বিহারে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সাম্প্রতিক আচরণ রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে। সম্প্রতি পটনায় এক অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীতের মাঝখানে মঞ্চ ত্যাগ করার তার কর্মকাণ্ড বিরোধীদের আক্রমণের নতুন সুযোগ দিয়েছে।
পটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির সমস্যা বেড়েই চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সাম্প্রতিক ‘অনিয়মিত’ আচরণ রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। পটনায় জাতীয় সংগীতের সময় মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার তার কর্মকাণ্ড নিয়ে বিরোধীরা তীব্র সমালোচনা করেছে। বিজেপি এখনও নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে নির্বাচন লড়াই করার পরিকল্পনায় অটুট রয়েছে, কিন্তু তার অপ্রত্যাশিত আচরণ বিরোধীদের আক্রমণের সুযোগ দিয়েছে। এর ফলে মিত্রতার মধ্যেও উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে এবং নির্বাচনী গণিত প্রভাবিত হতে পারে।
জাতীয় সংগীতের সময় মঞ্চ ত্যাগ বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু
বৃহস্পতিবার পটনায় সেপাক টাকরাও বিশ্বকাপ ২০২৫-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যখন জাতীয় সংগীতের ঘোষণা করা হয়, তখন নীতীশ কুমার হঠাৎ মঞ্চ থেকে নেমে খেলোয়াড়দের সাথে হাত মিলিয়ে নেন। জাতীয় সংগীত শুরু হলে তিনি হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকেন এবং হাত নাড়তে থাকেন। এই ঘটনায় বিরোধীরা অবিলম্বে আক্রমণ শুরু করে এবং এটিকে জাতীয় সংগীতের অপমান বলে অভিহিত করে।
নীতীশ কুমারের এই অপ্রত্যাশিত আচরণ তার স্বাস্থ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বিরোধীদের দাবি, তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এখন মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকার জন্য উপযুক্ত নয়। রাজদ নেত্রী এবং রাজ্যসভা সদস্যা মীসা ভারতী বলেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং গৃহমন্ত্রী অমিত শাহকে ভাবতে হবে বিহারের নেতৃত্ব কার হাতে রয়েছে। নীতীশ কুমারের আচরণ ক্রমাগত অস্থির বলে মনে হচ্ছে।"
বিজেপির উদ্বেগ বৃদ্ধি
বিজেপি, যারা জেডিইউ-এর সাথে মিত্রতায় নির্বাচন লড়াই করার পরিকল্পনা করছে, এই সমস্ত বিতর্কের পরে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে। দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "আমরা নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে নির্বাচন লড়াই করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, কিন্তু তার সাম্প্রতিক আচরণ বিরোধীদের অকারণে বিষয় দিচ্ছে। আমরা আশা করি তিনি শীঘ্রই তার অবস্থান স্পষ্ট করবেন।"
গত কয়েক মাসে নীতীশ কুমারের জনসাধারণের আচরণে অনেকবার পরিবর্তন দেখা গেছে। কখনও তিনি সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী মনে হন, আবার কখনও জনসাধারণের অনুষ্ঠানে অদ্ভুত আচরণ করেন। সম্প্রতি তার ‘প্রগতি যাত্রা’-র সময় তিনি সম্পূর্ণ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছিলেন, কিন্তু অন্যান্য অনুষ্ঠানে তার আচরণ অস্থির ছিল।
নির্বাচনে কী প্রভাব পড়বে?
নীতীশ কুমারের রাজনৈতিক বুদ্ধিমত্তা এবং সুশাসনের ট্র্যাক রেকর্ড তাকে এখনও পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখতে সফল হয়েছে। কিন্তু তার বর্তমান মনোভাবের ফলে মিত্র দলগুলির উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে। বিজেপি আশাবাদী যে বিহারের জনতা আরজেডির ‘জঙ্গলরাজ’-এর তুলনায় এনডিএ-কেই ভালো বিকল্প মনে করবে, কিন্তু নীতীশ কুমারের অস্থির আচরণ বিজেপির উদ্বেগ বৃদ্ধি করেছে।
