শারদ পাওয়ারের ৮৩তম জন্মদিন: জীবন ও কর্মের এক ঝলক

🎧 Listen in Audio
0:00

শারদ পাওয়ারের জন্মদিন ১২ই ডিসেম্বর পালিত হয়। তাঁর জন্ম হয়েছিল ১৯৪০ সালের ১২ই ডিসেম্বর। শরদচন্দ্র গোবিন্দরাও পাওয়ার, যিনি শরদ পাওয়ার নামেই পরিচিত, ভারতীয় রাজনীতির একজন দিকপাল, যিনি মহারাষ্ট্র এবং জাতীয় স্তরে গভীর প্রভাব ফেলেছেন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রী এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসাবে তাঁর কার্যকালে, পাওয়ার তাঁর নেতৃত্ব ক্ষমতা এবং প্রশাসনিক দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন।

ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)-র প্রতিষ্ঠাতা পাওয়ারের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৯৯ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস থেকে আলাদা হয়ে নতুন রাজনৈতিক দিশা দেওয়ার মাধ্যমে। যদিও, গত কয়েক বছরে তাঁর ভাইপো অজিত পাওয়ারের নেতৃত্বে এনসিপিতে বিভাজন মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। শরদ পাওয়ার বর্তমানে তাঁর দলের নেতা হিসাবে রাজ্যসভায় এনসিপির প্রতিনিধিত্ব করছেন।

মহাবিকাশ আঘাড়ির সভাপতি জোটের রাজনীতির ভারসাম্য

মহারাষ্ট্রে মহাবিকাশ আঘাড়ি জোটের সভাপতি হিসাবে, পাওয়ার শিবসেনা, কংগ্রেস এবং এনসিপি-র মতো ভিন্ন মতাদর্শের দলগুলিকে একত্রিত করে সরকার চালাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর দক্ষ কূটনীতি তাঁকে রাজ্যের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি স্থায়ী শক্তিতে পরিণত করেছে।

পাওয়ার পরিবারের রাজনীতিতে নতুন প্রজন্মের উত্থান

বারামতি থেকে উঠে আসা শরদ পাওয়ার তাঁর পরিবারকেও রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তাঁর মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে লোকসভার সাংসদ, যেখানে ভাইপো অজিত পাওয়ার মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সক্রিয়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা, যেমন রোহিত পাওয়ার, রাজ্য বিধানসভায় করজত নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করেন।

ক্রিকেট প্রশাসনেও পাওয়ারের অবদান

রাজনীতির বাইরে, পাওয়ার ক্রীড়া প্রশাসনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিসিসিআই-এর সভাপতি এবং ২০১০-২০১২ সালের মধ্যে আইসিসি-র সভাপতি থাকাকালীন তিনি ভারতীয় ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছেন। তিনি মুম্বাই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসাবেও কাজ করেছেন।

চ্যালেঞ্জ এবং বিতর্ক: সমালোচনার মুখোমুখি

পাওয়ারের দীর্ঘ কর্মজীবনে বিতর্কও জড়িয়ে আছে। ১৯৯৩ সালের মুম্বাই বোমা হামলায় তাঁর প্রতিক্রিয়া বিতর্কের জন্ম দেয়, যখন তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে একটি অতিরিক্ত বিস্ফোরণের তথ্য দেন যাতে ধর্মীয় উত্তেজনা কমানো যায়।

কৃষি মন্ত্রী হিসাবে, তিনি কৃষক আত্মহত্যা এবং খাদ্য নিরাপত্তা মতো বিষয়ে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। ২০০৭ সালের গম আমদানি বিতর্কও তাঁর কার্যকালকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল।

সম্মান এবং স্বীকৃতি

২০১৭ সালে, শরদ পাওয়ারকে ভারত সরকার দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান, পদ্মবিভূষণে ভূষিত করে।

ব্যক্তিগত জীবন এবং অনুপ্রেরণা

বারামতির এক কৃষক পরিবার থেকে উঠে আসা পাওয়ারের সাফল্যের গল্প প্রতিটি যুবককে অনুপ্রাণিত করে। তিনি তাঁর পরিশ্রম এবং দূরদর্শিতা দিয়ে রাজনীতি ও সমাজ সেবায় অবদান রেখেছেন।

ভবিষ্যতের পথ

মহারাষ্ট্র এবং জাতীয় রাজনীতিতে তাঁর ভূমিকা আজও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর অভিজ্ঞতা এবং উপলব্ধি ভবিষ্যতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আনতে সহায়ক হতে পারে। শরদ পাওয়ার শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠানের মতো, যিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর ছাপ রেখেছেন।

```

Leave a comment