যোগী আদিত্যনাথ: প্রধানমন্ত্রীত্ব নয়, রাজ্যের সেবাই আমার লক্ষ্য

🎧 Listen in Audio
0:00

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার গুঞ্জনের উপর বড় বক্তব্য দিয়েছেন। সম্প্রতি একটি সাক্ষাত্কারে যখন তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, "আমি তো যোগী। রাজনীতি আমার কাছে পূর্ণকালীন কাজ নয়।"

লখনউ: উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রায়ই দাবি করা হয় যে তিনি ভবিষ্যতে দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। সম্প্রতি এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী বড় বক্তব্য দিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন যে তিনি মূলত একজন যোগী এবং রাজনীতি তার কাছে পূর্ণকালীন কাজ নয়। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে বর্তমানে তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং দল তাঁকে রাজ্যের মানুষের সেবা করার জন্য এখানে নিয়োগ করেছে।

"রাজনীতি আমার কাছে সাধনার মাধ্যম"

সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, "দেখুন, আমি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। দল আমাকে উত্তরপ্রদেশের মানুষের জন্য এখানে রেখেছে। রাজনীতি আমার পূর্ণকালীন কাজ নয়। বর্তমানে আমরা এখানে কাজ করছি কিন্তু আসলে আমি একজন যোগী। যতক্ষণ আমরা এখানে আছি, আমরা কাজ করছি। এরও একটি সময়সীমা থাকবে।" এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে যোগী আদিত্যনাথ রাজনীতিকে একটি দায়িত্ব এবং সাধনারূপে দেখেন, ক্ষমতার লোভেরূপে নয়।

সড়কে নামাজ নিয়ে কঠোর অবস্থান

মুখ্যমন্ত্রী সড়কে নামাজ আদায়ের বিষয়েও তাঁর কঠোর মতামত ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন যে সড়ক চলাচলের জন্য, ধর্মীয় অনুষ্ঠানের জন্য নয়। যোগী প্রয়োগ্রাজ মহাকুম্ভের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, "৬৬ কোটি শ্রদ্ধাঞ্জলি দাতা এসেছিলেন, কিন্তু কোথাও কোন অশান্তি হয়নি। না লুটপাট, না ভাঙচুর। উৎসব বা ধর্মীয় অনুষ্ঠান শৃঙ্খলার প্রতীক হওয়া উচিত, অশান্তির নয়।"

"বুলডোজার মডেল" নিয়ে স্পষ্ট উত্তর

উত্তরপ্রদেশে অবৈধ দখলদারিত্বের উপর বুলডোজার চালানোর কার্যক্রম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী বলেছেন যে এটি তাঁর কোন ব্যক্তিগত সাফল্য নয়। তিনি স্পষ্ট করেছেন, "উত্তরপ্রদেশের প্রয়োজন অনুযায়ী যে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ছিল, সেটি নেওয়া হয়েছে। যদি কোথাও অবৈধ দখলদারিত্ব থাকে তবে তা অপসারণের জন্য বুলডোজার ব্যবহার স্বাভাবিক। আমরা এটি পদ্ধতিগত ও যুক্তিসঙ্গতভাবে ব্যবহার করা শিখিয়েছি।"

মুখ্যমন্ত্রী যোগী রাজ্যে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য শৃঙ্খলাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। তিনি বলেছেন যে ধর্মীয় অনুষ্ঠান হোক বা সামাজিক, সবকিছু শৃঙ্খলে থেকেই সম্পন্ন করা উচিত।

"আমি একজন যোগী"

প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রশ্নের উত্তরে যোগী আদিত্যনাথের উত্তর শুধুমাত্র তাঁর স্পষ্ট চিন্তাভাবনাকেই প্রতিফলিত করে না, বরং এটাও দেখায় যে তিনি ক্ষমতার চেয়ে কর্তব্যকে প্রাধান্য দেন। যোগী'র এই বক্তব্য তাঁকে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখা গুঞ্জনের উপর বিরাম দেয়। মুখ্যমন্ত্রী এও বলেছেন যে যতক্ষণ দল ও জনতার আশীর্বাদ আছে, তিনি রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাবেন। রাজনীতিকে ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষার বহির্ভূত রেখে, তিনি এটিকে জাতীয় সেবার একটি মাধ্যম বলে উল্লেখ করেছেন।

যোগী আদিত্যনাথের এই বক্তব্য আবারও প্রমাণ করে যে তিনি রাজনীতিতে ক্ষমতার চেয়ে কর্তব্যকে প্রাধান্য দেন। তাঁর স্পষ্টবাদিতা এবং কর্মপন্থা তাঁকে জনতার কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।

Leave a comment