মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন: শিন্ডে কিংবা ফড়নবিস?

মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন: শিন্ডে কিংবা ফড়নবিস?
সর্বশেষ আপডেট: 27-01-2025

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে মহাযুতি গঠবন্ধনের চমৎকার জয়ের পর এখন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে আলোচনা চলছে। দুই দিনের বেশি সময় কেটে গেলেও এখনও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের তারিখ বা কোনও সরকারি তথ্য প্রকাশিত হয়নি।

মুম্বাই: মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি-নেতৃত্বাধীন মহাযুতি চমৎকার জয় অর্জন করেছে, কিন্তু সরকার গঠন নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে। নির্বাচনের ফলাফলের দুই দিন পরেও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের তারিখ নিয়ে কোনও স্পষ্টতা আসেনি এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে আলোচনা চলছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, মহাযুতিতে পর্যায়ক্রমে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

বিজেপি সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে এবং দলের নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিসকে মুখ্যমন্ত্রী করার পক্ষে। অন্যদিকে, শিবসেনার নেতারা বলছেন একনাথ শিন্ডেকে আবার মুখ্যমন্ত্রী করা উচিত। এছাড়াও, এনসিপির নেতা অজিত পাওয়ারও দেবেন্দ্র ফড়নবিসকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি করতে পারেন।

মহাযুতি গঠবন্ধনে বিজেপির কাছে সবচেয়ে বেশি আসন

মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে মহাযুতি মোট ২৩২ টি আসন পেয়েছে, যার মধ্যে বিজেপি ১৩২ টি আসন পেয়ে সবচেয়ে বড় জয় অর্জন করেছে। শিন্ডে গোষ্ঠীর শিবসেনা ৫৭ টি আসন জিতেছে, আর এনসিপি ৪১ টি আসন পেয়েছে। এখন মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে এই তিন দলের নেতাদের মধ্যে আলোচনা চলছে। শিবসেনার বিধায়করা একনাথ শিন্ডেকে তাদের নেতা নির্বাচিত করেছেন, আর এনসিপি অজিত পাওয়ারকে তাদের নেতা নির্বাচিত করেছে।

রিপোর্ট অনুযায়ী, আজ একনাথ শিন্ডে, দেবেন্দ্র ফড়নবিস এবং অজিত পাওয়ার কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে দেখা করতে দিল্লি যেতে পারেন। এই বৈঠকে মহারাষ্ট্রে পর্যায়ক্রমে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়েও আলোচনা হতে পারে, যেখানে বিজেপি, শিবসেনা এবং এনসিপির মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করা হতে পারে। এখনও মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সকল দলের নেতাদের মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজন।

একনাথ শিন্ডে কি আবার মুখ্যমন্ত্রী হবেন?

শিবসেনা (শিন্ডে গোষ্ঠী) -র নেতারা বলছেন একনাথ শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত নন। শিবসেনার নেতা দীপক কেশরকার মিডিয়াকে জানিয়েছেন যে, শিন্ডে সরকারের নীতি এবং নেতৃত্বের কারণেই রাজ্যে মহাযুতির সরকার গঠিত হয়েছে এবং নির্বাচনে চমৎকার সাফল্য অর্জন করা হয়েছে। শিন্ডের নেতৃত্বে দল এবং গঠবন্ধনের কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ রয়েছে এবং শিবসেনার বিধায়কদের মনে হয় তাকে পদে বহাল রাখা উচিত।

দীপক কেশরকার এটাও বলেছেন একনাথ শিন্ডে, দেবেন্দ্র ফড়নবিস এবং অজিত পাওয়ার এই বিষয়ে পরস্পর সম্মত হয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন, যা সকল দলের স্বার্থে হবে। এভাবে শিন্ডে গোষ্ঠী তাদের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদে তাদের দাবী স্পষ্টভাবে জানাচ্ছে।

দেবেন্দ্র ফড়নবিসও মুখ্যমন্ত্রীর পদে দাবিদার

বিজেপির নেতা এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস মুখ্যমন্ত্রীর পদে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। মহারাষ্ট্রে এবার বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে চমৎকার সাফল্য অর্জন করেছে এবং দলের নেতারা মনে করেন ফড়নবিসকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ পাওয়া উচিত। ফড়নবিস একনাথ শিন্ডের সাথে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন এবং তার কর্মশৈলী এবং নেতৃত্বের কারণে বিজেপির নেতারা তাকে মুখ্যমন্ত্রীর পদে সবচেয়ে উপযুক্ত মনে করছেন।

অনেক রিপোর্টে এটাও দাবি করা হয়েছে যে বিজেপি নেতৃত্ব পর্যায়ক্রমে মুখ্যমন্ত্রী সূত্রের বিরোধী এবং দলের অগ্রাধিকার একটি স্থিতিশীল এবং শক্তিশালী সরকার গঠন করা, যার জন্য ফড়নবিসের নাম সবচেয়ে উপযুক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। বিজেপি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে স্পষ্ট যে মুখ্যমন্ত্রীর পদে স্থায়িত্ব এবং নেতৃত্বের প্রয়োজন এবং তাই কোন পর্যায়ক্রমিক মডেল প্রয়োগ করার সমর্থন করা হচ্ছে না।

শপথ গ্রহণ নিয়ে কি আপডেট?

মহারাষ্ট্রে নতুন সরকারের শপথ গ্রহণ নিয়ে এখনও কোনও সরকারি তথ্য প্রকাশিত হয়নি। কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল যে সোমবার রাজ্যে নতুন সরকারের শপথ গ্রহণ হতে পারে, কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। মহাযুতির নেতাদের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে আলোচনা চলছে এবং এটাও স্থির করা হচ্ছে যে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান কবে এবং কীভাবে হবে। এখনও এই বিষয়ে কোনও সরকারি ঘোষণা বা বিবৃতির অপেক্ষা করা হচ্ছে।

Leave a comment