দেশে করোনার নতুন সংক্রমণ বৃদ্ধি, ২৪ ঘণ্টায় ৬৮৫টি নতুন কেস, ৪ জনের মৃত্যু। সক্রিয় কেস ৩৩৯৫। কেরলে সর্বাধিক ১৩৩৬টি সক্রিয় কেস। রাজ্যগুলিকে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ।
করোনা আপডেট: করোনাভাইরাস আবারও দেশে নিজের পদক্ষেপ বৃদ্ধি করছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুসারে, ৩১শে মে, ২০২৫ সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে ৩৩৯৫টি সক্রিয় কেস রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৮৫টি নতুন কেস ধরা পড়েছে, এবং ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বস্তির বিষয় হল, একই সময়ে ১৪৩৫ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন, কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে উদ্বেগ বাড়া স্বাভাবিক।
কোথায় কোথায় করোনার নতুন কেস পাওয়া গেছে?
দেশজুড়ে বিভিন্ন রাজ্য থেকে নতুন কেস ধরা পড়ছে। সবচেয়ে বেশি কেরলে ১৮৯ জন নতুন রোগী পাওয়া গেছে। কর্ণাটকে ৮৬, পশ্চিমবঙ্গে ৮৯, দিল্লিতে ৮১ এবং উত্তরপ্রদেশে ৭৫টি নতুন কেস রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও তামিলনাড়ুতে ৩৭, মহারাষ্ট্রে ৪৩, গুজরাটে ৪২ এবং রাজস্থানে ৯টি নতুন কেস ধরা পড়েছে।
যদিও কিছু রাজ্যে কেসের সংখ্যা কম, যেমন পুদুচেরিতে ৬, মধ্যপ্রদেশে ৬, হরিয়ানায় ৬, ঝাড়খণ্ডে ৬, ওড়িশাতে ২, জম্মু ও কাশ্মীরে ২, ছত্তিশগড়ে ৩, অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব এবং গোয়াতে ১টি করে কেস ধরা পড়েছে।
কোথায় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় কেস?
এখনও দেশে কিছু রাজ্য আছে যেখানে সক্রিয় কেসের সংখ্যা বেশি। কেরলে সবচেয়ে বেশি ১৩৩৬টি সক্রিয় কেস রয়েছে। মহারাষ্ট্রে ৪৬৭, দিল্লিতে ৩৭৫, কর্ণাটকে ২৩৪, পশ্চিমবঙ্গে ২০৫, তামিলনাড়ুতে ১৮৫ এবং উত্তরপ্রদেশে ১১৭টি সক্রিয় কেস রয়েছে।
সরকারের কঠোরতা এবং নির্দেশিকা
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সমস্ত রাজ্যকে সতর্ক অবস্থায় থাকার এবং পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। সরকার সমস্ত নাগরিকদের অনুরোধ করেছে হালকা লক্ষণ দেখা দিলেও পরীক্ষা করানো এবং কোভিড-উপযুক্ত আচরণ (CAB) অনুসরণ করার জন্য।
কর্ণাটক সরকার সার্কুলার জারি করেছে
কর্ণাটক সরকার কোভিডের বর্ধিত সংক্রমণ এবং স্কুল পুনরায় খোলার বিষয়টি বিবেচনা করে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২৬শে মে, ২০২৫ তারিখে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামৈয়ার অধ্যক্ষতায় অনুষ্ঠিত পর্যালোচনা বৈঠকের পর একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, যদি কোন শিশুর জ্বর, কাশি, সর্দি বা কোভিডের মতো লক্ষণ থাকে, তাহলে তাকে স্কুলে পাঠানো উচিত নয়।
সার্কুলারে অভিভাবকদের অনুরোধ করা হয়েছে শিশুরা সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার পরেই তাদের স্কুলে পাঠানোর জন্য। যদি কোন শিশু এই লক্ষণ নিয়ে স্কুলে আসে, তাহলে স্কুল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে অভিভাবকদের জানাবে এবং শিশুটিকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
শিক্ষক এবং কর্মীদের জন্যও সতর্কতা
শুধুমাত্র শিশু নয়, যদি কোন শিক্ষক বা অশিক্ষক কর্মীর মধ্যে কোভিডের মতো লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে তাদেরকেও অবিলম্বে কোভিড-উপযুক্ত আচরণ অনুসরণ করার জন্য বলা হয়েছে।
সরকার স্কুলগুলির জন্য কিছু বিশেষ সতর্কতা সুপারিশ করেছে:
- হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা
- কাশি বা ছিঁকে দেওয়ার সময় শিষ্টাচার মেনে চলা
- জনসমাগম এড়ানো এবং প্রয়োজন হলে মাস্ক পরা
মানুষকে এই সতর্কতাগুলি অবলম্বন করা উচিত
করোনা থেকে বাঁচার জন্য এখনও সতর্কতা হল সবচেয়ে বড় সুরক্ষা। সমস্ত নাগরিকদের উচিত:
- জনসমাগম এড়ানো
- মাস্ক ব্যবহার করা (যেখানে প্রয়োজন)
- সময়ে সময়ে হাত ধোয়া
- লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং পরীক্ষা করানো
করোনার গতিবেগ নিয়ে সরকারের নজর
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ক্রমাগত সমস্ত রাজ্যের পরিস্থিতি নজরে রাখছে। রাজ্যগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে যেন কোনও অবস্থাতেই অবহেলা না করা হয়। পাশাপাশি পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো এবং টিকা প্রয়োগের গতি বজায় রাখার জন্য বলা হয়েছে।
নাগরিকদের প্রতি আবেদন
সরকারের পক্ষ থেকে নাগরিকদের প্রতি আবেদন করা হচ্ছে যে, যদি আপনার হালকা কাশি, জ্বর, গলা ব্যথা, শ্বাস নিতে অসুবিধা বা ক্লান্তি হয়, তাহলে তা উপেক্ষা করবেন না। অবিলম্বে করোনা পরীক্ষা করান এবং অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।