মোবাইল ব্যবহারকারীরা খুব শীঘ্রই স্প্যাম কল থেকে মুক্তি পেতে চলেছে। এখন তাদের আর Truecaller-এর মতো তৃতীয় পক্ষের অ্যাপের উপর নির্ভর করার প্রয়োজন হবে না। Jio, Airtel এবং Vodafone Idea (Vi) একত্রে একটি built-in কলার আইডি সার্ভিস চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে। এই নতুন সার্ভিসের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা মোবাইল স্ক্রিনে কলারের নাম দেখতে পাবেন, যার ফলে তারা অবাঞ্ছিত এবং স্প্যাম কল থেকে বাঁচতে পারবেন। এর জন্য টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলো HP, Dell, Ericsson এবং Nokia-র মতো বিশাল প্রযুক্তি কোম্পানির সাথে অংশীদারিত্ব করেছে।
কিভাবে কাজ করবে built-in কলার আইডি?
এই সার্ভিসটি Truecaller-এর মতোই কাজ করবে, যা কলারের নাম মোবাইল স্ক্রিনে দেখাবে। CNAP (Calling Name Presentation) নামক এই প্রযুক্তির মাধ্যমে যখনই কোনও ব্যবহারকারী কল পাবেন, তখন স্ক্রিনে কল করার ব্যক্তির নাম টেলিযোগাযোগ কোম্পানিতে নিবন্ধিত নাম অনুযায়ী দেখাবে।
তবে, প্রাথমিকভাবে এই সুবিধাটি কেবলমাত্র একই টেলিযোগাযোগ কোম্পানির মধ্যেই উপলব্ধ হবে। উদাহরণস্বরূপ, Jio ব্যবহারকারী যদি অন্য কোনও Jio নম্বর থেকে কল পান, তাহলে তিনি স্ক্রিনে কলারের নাম দেখতে পাবেন। কিন্তু Airtel বা Vi-এর কোনও নম্বর থেকে কল আসলে এই সুবিধাটি কাজ করবে না। বর্তমানে সরকার টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলিকে পরস্পর গ্রাহক ডেটা শেয়ার করার অনুমতি দেয়নি, যার ফলে ক্রস-নেটওয়ার্ক সনাক্তকরণ এখনও সম্ভব নয়।
পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে প্রযুক্তি
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলো CNAP সার্ভিস প্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি অর্ডার করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এর পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। যখন এই প্রযুক্তি সম্পূর্ণরূপে স্থিতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য হবে, তখন তা দেশব্যাপী প্রয়োগ করা হবে। তবে, এই সুবিধাটি কেবলমাত্র স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য হবে এবং ফিচার ফোনে এটি কাজ করবে না।
TRAI CNAP প্রয়োগের সুপারিশ করেছিল
ভারতীয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (TRAI) ফেব্রুয়ারী ২০২৩ সালে সমস্ত স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য CNAP পরিষেবা প্রয়োগের সুপারিশ করেছিল। TRAI সরকারের কাছে অনুরোধ করেছিল যে এটিকে টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলির জন্য বাধ্যতামূলক করা উচিত। এই সার্ভিস আসার পর মোবাইল ব্যবহারকারীরা স্প্যাম কল থেকে মুক্তি পাবে এবং তারা সহজেই চিনতে পারবে যে কল করা প্রয়োজনীয় কিনা।
কি Truecaller-এর প্রয়োজন শেষ হয়ে যাবে?
built-in কলার আইডি সার্ভিস আসার পর Truecaller-এর মতো অ্যাপের প্রয়োজন অনেকটা কমে যেতে পারে। তবে, Truecaller-এর বিশেষত্ব হল এটি কেবলমাত্র টেলিযোগাযোগ কোম্পানিতে নিবন্ধিত নামই নয়, বরং সোশ্যাল মিডিয়া এবং অন্যান্য প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত ডেটা অনুযায়ীও কলারের নাম দেখায়। CNAP বর্তমানে কেবলমাত্র টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলির ডেটাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে, তাই Truecaller-এর ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা কম।
টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলির এই নতুন উদ্যোগে মোবাইল ব্যবহারকারীরা ব্যাপক সুবিধা পাবে এবং স্প্যাম কলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। এখন দেখার বিষয় হলো এই সার্ভিসটি কত দ্রুত এবং কত ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করা হয়।
