কমল হাসনের ‘ঠগ লাইফ’: প্রথম রিভিউ ও মুক্তির আগে উত্তেজনা

কমল হাসনের ‘ঠগ লাইফ’: প্রথম রিভিউ ও মুক্তির আগে উত্তেজনা
সর্বশেষ আপডেট: 05-06-2025

দক্ষিণ ভারতের মহান অভিনেতা কমল হাসনের অত্যন্ত প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘ঠগ লাইফ’ এই বৃহস্পতিবার বিশ্বজুড়ে সিনেমা হলে মুক্তি পাচ্ছে। ছবিটি নিয়ে দর্শকদের মধ্যে প্রচণ্ড উৎসাহ রয়েছে, এবং এর ট্রেলার ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে।

মনোরঞ্জন: দক্ষিণ ভারতের মেগাস্টার কমল হাসন এবং খ্যাতনামা পরিচালক মণিরত্নমের অত্যন্ত প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘ঠগ লাইফ’ ৫ই জুন ২০২৫ সিনেমা হলে মুক্তি পাবে। এই ছবি নিয়ে ফ্যান এবং চলচ্চিত্র জগতে প্রচণ্ড উৎসাহ রয়েছে। কমল হাসন, সিলম্বরাসন রাজেন্দ্র, জয়ম রবি এবং তৃষা যেসব অভিনেতা অভিনয় করেছেন, সেই ছবিটি পরিচালনা করেছেন মণিরত্নম এবং সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন অস্কার বিজয়ী এ. আর. রহমান।

মুক্তির একদিন আগে ছবির প্রথম রিভিউ প্রকাশিত হয়েছে, যা ‘ঠগ লাইফ’ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা স্পষ্ট করেছে। কিন্তু কি এই ছবি কমল হাসনের চমৎকার প্রত্যাবর্তন হবে নাকি শুধুমাত্র প্রচারের শিকার হয়ে থাকবে? আসুন, বিস্তারিত জানি।

‘ঠগ লাইফ’ এর প্রথম রিভিউ কেমন?

চলচ্চিত্র সমালোচক উমের সান্ধু সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এক্স (পূর্বে টুইটার) এ ছবির প্রথম রিভিউ শেয়ার করেছেন। তিনি ‘ঠগ লাইফ’ কে ৩.৫/৫ স্টার রেটিং দিয়েছেন এবং এটিকে ক্লাসিক অ্যাকশন থ্রিলার বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, কমল হাসন এই ছবিতে আবার তাঁর পুরানো অ্যাকশন অবতারে ফিরে এসেছেন। ছবির চিত্রনাট্য দৃঢ়, গল্প আকর্ষণীয় এবং অ্যাকশন দৃশ্য অত্যন্ত চমৎকারভাবে চিত্রায়িত। মণিরত্নম এবং এ. আর. রহমানের জুটি আবারও দর্শকদের মন জয় করতে প্রস্তুত।

কমল হাসনের দমদার অভিনয়

রিভিউ অনুসারে, কমল হাসন তাঁর অভিনয় দিয়ে ছবিটিকে বিশেষ করে তুলেছেন। বয়সের এই পর্যায়েও তাঁর শারীরিক রূপান্তর এবং অ্যাকশন দৃশ্যে শক্তি প্রশংসনীয়। তাঁর সাথে সাথে সিলম্বরাসন (সিম্বু)ও দমদার সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন, যা দর্শকদের মনে ধরে। কমলের চরিত্র একটি রহস্যময় এবং বিদ্রোহী বিপ্লবীর, যিনি ক্ষমতা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে। মণিরত্নম এই চরিত্রটিকে শুধু গভীরতা দেননি, বরং এর গল্পটিকে একটি চলচ্চিত্র অভিজ্ঞতায় রূপান্তরিত করেছেন।

গল্প এবং পরিচালনা

মণিরত্নমের পরিচালনায় নির্মিত ‘ঠগ লাইফ’র গল্প এমন একদলের উপর কেন্দ্রীভূত যারা দুর্নীতিপূর্ণ শাসন এবং সামাজিক অসমতার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। এই ছবি শুধু অ্যাকশন নয়, বরং আদর্শ এবং সংগ্রামের কথাও বলে। সমালোচকের মতে, ছবির প্রথমার্ধ চরিত্রের পটভূমি এবং ঘটনার সৃষ্টিতে ব্যয়িত হয়, অন্যদিকে দ্বিতীয়ার্ধে থ্রিল, টুইস্ট এবং ইমোশনাল ড্রামার অসাধারণ মিশ্রণ দেখা যায়। মণিরত্নমের বিশেষত্ব – ভিজ্যুয়াল সিনেমাটোগ্রাফি, সংলাপের গুরুত্ব এবং দৃশ্য-সৃষ্টি – এই ছবিতেও পুরোপুরি প্রতিফলিত হয়েছে।

এ. আর. রহমানের ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর ছবির একটি শক্তিশালী দিক। প্রতিটি দৃশ্যের সাথে তাঁর সঙ্গীত অনুভূতি জাগ্রত করে এবং থ্রিলকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়। গানের ছবিতে সীমিত ব্যবহার করা হয়েছে, কিন্তু যেসব ট্র্যাক আছে, সেগুলি গল্পের সাথে মিলে যায়।

ক্যামেরা ওয়ার্ক, প্রোডাকশন ডিজাইন এবং ভিএফএক্স এই ছবিতে একটি আন্তর্জাতিক স্তরের স্পর্শ যোগ করেছে। সিনেমাটোগ্রাফার রবি বর্মণ এমন কিছু দৃশ্য তৈরি করেছেন যা দীর্ঘদিন দর্শকদের মনে থাকবে।

বক্স অফিসে ‘ঠগ লাইফ’র প্রভাব?

কমল হাসনের জন্য এই ছবিটি বিশেষত গুরুত্বপূর্ণ কারণ তাঁর আগের ছবি ‘ইন্ডিয়ান ২’ এবং ‘কাল্কি ২৮৯৮ এডি’ থেকে তিনি সেই সাফল্য পাননি যার আশা করা হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে ‘ঠগ লাইফ’র সাফল্য তাঁর ক্যারিয়ারের জন্য একটি পুনরুজ্জীবন মুহূর্ত হতে পারে। যদি প্রাথমিক রিভিউ এবং ফ্যানদের প্রতিক্রিয়া দেখা যায় তাহলে ‘ঠগ লাইফ’ উদ্বোধনী দিনে ভালো ব্যবসা করতে পারে। বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের বাজারে এর পারফরম্যান্স অত্যন্ত শক্তিশালী থাকার আশা করা হচ্ছে।

‘ঠগ লাইফ’ দেখা উচিত কি?

যদি আপনি কমল হাসনের ফ্যান হন অথবা মণিরত্নমের পরিচালনায় নির্মিত গুরুত্বপূর্ণ এবং সামাজিকভাবে প্রাসঙ্গিক ছবির প্রেমী হন, তাহলে ‘ঠগ লাইফ’ আপনার জন্য একটি পারফেক্ট উইকেন্ড মুভি হতে পারে। অ্যাকশন, ইমোশন এবং আদর্শের অসাধারণ মিশ্রণ এটিকে টাকার পুরো মূল্যের অভিজ্ঞতা করে তোলে।

Leave a comment