থিরুবনন্তপুরমে ৬৯ লক্ষ টাকার QR কোড প্রতারণা: অভিনেতা ও বিজেপি নেতার পরিবারের অভিযোগ

থিরুবনন্তপুরমে ৬৯ লক্ষ টাকার QR কোড প্রতারণা: অভিনেতা ও বিজেপি নেতার পরিবারের অভিযোগ
সর্বশেষ আপডেট: 11-06-2025

থিরুবনন্তপুরমের ‘ওহ বাই ওজি’ নামক ইমিটেশন জুয়েলারির দোকানে একটি বড় QR কোড ফ্রড ধরা পড়েছে। দোকানের মালিক, মালয়ালম অভিনেতা এবং বিজেপি নেতা কে. কৃষ্ণকুমার এবং তাঁর কন্যা ইনফ্লুয়েন্সার দিয়া কৃষ্ণ অভিযোগ করেছেন যে, তিনজন কর্মচারী—ভিনীথা, দিব্যা এবং রাধাকুমার—জুলাই ২০২৪ থেকে এপ্রিল ২০২৫ পর্যন্ত গ্রাহকদের প্রায় ৬৯ লক্ষ টাকার পেমেন্ট তাদের ব্যক্তিগত Google Pay অ্যাকাউন্টে রিডাইরেক্ট করেছেন।

কীভাবে হয়েছিল প্রতারণা?

পরিবার জানিয়েছে, দিয়া গর্ভবতী হওয়ার কারণে দোকান থেকে দূরে থাকার সময় এবং কর্মচারীরা দোকানের নিয়ন্ত্রণ সামলাচ্ছিলেন, সেই সময় থেকেই এই প্রতারণা শুরু হয়। তারা দোকানের আসল QR কোড সরিয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত QR কোড লাগিয়েছিল, যার মাধ্যমে প্রতিটি লেনদেন তাদের অ্যাকাউন্টে চলে যেত। সিসিটিভি রেকর্ডিংয়ে তাদের এমন কাজ করতে দেখা গেছে, এবং এমনকি দাবি করা হয়েছে যে, একজন কর্মচারী টাকা ভাগাভাগি করার কথা স্বীকার করেছেন।

উভয় পক্ষেরই FIR দায়ের

দোকান মালিকদের (কৃষ্ণকুমার/দিয়া) অভিযোগের ভিত্তিতে মিউজিয়াম থানার পুলিশ প্রতারণা, অপরাধমূলক বিশ্বাসঘাতকতা এবং ভয়ভীতি দেখানোর ধারায় মামলা দায়ের করেছে।
অন্যদিকে ভিনীথা এবং অন্যান্য অভিযুক্তরাও প্রতি-অভিযোগ দায়ের করে দাবি করেছেন যে, তাদের জোর করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাদের সাথে পরিচয় এবং জাতির ভিত্তিতে অপমানজনক আচরণ করা হয়েছিল এবং তাদের জোর করে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল।

পুলিশ তদন্ত এবং প্রমাণ কী দেখাচ্ছে?

মিউজিয়াম থানার পুলিশ একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন করেছে এবং ব্যাঙ্ক লেনদেনের ইতিহাস, ফোন ডেটা এবং সিসিটিভি ফুটেজের বিস্তারিত তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে, অভিযুক্তরা ৯ লক্ষ টাকা ফেরত দিয়েছে, কিন্তু বাকি টাকা এখনও অ্যাকাউন্টে পাওয়া যায়নি।

সামাজিক বার্তা এবং জাতিগত বিষয়

এই ঘটনা কেবলমাত্র আর্থিক প্রতারণায় সীমাবদ্ধ থাকে নি। অভিযুক্তরা দাবি করেছেন যে তাদের “জাতিভিত্তিক বৈষম্য”র শিকার হতে হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এ ধরনের রিপোর্ট ভাইরাল হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবার এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে যে এটি কেবলমাত্র বিচার থেকে বাঁচার কৌশল হতে পারে।

এই বিতর্ক কেবলমাত্র ৬৯ লক্ষ টাকার প্রতারণার ঘটনা নয়, এটি অনলাইন এবং অফলাইন পেমেন্টে বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জ করে। QR কোড পরিবর্তন করে টাকা রিডাইরেক্ট করা একটি গুরুতর সাইবার-সক্ষম প্রতারণা। অন্যদিকে, জাতি এবং জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি জাতীয় বিষয়গুলি এতে সামাজিক এবং আইনি প্রশ্ন তুলে ধরে।

এখন তদন্তের পথ ব্যাঙ্ক ডেটা এবং ভিডিও প্রমাণের যাচাইয়ের উপর নির্ভর করে। যদি প্রমাণ সত্য বলে প্রমাণিত হয়, তবে এটি কেমন একটি অভূতপূর্ব ঘটনা হবে—একটি প্রযুক্তিভিত্তিক প্রতারণা নাকি জাতিভিত্তিক লেবেলিংয়ের অপব্যবহার—আগামী দিনগুলিতে তা জানা যাবে।

 

Leave a comment