নাছার ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস, যিনি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-তে ২৮৬ দিন কাটিয়ে পৃথিবীতে ফিরে এসেছেন, ভারতের প্রতি তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করে একটি সুন্দর উত্তর দিয়েছেন।
সুনীতা উইলিয়ামসের ভারত সম্পর্কে বক্তব্য: নাছার ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস, যিনি পূর্বে দুইবার আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়েছেন, এবার একটি ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার অংশীদার হয়েছেন। নাছার মহাকাশচারী বুচ উইলমোরের সাথে সুনীতা ৯ মাস মহাকাশে কাটিয়েছেন। সম্প্রতি উভয়েই পৃথিবীতে নিরাপদে ফিরে এসেছেন। তবে, সুনীতার জন্য এই তৃতীয় মহাকাশ ভ্রমণ বিশেষ ছিল কারণ তাঁকে ফিরে আসার জন্য তুলনামূলকভাবে বেশি অপেক্ষা করতে হয়েছিল।
যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো মহাকাশ থেকে ভারত কেমন দেখায়, তিনি বলেন, "অসাধারণ, একেবারেই অসাধারণ।" সুনীতা উইলিয়ামসের এই উত্তর সকলের মন জয় করে নিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, যখনই মহাকাশ স্টেশন হিমালয়ের উপরে দিয়ে যায়, তখন সহকর্মী মহাকাশচারী বুচ উইলমোর অবিশ্বাস্য ছবি তুলতেন। সুনীতা বলেছেন, "এমন মনে হত যেন কোনও ঢেউ উঠে ভারতে এসে ভেসে যাচ্ছে। গুজরাট ও মুম্বাইতে তো পৃথিবীর রঙ আরও বেশি উজ্জ্বল দেখাচ্ছিল। এমন মনে হচ্ছিল যেন কেউ বলছে - 'দেখো, এসেছে।'"
ভারতের অনন্য দৃশ্য: হিমালয় থেকে মুম্বাই পর্যন্ত
সুনীতা জানিয়েছেন, দিনের বেলায় হিমালয়ের দৃশ্য সবচেয়ে বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করত। রাতে ভারতের আলোকসজ্জা দেখে মনে হত যেন আলোর একটি বিশাল জাল ছড়িয়ে আছে। ছোট বড় শহরগুলির মধ্যে সংযোগ স্পষ্টভাবে দেখা যেত। তিনি বলেছেন, "ভারতের উপকূলীয় অঞ্চল, বিশেষ করে গুজরাট ও মুম্বাইয়ের রঙ অত্যন্ত সুন্দর ও উজ্জ্বল ছিল।"
ভারতের জন্য গর্ব ও সমর্থন
সুনীতা উইলিয়ামস ভারতকে একটি মহান দেশ এবং একটি চমৎকার গণতন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন। তিনি মহাকাশ অন্বেষণে ভারতের অগ্রগতির প্রশংসা করেছেন এবং ভারতীয় মহাকাশ উড়ান কর্মসূচীতে সাহায্য করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সুনীতা বলেছেন, "আমি আশা করি ভারতের মানুষের সাথে আমার অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারব। এটি একটি অসাধারণ দেশ এবং আমি এখানকার অগ্রগতিতে আমার অবদান রাখতে চাই।"
ভারত সফরে এসে সুনীতা বলেছেন যে তিনি তাঁর "পিতার দেশ" ভ্রমণের আশা করেন। তিনি ভারতীয় মহাকাশ কর্মসূচীতে তাঁর ভূমিকা পালনের ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন। মহাকাশ স্টেশনে তাঁর সাথে থাকা বুচ উইলমোরও ভারতে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
মহাকাশে ভারতের ক্রমবর্ধমান অবস্থান
সুনীতা উইলিয়ামসের অভিজ্ঞতা এবং ভারতের প্রতি তাঁর ভালোবাসা আবারও ভারতের মহাকাশ ভ্রমণের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ভারত তাঁদের উচ্চাকাঙ্ক্ষী গগনযান কর্মসূচীর মাধ্যমে মহাকাশে মানব উড়ান প্রেরণের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সুনীতার এই বক্তব্য এই বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে যে ভারতের অগ্রগতি মহাকাশ থেকেও দেখা এবং প্রশংসা করা হচ্ছে।
সুনীতা উইলিয়ামসের এই বক্তব্য কেবলমাত্র গর্বের বিষয় নয়, বরং ভারতের মহাকাশ ভ্রমণে নতুন অনুপ্রেরণার উৎসও। তাঁর বক্তব্যে ভারতের সৌন্দর্য ও বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির প্রতিফলন স্পষ্ট।
