বিহার নির্বাচনের আগে মহাজোটে উত্তেজনা বেড়েছে। বৈঠকে তেজস্বীর নেতৃত্বের উপর একমত হলেও, কংগ্রেস নেতা তারিক আনোয়ার বলেন—যার বেশি বিধায়ক থাকবে, সেই মুখ্যমন্ত্রী হবেন।
Bihar Politics: বিহারে বিধানসভা নির্বাচন যদিও কিছুদিন দূরে, কিন্তু মহাজোটে মুখ্যমন্ত্রী পদকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র হচ্ছে। কংগ্রেস এবং রাজদ-এর মধ্যে টানাপড়েন বেড়েই চলেছে, যার ফলে জোটে ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বৈঠকে তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বের উপর সম্মতি জানানো হয়েছিল, কিন্তু কংগ্রেসের ব্যক্তিগণের বক্তব্য আবারও সিএম ফেস নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেছে।
মহাজোটের বৈঠকে তেজস্বীর নেতৃত্বের উপর সম্মতি
প্রাক্তন মন্ত্রী আলোক মেহতার বাসভবনে সম্প্রতি মহাজোটের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যাতে রাজদ, কংগ্রেস এবং বাম দলগুলির বিধায়ক এবং বিধান পরিষদের সদস্যরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই বৈঠকে স্পষ্ট করা হয়েছিল যে তেজস্বী যাদবই মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রার্থী হবেন। নেতারা বলেছেন যে জোটে তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই এবং সকল দল মিলে আগামী নির্বাচনে লড়াই করবে।
কংগ্রেস নেতা তারিক আনোয়ারের বক্তব্যে আবার বিতর্ক বেড়েছে
মহাজোটের বৈঠকে ঐক্য প্রদর্শনের পরও কংগ্রেসের ব্যক্তি এবং সাংসদ তারিক আনোয়ার বক্তব্য দিয়ে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত করেছেন। তিনি বলেছেন যে রাজদ মহাজোটের সবচেয়ে বড় দল, কিন্তু ঐতিহ্য অনুযায়ী যার দলের সবচেয়ে বেশি বিধায়ক থাকবে, সেই মুখ্যমন্ত্রী পদ পাবে। তাঁর এই বক্তব্য তেজস্বী যাদবের দাবি নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং জোটে মতবিরোধ প্রকাশ করে।
আসন বণ্টন নিয়ে কংগ্রেসের দাবি
তারিক আনোয়ার কাটিহারে গণমাধ্যমের সাথে কথোপকথনের সময় এটাও বলেছেন যে মহাজোটের মধ্যে এখনও পর্যন্ত আসন বণ্টন নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। যখন এ ব্যাপারে আলোচনা হবে, তখন গণমাধ্যমকে জানানো হবে। এটা স্পষ্ট করে যে জোটে আসন বণ্টন নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা এখনও অসম্পূর্ণ এবং এ ব্যাপারে মতবিরোধ হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
কংগ্রেস নেতা অজিত শর্মাও মুখ্যমন্ত্রী পদের বিষয়টি তুলে ধরেছেন
তারিক আনোয়ার একমাত্র কংগ্রেস নেতা নন যিনি মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। এর আগে কংগ্রেসের ব্যক্তি অজিত শর্মাও এই বিষয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন যে নির্বাচনের ফলাফলের পর জোটের বিধায়করা ঠিক করবেন কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন।
তবে, তিনি এটাও যোগ করেছেন যে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধী নেবেন। তার এই বক্তব্য মহাজোটে গভীর বিভেদ প্রকাশ করে।
মহাজোটের ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে
এই সকল বক্তব্যের ফলে মহাজোটের ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বৃহস্পতিবার তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে মহাজোটের নেতাদের একটি যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যাতে সকল দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
কিন্তু তারপরেই কংগ্রেসের ব্যক্তিদের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে মহাজোটের ভিতরে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে না। আগামী দিনগুলিতে এই রাজনৈতিক মতবিরোধ আরও বাড়তে পারে, যার ফলে বিহার নির্বাচনে মহাজোটের পথ কঠিন হয়ে উঠছে।
কী মহাজোট নির্বাচনের আগে ভেঙে পড়বে?
বিহার নির্বাচনের আগে মহাজোটের মধ্যে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিচ্ছে, তা থেকে জোটের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তেজস্বী যাদবের নেতৃত্ব নিয়ে একদিকে রাজদ ও অন্যান্য দল সমর্থন জানাচ্ছে, অন্যদিকে কংগ্রেস নিজস্ব পৃথক অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।