সোমবার নাগপুরে সংঘটিত হিংসায় বহু লোক আহত হয়েছে। নিতিশ রাণে এ ঘটনার জন্য সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক আবু আজমীকে দায়ী করেছেন, অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবিস একে পূর্ব পরিকল্পিত বলে অভিহিত করেছেন।
নাগপুর হিংসা: মহারাষ্ট্রের মন্ত্রী নিতিশ রাণে মঙ্গলবার নাগপুরে সংঘটিত হিংসার জন্য সমাজবাদী পার্টি (সপা) -র বিধায়ক আবু আজমীকে দায়ী করেছেন। রাণে বলেছেন, এ হিংসা ছিল একটি পূর্ব পরিকল্পিত আক্রমণ, যা রাজ্য সরকারকে কলঙ্কিত করার জন্য করা হয়েছিল। নিতিশ রাণে সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় বলেছেন, আবু আজমীই এই বিষয়টির সূচনা করেছিলেন এবং হিংসার জন্য তিনিই দায়ী। তিনি আরও বলেছেন, হিংসায় জড়িতদের কাউকেই কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না, বিশেষ করে যারা পুলিশ কর্মীদের উপর হামলা করেছে।
আবু আজমীর ওরঙ্গজেব সম্পর্কে মন্তব্য
সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক আবু আজমী সম্প্রতি ওরঙ্গজেব সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ওরঙ্গজেব নিষ্ঠুর শাসক ছিলেন না এবং তিনি বহু মন্দির নির্মাণ করেছিলেন। আজমীর আরও দাবি, ওরঙ্গজেব এবং ছত্রপতি শিবাজীর মধ্যে সংঘর্ষ রাজ্য প্রশাসনিক কারণে হয়েছিল, ধর্মীয় কারণে নয়। এই বক্তব্যের জন্য আজমীর সমালোচনা হয়েছে। শিবসেনার সাংসদ নারেশ মহাস্কে বলেছেন, সিসিটিভি ফুটেজ থেকে স্পষ্ট হয়েছে হিংসার পিছনে কারা ছিল। তিনি জানিয়েছেন, পথর ছোড়ার সময় লোকদের উপাধি দেখা গিয়েছে, যা থেকে হিংসায় জড়িতদের পরিচয় পাওয়া গেছে।
শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের রাজ্য সরকারের প্রতি প্রশ্ন
নাগপুর হিংসা নিয়ে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জিজ্ঞাসা করেছেন, হিংসার পিছনে কারা আছে এবং কেন এ ব্যাপারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। উদ্ধব বলেছেন, রাজ্যে ডাবল ইঞ্জিনের সরকার আছে, আর যদি এই সরকার ব্যর্থ হচ্ছে, তাহলে তাদের ইস্তফা দিয়ে দিতে হবে। ঠাকরে আরও বলেছেন, সরকারের উচিত ওরঙ্গজেবের কবর সরানোর পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে জবাব নেওয়া, নাগপুরে হিংসার পিছনে কারা ছিল।
মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবিস হিংসাকে পূর্ব পরিকল্পিত বলে অভিহিত করেছেন
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস নাগপুর হিংসাকে পূর্ব পরিকল্পিত আক্রমণ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, গুজবের মাধ্যমে ধর্মীয় শ্লোক পোড়ানোর খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যা হিংসার কারণ হয়েছিল। ফড়নবিস বলেছেন, কাউকেই আইনশৃঙ্খলা নিজ হাতে নেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না। তিনি হিংসায় আহত পুলিশ কর্মীদের অবস্থা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যেখানে তিনজন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসিপি) আহত হয়েছেন, এবং একজন ডিসিপির উপর কুঠার দিয়ে হামলা করা হয়েছে।
কার্ফিউ এবং কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
নাগপুর শহরে উত্তেজনা বিবেচনা করে বহু এলাকায় কার্ফিউ জারি করা হয়েছে। এই কার্ফিউ বিশেষ করে কোতোয়ালি, গণেশপেঠ, তহশিল, লকড়গঞ্জ, পচপাওলি, শান্তিনগর, সাক্করদরা, নন্দনবন, ইমামবাড়া, যশোধরানগর এবং কপিলনগর এলাকায় জারি করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার রবীন্দ্র কুমার সিংহাল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কার্ফিউ বহাল রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।