ট্রান্সপোর্টার রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলার তদন্তকারী এসআইটি বড় সাফল্য পেয়েছে। শনিবার রাতে মহালক্ষ্মী নগরের এক প্রপার্টি ব্যবসায়ী সিলোম জেমসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার উপর অভিযোগ, তিনি মূল অভিযুক্ত সোনম ও রাজকে সাহায্য করেছিলেন।
শিলং: ট্রান্সপোর্টার রাজা রঘুবংশী হত্যা মামলায় এক বড় মোড় এসেছে। এসআইটি (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম) শনিবার রাতে মহালক্ষ্মী নগরের এক প্রপার্টি ব্যবসায়ী সিলোম জেমসকে গ্রেফতার করেছে। সিলোমের উপর অভিযোগ, তিনি শুধুমাত্র মূল অভিযুক্ত সোনম রঘুবংশী ও তার প্রেমিক রাজকে সাহায্য করেননি, বরং হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
পুলিশের দাবি, সিলোম শুধু ঘটনাস্থলের সাথে জড়িত ব্যাগটি গায়েব করেননি, বরং ব্যাগটিতে থাকা পিস্তল, নগদ অর্থ, কাপড় ও আভূষণও গায়েব করেছেন। এর আগে সিলোম নিজেই মিডিয়ার সামনে এসে দাবি করেছিলেন যে তিনি এই ঘটনার খবর টিভি থেকে পেয়েছেন। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ ও কল রেকর্ড তার কথা মিথ্যা প্রমাণ করেছে।
হীরাবাগ ফ্ল্যাট থেকে গায়েব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাগ, সিলোম চাবি দিয়ে খুলেছে তালা
তদন্তের সময় এসআইটি জানতে পারে যে রাজার হত্যার পর সোনম ও রাজ একটা ব্যাগ হীরাবাগের ফ্ল্যাটে লুকিয়ে রেখেছিল। এই ব্যাগে কাপড়ের মধ্যে একটি দেশীয় পিস্তল, প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা নগদ, কিছু সোনার আভূষণ এবং অন্যান্য জিনিসপত্র ছিল। ললিতপুরে আকাশ নামের এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার পর ৮ জুন সোনম গাজীপুর চলে যায়, কিন্তু ব্যাগটি ফ্ল্যাটেই রয়ে যায়।
১০ জুন সিলোম জেমস সেখানে যায় এবং অন্য একটি চাবি দিয়ে ফ্ল্যাটের তালা খুলে তিনটি ব্যাগ, খাবার, কাপড়সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র নিয়ে যায়। একটি কার শোরুমের বাইরে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরায় তার উপস্থিতি স্পষ্ট দেখা গেছে।
সিলোমের বিরুদ্ধে পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রমাণ, মেঘালয় থেকে গ্রেফতার
সিসিটিভি ফুটেজ ও কল রেকর্ডের তদন্তের পর শিলংয়ের ইস্ট খাসি হিলস পুলিশ সিলোমকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাকে মধ্যপ্রদেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুলিশের দাবি, সিলোম শুধু অপরাধীদের জিনিসপত্র লুকাতে সাহায্য করেনি, বরং সারাক্ষণ তাদের সাথে যোগাযোগও রেখেছে।
হীরাবাগ বিল্ডিংয়ে কাজ করা একজন সিকিউরিটি গার্ড, যিনি মূলত গুণার বাসিন্দা, তিনিও তদন্তের আওতায় রয়েছেন। বলা হচ্ছে, ফ্ল্যাটের চাবি সিলোম ওই গার্ডকে দিয়েছিল। সিলোমের গ্রেফতারের পর থেকে ওই গার্ডও নিখোঁজ। পুলিশ এখন তারও তীব্র খোঁজ করছে। এছাড়াও, ফ্ল্যাটে সিলোমের সাথে প্রবেশকারী এক যুবকও পুলিশের রাডারে রয়েছে। তদন্ত দল এখন গুণা গিয়ে তার তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।
মামলায় এখন পর্যন্ত অবস্থা: জেলে পাঠানো হয়েছে মূল অভিযুক্তদের
এই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সোনম রঘুবংশী ও তার প্রেমিক রাজকে পুলিশ মেঘালয়ের এডিজে কোর্টে হাজির করেছে, যেখান থেকে তাদের ১৪ দিনের ন্যায়িক হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের মতে, দুজনের সাথেই জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়েছে। একই জেলে বিশাল, আনন্দ ও আকাশ নামের অন্যান্য অভিযুক্তও বন্দি রয়েছেন। রাজা রঘুবংশীর হত্যা শুধু পুলিশ ও প্রশাসনকে নয়, শিলংয়ের মতো শান্ত ও জনপ্রিয় পর্যটন স্থলের ইমেজকেও ক্ষতি করেছে। অভিযুক্ত সোনমকে যে জেলা জেলে রাখা হয়েছে, সেখানে আরও ২০ জন নারী বন্দি রয়েছেন। এটি বিবেচনা করে জেল প্রশাসন নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করেছে।