গ্রীষ্মকালে ঘাম ঝরার সাথে সাথে শরীরের জলও দ্রুত শুষ্ক হতে থাকে। এমন অবস্থায় শুধুমাত্র ঠান্ডা পানি বা কোল্ড ড্রিঙ্কস পান করলেই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন এমন কিছু কুলিং ফুড যা শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা রাখবে। আজ আমরা আলোচনা করছি গ্রীষ্মে অসাধারণ স্বস্তিদায়ক দেশীয় রায়তার ব্যাপারে – যা স্বাদের সাথে সাথে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতেও সাহায্য করে। আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন ৫ ধরণের রায়তার কথা যা এই প্রখর রৌদ্রে আপনার জন্য রামবাণ হতে পারে।
পুদিনা রায়তা – ঠান্ডা এবং তাজাটুনের সমন্বয়
পুদিনা বা মিন্ট শুধুমাত্র স্বাদ বাড়ানোর কাজ করে না, এটি প্রাকৃতিকভাবেই ঠান্ডা দেয়। পুদিনা রায়তা তৈরি করার জন্য দইয়ে বারিক কাটা পুদিনা, কালো মরিচ, ভাজা জিরা এবং সামান্য নুন মেশান। চাইলে এর মধ্যে সামান্য বরফের পানিও মেশাতে পারেন। এই রায়তা হজমে সাহায্য করে এবং গ্রীষ্মের কারণে হওয়া মাথাব্যথা এবং ক্লান্তি থেকে মুক্তি দেয়।
লাউয়ের রায়তা – পেটকে দিন ঠান্ডা
লাউ বেশিরভাগ মানুষের কম পছন্দের, কিন্তু গ্রীষ্মে এর রায়তা খুবই উপকারী। উবলে নেওয়া লাউ কুচি করে দইয়ে মেশান, উপর থেকে কালো নুন, ভাজা জিরা এবং কাটা সবুজ মরিচ দিন। লাউয়ের রায়তা শরীরকে ভেতর থেকে ঠান্ডা করে এবং পেটের সমস্যা যেমন গ্যাস ও অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয়।
বুন্দি রায়তা – পূর্ণ প্রোটিন এবং হাইড্রেশন সমৃদ্ধ সুস্বাদু বিকল্প
বুন্দি রায়তা প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই পছন্দের। ঠান্ডা দইয়ে ভিজিয়ে নেওয়া বুন্দি, ভাজা জিরা, কালো নুন এবং সামান্য চাট মশলা দিলে এই রায়তা স্বাদেও অসাধারণ লাগে এবং শরীরকে দ্রুত শক্তিও দেয়। দুপুরের খাবারের সাথে এটি খেলে গ্রীষ্মের প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
শশার রায়তা – হাইড্রেশনের প্রাকৃতিক উপায়
শশা পানিতে পরিপূর্ণ এবং এর রায়তা গ্রীষ্মে শরীরে প্রচুর হাইড্রেশন দেয়। শশা কুচি করে ঠান্ডা দইয়ে মেশান এবং উপর থেকে কালো মরিচ, সেন্ধা নুন এবং সামান্য পুদিনা দিন। এই রায়তা ত্বককেও স্বাস্থ্যকর রাখে এবং হিট স্ট্রোক থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
ডালিম এবং ধনেপাতা রায়তা – স্বাদ ও পুষ্টি একসাথে
যদি আপনি কিছু ভিন্ন চেষ্টা করতে চান তাহলে ডালিম এবং ধনেপাতার রায়তা পারফেক্ট। এর মধ্যে ডালিমের দানা, বারিক কাটা সবুজ ধনেপাতা, কালো মরিচ, সেন্ধা নুন এবং সামান্য লেবু দিন। এটি শুধুমাত্র সুস্বাদু নয়, এন্টিঅক্সিডেন্টেও পরিপূর্ণ, যা শরীরকে গ্রীষ্ম থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়।
গ্রীষ্মে রায়তা কেন জরুরি?
গ্রীষ্মকালে শরীর দ্রুত ডিহাইড্রেট হয়ে যায়, যার ফলে ক্লান্তি, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা এবং হজমের সমস্যা সাধারণ হয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় রায়তা একটি চমৎকার প্রাকৃতিক উপায় যা শুধুমাত্র পেটকে ঠান্ডা রাখে না বরং শরীরকেও ঠান্ডা এবং শক্তি দেয়। আপনি চাইলে এই রায়তাগুলি আপনার দুপুরের বা রাতের খাবারে অন্তর্ভুক্ত করে পুরো পরিবারকে গ্রীষ্মের কষ্ট থেকে মুক্তি দিতে পারেন।