তিন ছোটো শুকরের গল্প: এক অমর কাহিনী

🎧 Listen in Audio
0:00

তিনটি ছোটো শুকরের গল্প, জনপ্রিয়, অমর গল্প subkuz.com এ!

জনপ্রিয় ও অনুপ্রেরণামূলক গল্প, তিনটি ছোটো শুকর

একটি বনে তিনটি ছোটো শুকর তার মায়ের সাথে বাস করত। কিছুদিন পর যখন তারা বড়ো হলো, তাদের মা তাদের ডেকে বললেন—“আমার প্রিয় ছেলেরা, তোমরা তিনজনে এখন নিজেদের দেখাশুনা করতে পারো এবং নিজের ইচ্ছেমতো জীবনযাপন করতে পারো। তাই এখন আমার ইচ্ছা তোমরা তিনজনে এই বন ছেড়ে চলে যাও, দুনিয়া দেখো এবং নিজের মতো করে জীবনযাপন করো।” মায়ের কথা শুনে তিনটি শুকর তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে শহরের দিকে রওনা হলো। কিছু দূর যাওয়ার পর তারা আরেকটি বনে পৌঁছে গেল। তিনটি শুকর খুব ক্লান্ত ছিল, তারা ভাবলো কেন এই বনেই কোনো গাছের নিচে বসে বিশ্রাম না নেওয়া যায়। তারপর তারা সেখানেই বিশ্রাম নিতে লাগলো। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর, তিন ভাই পরস্পরের সাথে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের পরিকল্পনা করতে লাগলো।

প্রথম শুকর পরামর্শ দিয়ে বললো—“আমার মনে হয় এখন আমাদের তিনজনকে নিজ নিজ পথে চলতে হবে এবং আমাদের ভাগ্য পরীক্ষা করতে হবে।” দ্বিতীয় শুকরের এই কথা ভালো লাগলো, কিন্তু তৃতীয় শুকরের এই চিন্তা ভালো লাগলো না। তৃতীয় শুকর বললো—“না, আমার মনে হয় আমাদের একসাথে থাকা উচিত এবং একই জায়গায় গিয়ে আমাদের নতুন জীবন শুরু করা উচিত। আমরা একসাথে থাকলেও আমরা আমাদের নিজ নিজ ভাগ্য পরীক্ষা করতে পারি।” তার কথা শুনে প্রথম ও দ্বিতীয় শুকর বললো—“এটা কিভাবে সম্ভব?” তৃতীয় শুকর উত্তর দিয়ে বললো—“যদি আমরা তিনজনে একই জায়গায় থাকি, তাহলে কোনো বিপদে সহজেই পরস্পরের সাহায্য করতে পারবো।” এই কথা দুই শুকরের ভালো লাগলো। তারা দুজনেই তার কথা মেনে নিল এবং একই জায়গায় কাছাকাছি বাড়ি তৈরি করতে লাগলো।

প্রথম শুকরের মনে হলো যে সেকে ঘাসের বাড়ি তৈরি করা উচিত, যা দ্রুত তৈরি হবে এবং তাকে কম পরিশ্রম করতে হবে। সে দ্রুত কম সময়েই তার ঘাসের বাড়ি তৈরি করে বিশ্রাম নিতে লাগলো। একইভাবে, দ্বিতীয় শুকর গাছের শুকনো ডালপালা দিয়ে বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিল। সে ভাবলো আমার ডালপালা দিয়ে তৈরি বাড়ি ঘাসের বাড়ি থেকে বেশি শক্তিশালী হবে। তারপর সে গাছের শুকনো ডালপালা সংগ্রহ করে কিছুটা পরিশ্রম করে তার বাড়ি তৈরি করলো। তারপর সেও সেখানে বিশ্রাম ও খেলতে লাগলো। অন্যদিকে তৃতীয় শুকর ভালো করে ভেবে ইট দিয়ে বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত নিল। সে ভাবলো, বাড়ি তৈরিতে অনেক পরিশ্রম লাগবে, কিন্তু এই বাড়ি শক্তিশালী ও নিরাপদও হবে।

ইটের বাড়ি তৈরি করতে তৃতীয় শুকরের সাত দিন লেগে গেল। তৃতীয় শুকরকে এত পরিশ্রম করতে দেখে বাকি দুই শুকর তার অনেক উপহাস করলো। তাদের মনে হলো সে একটা বাড়ি তৈরি করার জন্য এত পরিশ্রম তার ভুলের কারণে করছে। তারা দুজনে তাকে তাদের সাথে খেলতেও উৎসাহিত করলো, কিন্তু তৃতীয় শুকর দৃঢ়প্রত্যয়ী হয়ে তার বাড়ি তৈরি করলো। যখন ইটের তার বাড়ি তৈরি হয়ে গেল, তখন দেখতে খুব সুন্দর ও শক্তিশালী লাগছিল। তারপর তিনটি শুকর আনন্দের সাথে তাদের নিজ নিজ বাড়িতে থাকতে লাগলো। এই নতুন জায়গায় তাদের কোনো সমস্যা ছিল না, তাই তিনজনেই তাদের নিজ নিজ বাড়িতে খুব খুশি ছিল। একদিন তাদের এই স্থানে একটি বন্য বাদুরের দৃষ্টি পড়লো। তিনটি মোটা শুকর দেখে তার মুখে পানি চলে আসলো।

```

Leave a comment