ভারত ও চীনের সামরিক শক্তি: একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ

🎧 Listen in Audio
0:00

ভারত ও চীনের সামরিক শক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পান, যার মধ্যে তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট, সেনার সংখ্যা এবং অস্ত্রশস্ত্র অন্তর্ভুক্ত। আসুন, প্রথমে উভয় দেশের প্রতিরক্ষা বাজেট নিয়ে আলোচনা করি।

চীনের প্রতিরক্ষা বাজেট ২ ২৮ বিলিয়ন ডলার, যা তাদের জিডিপির ১.৯%, যেখানে ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট ৫৫.৯ বিলিয়ন ডলার, যা তাদের জিডিপির ২.৫%। তুলনামূলকভাবে, ভারতের বাজেট চীনের তুলনায় বেশ কম এবং আমাদের জিডিপি বৃদ্ধির হারও বেশ কম। আসুন, এবার উভয় দেশের সামরিক শক্তি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

চীনের একটি বিশাল ভূমি এলাকা রয়েছে, যা ৯৫,৯৬,৯৬১ বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এবং বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ। ফলস্বরূপ, চীনের কাছে প্রায় ৩৮০ মিলিয়ন কর্মী সহ বৃহত্তম সামরিক বাহিনী রয়েছে, যার মধ্যে ২৩ লক্ষ সক্রিয় এবং ৮০ লক্ষ সংরক্ষিত সামরিক কর্মী রয়েছে।

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ ভারতেরও একটি বিশাল সেনাবাহিনী রয়েছে। ভারতে ৩১০ মিলিয়ন কর্মী রয়েছে, যার মধ্যে ২১ লক্ষ সক্রিয় এবং ১১ লক্ষ সংরক্ষিত সামরিক কর্মী রয়েছে। কোনো দেশের সামরিক শক্তি প্রায়শই তার সশস্ত্র বাহিনীর আকার দ্বারা নির্ধারিত হয়।

 

এখন উভয় দেশের স্থল সেনা নিয়ে আলোচনা করা যাক-

চীনের কাছে ৭,৭৬০টি ট্যাঙ্ক এবং ৬,০০০টি সাঁজোয়া যুদ্ধ যান রয়েছে, যেখানে ভারতের কাছে ৪,৪২৬টি ট্যাঙ্ক এবং ৫,৬৮১টি সাঁজোয়া যুদ্ধ যান রয়েছে। কামানগুলির কথা বললে, চীনের কাছে মোট ৯,৭২৬টি কামান রয়েছে, যেখানে ভারতের কাছে ৫,০৬৭টি রয়েছে। সামগ্রিকভাবে, উভয় দেশের স্থল সেনা তুলনীয়।

নৌবাহিনীর দিকে এগিয়ে গেলে দেখা যায়, যা কোনো দেশের সমুদ্রসীমা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চীন ও ভারত উভয়েরই দুটি করে বিমানবাহী রণতরী রয়েছে। তবে, চীনের ৭৬টি সাবমেরিন রয়েছে, যেখানে ভারতের ১৫টি সাবমেরিন রয়েছে, যা চীনের শক্তিশালী নৌ উপস্থিতি নির্দেশ করে।

উভয় দেশের বায়ু শক্তি মূল্যায়ন করা যাক।

চীনের কাছে মোট ৪,১৮২টি বিমান রয়েছে, যার মধ্যে ১,১৫০টি যুদ্ধবিমান, ৬২৯টি মাল্টিরোল বিমান, ২৭০টি অ্যাটাক বিমান এবং ১,১৭০টি হেলিকপ্টার রয়েছে। বিপরীতে, ভারতের কাছে ২,২16টি বিমান রয়েছে, যার মধ্যে ৩২৩টি যুদ্ধবিমান, ৩২৯টি মাল্টিরোল বিমান, ২২০টি অ্যাটাক বিমান এবং ৭২৫টি হেলিকপ্টার রয়েছে। ভারত ও চীন উভয়ই পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ, যারা যুদ্ধের সময় পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করতে সক্ষম।

ভারতকে শুধু চীন নয়, পাকিস্তানের থেকেও হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। সংঘাতের সময়ে, পাকিস্তান চীনের সাথে হাত মেলাতে পারে, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মতো দেশ, যারা ভারতকে সাহায্য করতে পারে, তারা ভৌগলিকভাবে অনেক দূরে অবস্থিত। ভারতের তিনটি সামরিক শাখার মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ নিযুক্ত করা হয়েছিল।

 

উপসংহারে, ভারত ও চীনের সামরিক শক্তি কিছু ক্ষেত্রে তুলনীয় হলেও, চীনের বিশাল প্রতিরক্ষা বাজেট এবং উন্নত নৌবাহিনী এটিকে বিশেষ করে সমুদ্র প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখে।

Leave a comment