ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের নির্দেশ: রাহুল গান্ধীকে মানহানির মামলায় হাজির হতে হবে

🎧 Listen in Audio
0:00

ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট রাহুল গান্ধীকে ২০২৫ সালের ৬ আগস্ট চাইবাসার এমপি-এমএলএ কোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ২০১৮ সালের একটি মানহানির মামলায় বিজেপি নেতার অভিযোগের ভিত্তিতে জারি করা হয়েছে গ্রেফতারযোগ্য ওয়ারেন্ট।

রাহুল গান্ধী: লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীকে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট একটি মানহানির মামলায় ২০২৫ সালের ৬ আগস্ট চাইবাসার এমপি-এমএলএ কোর্টে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলাটি ২০১৮ সালে কংগ্রেস অধিবেশনে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে তাঁর করা মন্তব্য নিয়ে। বিজেপি নেতা প্রতাপ কুমার কাটিয়ার রাহুল গান্ধীর বক্তব্যকে মানহানিকর বলে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। এই মামলায় চাইবাসার এমপি-এমএলএ কোর্ট গ্রেফতারযোগ্য ওয়ারেন্ট জারি করেছিল, যা রাহুল গান্ধী হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন।

কী এই মানহানির মামলা?

এই বিতর্ক ২০২৫ সালে শুরু হয়, যখন রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের একটি অধিবেশনে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কিছু মন্তব্য করেন। ২৮শে মার্চ ২০২৫ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এই অধিবেশনে রাহুল গান্ধী বিজেপিকে লক্ষ্য করে কিছু বক্তব্য দেন, যা বিজেপি নেতা প্রতাপ কুমার কাটিয়ার মানহানিকর বলে মনে করেন। কাটিয়ারের দাবি, এই বক্তব্যের ফলে তাঁর এবং তাঁর দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পরে, ৯ই জুলাই ২০২৫ সালে কাটিয়ার চাইবাসার প্রধান ন্যায়িক দণ্ডাধীশ (CJM) কোর্টে রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেন। প্রথমে এই মামলাটি CJM কোর্টে চলে, কিন্তু পরে এটি রাঁচির এমপি-এমএলএ বিশেষ আদালতে স্থানান্তরিত হয়। চাইবাসায় এমপি-এমএলএ কোর্ট শুরু হওয়ার পর, এই মামলাটি আবার চাইবাসায় স্থানান্তরিত হয়।

এমপি-এমএলএ কোর্ট কী করেছে?

চাইবাসার এমপি-এমএলএ কোর্ট এই মামলাকে গুরুত্বের সাথে নিয়েছে। ২৬শে জুন ২০২৫ সালে কোর্ট রাহুল গান্ধীকে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়। রাহুল গান্ধীর আইনজীবী কোর্টে হাজিরার ছাড়ের আবেদন করেছিলেন, যাতে তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে কোর্টে উপস্থিত হতে না হয়।

কিন্তু কোর্ট তাঁর এই আবেদন খারিজ করে এবং গ্রেফতারযোগ্য ওয়ারেন্ট জারি করে। এর অর্থ হল রাহুল গান্ধীকে এখন কোর্টে নিজেই হাজির হতে হবে, এবং যদি তিনি তা না করেন, তাহলে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করতে পারে।

ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের রায়

সোমবার, ৯ই জুন ২০২৫ সালে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের বিচারপতি অনিল কুমার চৌধুরীর বেঞ্চ রাহুল গান্ধীর আবেদনের শুনানি করে। রাহুল গান্ধী তাঁর ফৌজদারি রিট আবেদনে এমপি-এমএলএ কোর্টের গ্রেফতারযোগ্য ওয়ারেন্ট বাতিল করার দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু হাইকোর্ট তাঁর আবেদনে কোনও সুযোগ দিতে অস্বীকার করে। কোর্ট নির্দেশ দেয় যে রাহুল গান্ধীকে ২০২৫ সালের ৬ আগস্ট চাইবাসার এমপি-এমএলএ কোর্টে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হতে হবে।

রাহুল গান্ধীর পক্ষ

রাহুল গান্ধী তাঁর আবেদনে বলেছেন যে তিনি ইতোমধ্যেই এমপি-এমএলএ কোর্টে হাজিরার ছাড়ের আবেদন করেছেন, যা এখনও বিচারাধীন। তাঁর যুক্তি, তাঁর ছাড়ের আবেদনের উপর সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতারযোগ্য ওয়ারেন্ট জারি করা ভুল। তাঁর আইনজীবীর দাবি, রাহুল গান্ধী একজন বড় রাজনীতিবিদ এবং লোকসভার বিরোধী দলনেতা, তাই তাঁর ব্যস্ততার কথা বিবেচনা করে তাঁকে হাজিরার ছাড় দেওয়া উচিত।

যদিও কোর্ট তাঁর এই যুক্তি গ্রহণ করেনি। বিচারপতি অনিল কুমার চৌধুরী স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে রাহুল গান্ধীকে কোর্টে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হতে হবে, যাতে মামলার শুনানি এগিয়ে যেতে পারে।

প্রতাপ কাটিয়ারের দাবি

প্রতাপ কাটিয়ার, যিনি এই মামলার অভিযোগকারী, বিজেপির একজন স্থানীয় নেতা। তাঁর আইনজীবী কেশব প্রসাদ জানিয়েছেন যে রাহুল গান্ধী ২৮শে মার্চ ২০২৫ সালে কংগ্রেস অধিবেশনে বিজেপির বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছিলেন। এই বক্তব্যগুলিকে কাটিয়ার তাঁর এবং তাঁর দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো বলে মনে করেন। তাঁর মতে, রাহুল গান্ধীর বক্তব্য কেবলমাত্র ভুলই ছিল না, বরং এটি বিজেপি নেতাদের সম্মানহানি করেছে।

Leave a comment