মেঘালয়ে ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশীর হত্যার পর তাঁর ভাই অভিযুক্তদের এনকাউন্টারের দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ অভিযুক্তা সোনমসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে। তদন্তের জন্য অভিযুক্তদের ঘটনাস্থলেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলা: মেঘালয়ের সোহরা অঞ্চলে ইন্দোরের ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশীর হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত এগিয়ে চলেছে। মঙ্গলবার, ১৭ জুন মেঘালয় পুলিশ অভিযুক্তা সোনম এবং অন্যান্য গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ক্রাইম সিন রিক্রিয়েট করে। এই পদক্ষেপ তদন্তকে শক্তিশালী করার এবং হত্যার সাথে জড়িত সমস্ত তথ্য যুক্ত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
বিপিন রঘুবংশীর আবেগঘন প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনাপ্রবাহে রাজা রঘুবংশীর ভাই বিপিন রঘুবংশীর প্রতিক্রিয়া প্রকাশিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, "পুলিশ ভালো কাজ করছে, কিন্তু আমরা চাই তাদের সরাসরি এনকাউন্টার করা হোক। আজ তদন্ত করবে, কাল জেলে পাঠাবে, এর কি লাভ? যখন এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে তারা হত্যা করেছে, তখন তাদের শেষ করে দেওয়া উচিত।"
'যদি সোনমের সাথে আমার সাক্ষাৎ হয় তাহলে আমি জিজ্ঞাসা করবো কেন সে রাজাকে মেরেছে?'
বিপিনকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয় যে অভিযুক্তা সোনমের সাথে যদি তার সাক্ষাৎ হয় তাহলে সে কী করবে, তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, "আমি তাকে শুধু এটাই জিজ্ঞাসা করবো যে রাজা কী করেছিল যে তাকে মারতে হয়েছিল? যদি তাকে ছেড়ে দিতে হতো তাহলে ছেড়ে দিতো, মারার কি প্রয়োজন ছিল?"
'সোনম সমগ্র মেঘালয়ের ছবি নষ্ট করেছে' - সচিন রঘুবংশী
রাজার আরেক ভাই সচিন রঘুবংশীও তাঁর ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, "আমি মেঘালয় পুলিশের কাজে সন্তুষ্ট, কিন্তু সোনম শুধু আমাদের পরিবারকে নয়, সমগ্র মেঘালয়ের ছবি নষ্ট করেছে। এমন অপরাধের জন্য তাকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া উচিত। তাকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত জেলে রাখা উচিত, কোনও জামিন দেওয়া উচিত নয়।"
'সোনমকে কঠোর শাস্তি হোক' - পরিবারের একযোগে দাবি
পরিবারের স্পষ্ট বক্তব্য হলো সোনম পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। তার এই কাজ শুধু হত্যা নয়, বরং সামাজিক এবং পর্যটন স্থলের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ণ করা। এমতাবস্থায় তাদের ন্যায় পাবার জন্য অভিযুক্তকে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।
হত্যার পুরো ঘটনাপ্রবাহ
ইন্দোরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী রাজা রঘুবংশী তাঁর স্ত্রী সোনমের সাথে হানিমুন উদযাপনের জন্য মেঘালয়ে গিয়েছিলেন। ২৩ মে তাঁর হত্যা করা হয়। মামলার তদন্তে জানা যায় এই হত্যার পিছনে সোনম এবং তার কথিত প্রেমিক রাজের ষড়যন্ত্র ছিল। মেঘালয় পুলিশ সোনম, রাজসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের সেই উপত্যকার উপরের পার্কিং স্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যেখানে ২ জুন রাজার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল।
তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশ অভিযুক্তদের ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে তাদের বক্তব্যের ভিত্তিতে রাজার হত্যার শেষ মুহূর্তের দৃশ্য তৈরি করতে বলেছে। এই পদক্ষেপ মামলার নিশ্চিত তদন্তের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, অভিযুক্তরা জিজ্ঞাসাবাদে সহযোগিতা করছে এবং ক্রাইম সিনে তাদের উপস্থিতি তদন্তে দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, মামলার গভীর তদন্ত চলছে এবং শীঘ্রই চার্জশিট দাখিল করা হবে।