চিকিৎসকদের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী, রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোড়ন

🎧 Listen in Audio
0:00

রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে নতুন করে আলোড়ন। চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার, আলিপুরের ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে দুপুর সাড়ে ১২টায় হবে এই গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা। সরকারি-বেসরকারি দুই ক্ষেত্রের চিকিৎসকরাই এই বৈঠকে থাকবেন। তবে এই বৈঠককে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

রাজ্য-চিকিৎসক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বিশেষ উদ্যোগ?

সম্প্রতি রাজ্যের চিকিৎসা মহলে উত্তেজনার পারদ চড়িয়েছে এক মর্মান্তিক ঘটনা— আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ। এই ঘটনার পর চিকিৎসক সমাজের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের ফাঁক আরও গভীর হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই, পরিস্থিতি সামলাতে এবং চিকিৎসকদের আস্থা ফেরাতেই এই বৈঠকের আয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।

এই সম্মেলনে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলোর অধ্যক্ষ, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক, রেসিডেন্ট ডক্টর, মেডিক্যাল পড়ুয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

সরকারের উদ্যোগ, বিরোধীদের অভিযোগ

এই উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করেছে রাজ্য স্বাস্থ্যদফতরের গ্রিভান্স রিড্রেসাল সেল। তবে সম্মেলনের আগে চিকিৎসকদের তরফ থেকে একাধিক দাবি পেশ করা হয়েছে। সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে ‘অভয়ার ন্যায়বিচার’ সহ মোট ১১ দফা দাবির কথা জানিয়েছে।

এদিকে, বিরোধী শিবির এই বৈঠক নিয়ে সরব হয়েছে। বিজেপির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘সারা রাজ্যের হাসপাতাল থেকে ৬৭৫ জন চিকিৎসককে এই সম্মেলনে ডাকা হয়েছে। এতে রোগীদের পরিষেবা ব্যাহত হবে না?’’

নজিরবিহীন স্বাস্থ্য সম্মেলন, নজর রাজনৈতিক মহলের

এই বৈঠককে নজিরবিহীন বলেই দাবি করছে রাজ্য সরকার। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার চিকিৎসক ও মেডিক্যাল শিক্ষার্থী এই সম্মেলনে অংশ নেবেন। শাসক দলের দাবি, স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রচারে এটি এক বড় পদক্ষেপ।

রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই চিকিৎসা পরিষেবায় উন্নতির খতিয়ান তুলে ধরতে শুরু করেছে। শাসক শিবিরের দাবি, রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে গত কয়েক বছরে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠক সেই উন্নয়নকেই আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

তবে এই সম্মেলনের রাজনৈতিক গুরুত্বও কম নয়। চিকিৎসক সমাজের একাংশ সরকারের ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে, অন্যদিকে বিরোধীরা এই উদ্যোগকে লোক দেখানো বলে ব্যাখ্যা করছে। আজকের বৈঠক কী বার্তা দেয়, তা দেখার অপেক্ষায় রাজনৈতিক ও চিকিৎসক মহল।

Leave a comment