সারা ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস: আবহাওয়া সতর্কতা জারি

সারা ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস: আবহাওয়া সতর্কতা জারি
সর্বশেষ আপডেট: 1 দিন আগে

সারা দেশে মৌসুমি বৃষ্টিপাত পুরোপুরি সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং আগামী সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত থাকবে। ২০২৫ সালের ২২ থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত অনেক রাজ্যে আবহাওয়ার পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জিং হবে।

আবহাওয়া: সারা দেশে মৌসুমি বৃষ্টিপাত এখন পুরোপুরি সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং ২০২৫ সালের ২২ থেকে ২৮ জুনের মধ্যে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র বৃষ্টিপাতের ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর (IMD) অনেক রাজ্যে ‘রেড’ এবং ‘অরেঞ্জ’ সতর্কতা জারি করেছে। দেশের পশ্চিমা তীরে থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং মধ্য ভারত থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত, প্রতিটি অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ব্যাপক প্রভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

উত্তর-পশ্চিম ভারত: বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বৃদ্ধি

উত্তর-পশ্চিম ভারতে মৌসুমি বৃষ্টিপাত তার দখল মজবুত করেছে। রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশে আগামী কয়েক দিন ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে। ২৩ জুন পূর্ব রাজস্থানের বিভিন্ন স্থানে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত (২০ সেমি+ প্রতি ২৪ ঘন্টা) -এর সতর্কতা রয়েছে। দিল্লি-এনসিআর, হরিয়ানা এবং পশ্চিম ইউপিতে ২৪ থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত বজ্রপাত, বৃষ্টি এবং প্রবল বাতাসের সাথে বৃষ্টি হতে পারে।

হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ডে ২২-২৬ জুন পর্যন্ত ক্রমাগত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের ধারা চলতে পারে। পাহাড়ি অঞ্চলে ভূমিধ্বস এবং সড়ক অবরোধের আশঙ্কা রয়েছে।

মধ্য ভারত: বন্যার মতো পরিস্থিতির আশঙ্কা

মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং বিদর্ভ অঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টিপাত আরও তীব্র হচ্ছে। ২৩ এবং ২৪ জুন পশ্চিম মধ্যপ্রদেশে অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। বিদর্ভ এবং ছত্তিশগড়ে ২৫ এবং ২৬ জুন মুষলধারে বৃষ্টি হতে পারে। নিম্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা এবং গ্রামীণ অঞ্চলে ক্ষেতের জলাবদ্ধতার সম্ভাবনা রয়েছে।

পূর্ব এবং উত্তর-পূর্ব ভারত: ক্রমাগত ঝড়ো বৃষ্টি

বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, বাংলা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য যেমন আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল প্রদেশ এবং নাগাল্যান্ডে বৃষ্টিপাতের ধারা ক্রমাগত অব্যাহত রয়েছে। ২২-২৫ জুন পর্যন্ত বিহার এবং ঝাড়খণ্ডে ভারী বৃষ্টিপাতের সাথে বজ্রপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আসাম এবং মেঘালয়ে ২৩ জুন, অরুণাচল প্রদেশে ২৩-২৪ জুন অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাত সম্ভব। নদীগুলোর জলস্তর বৃদ্ধির ফলে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

পশ্চিম ভারত: গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রে বৃষ্টিপাতের প্রভাব

গুজরাট, কঙ্কণ, গোয়া এবং মহারাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলেও মৌসুমি বৃষ্টিপাত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ২৩ জুন গুজরাটের অনেক জেলায় অত্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কঙ্কণ এবং গোয়ায় ২২ থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত ক্রমাগত মুষলধারে বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মধ্য মহারাষ্ট্র এবং মারাঠোয়াড়ায়ও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কারণে স্থানীয় প্রশাসন সতর্ক রয়েছে।

দক্ষিণ ভারত: সতর্ক থাকার প্রয়োজন

দক্ষিণ ভারতে, বিশেষ করে কেরাল, কর্ণাটক, অন্ধ্র প্রদেশ এবং তেলেঙ্গানায় মৌসুমি বৃষ্টিপাতের সক্রিয়তা অব্যাহত রয়েছে। ২২-২৮ জুন পর্যন্ত কেরাল এবং উপকূলীয় কর্ণাটকে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ২৫-২৮ জুন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ কর্ণাটক এবং রায়ালসীমায় প্রবল বৃষ্টিপাতের সাথে ৪০-৬০ কিমি প্রতি ঘন্টা বেগে বাতাস বইতে পারে। তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্র প্রদেশে বজ্রপাত এবং হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

মৌসুমি বৃষ্টিপাতের অগ্রগতি: কতদূর এসেছে?

দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বৃষ্টিপাত এখন দেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে পৌঁছে গেছে। এটি জয়পুর, আগ্রা, দেহরাডুন, শিমলা, জম্মু, কাশ্মীর এবং লাদাখ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা এবং দিল্লির বাকি অংশে পৌঁছানোর প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব উত্তর প্রদেশে একটি নিম্নচাপ অঞ্চল তৈরি হয়েছে, যা ধীরে ধীরে দুর্বল হবে কিন্তু এই সময় ভারী বৃষ্টিপাত করতে পারে।

ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর নাগরিকদের নদীর কাছে না যাওয়ার, বজ্রপাতের সময় গাছের নিচে না লুকানোর এবং জলাবদ্ধ এলাকা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

Leave a comment