

শিকারী ধীরে ধীরে কাছে আসে এবং চিন্টু বাঁদরকে ধরে শহরে নিয়ে যায়, যেখানে তাকে এক ভেলকিবাজের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। ভেলকিবাজ তাকে মারধর করে নাচতে শেখায়। এখন চিন্টু বুঝতে পারল যে তার দুষ্টুমির কারণে সে দাসত্বের জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়েছে। যদি সে দুষ্টুমি না করত, তাহলে তাকে এই দিন দেখতে হত না।

এই গল্প থেকে আমরা শিখতে পারি যে

দুষ্টুমি করা এবং অন্যদের বিরক্ত করা কখনওই ঠিক নয়। যে মানুষ অন্যের দুঃখের কারণ হয়, সে নিজেও একদিন দুঃখ পায়। তাই আমাদের সবসময় অন্যের সাথে ভালো ব্যবহার করা উচিত এবং নিজেদের চালাকিগুলো ভালো কাজে ব্যবহার করা উচিত।

```

Leave a comment