রাজস্থানের শিকর জেলায় আবারও সাইবার প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে এক যুবককে এসবিআই-এর ভুয়ো কর্মচারী বলে ফোন করে প্রতারকরা ক্রেডিট কার্ডের লিমিট বাড়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে তার অ্যাকাউন্ট থেকে হাজার হাজার টাকা উড়িয়ে নিয়েছে।
অপরাধ সংবাদ: রাজস্থানের শিকর জেলায় আবারও সাইবার প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। এক যুবককে এসবিআই-এর ভুয়ো কর্মচারী বলে ফোন করে প্রতারকরা ক্রেডিট কার্ডের লিমিট বাড়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে হাজার হাজার টাকা উড়িয়ে নিয়েছে। ভুক্তভোগী যখন কিছু বুঝতে পারলেন, ততক্ষণে তার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠে গেছে। এই ঘটনার অভিযোগ কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। লোকজনকে এ ধরনের প্রতারণামূলক ঘটনার থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
কীভাবে প্রতারণা করা হয়েছিল?
শিকরের নওয়ালগড় রোড এলাকার বাসিন্দা রাকেশ শর্মা (পরিবর্তিত নাম) সোমবার দুপুরে একটি ফোন পেলেন। ফোনকারী নিজেকে ভারতীয় স্টেট ব্যাংক (এসবিআই)-এর গ্রাহক সেবা কর্মকর্তা বলে পরিচয় দিয়ে বললেন যে তার ক্রেডিট কার্ড আপগ্রেড করা হচ্ছে, যার ফলে লিমিট ১ লক্ষ টাকা থেকে ২ লক্ষ টাকা করা হবে। ফোনকারী রাকেশকে বিশ্বাস করাতে তার কার্ডের শেষ চারটি সংখ্যা এবং আগের লেনদেনের তথ্যও দিলেন, যা দেখে রাকেশ মনে করলেন ফোনটি সত্যিই ব্যাংক থেকেই। এরপর ফোনকারী বললেন লিমিট বাড়ানোর জন্য "পুনঃনিশ্চিতকরণ" প্রক্রিয়ার অধীনে একটি লিঙ্ক পাঠানো হবে।
লিঙ্কে ক্লিক করতেই টাকা উড়ে গেল
রাকেশের কাছে ওয়াটসঅ্যাপে একটি লিঙ্ক পাঠানো হল এবং বলা হল যে তাতে তার ক্রেডিট কার্ড নম্বর, সিভিভি এবং ওটিপি দিতে হবে। যেই মুহূর্তে সে তথ্যগুলো দিল, ঠিক ততক্ষণেই তার অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৮,৫০০ টাকা কেটে গেল। এরপর ফোনকারী ফোন কেটে দিল এবং নম্বর বন্ধ হয়ে গেল। ভুক্তভোগী দ্রুত ব্যাংক এবং সাইবার হেল্পলাইন ১৯৩০-তে ফোন করে ব্লক প্রক্রিয়া শুরু করলেন, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
পুলিশে অভিযোগ দায়ের
রাকেশ কোতোয়ালি থানায় ঘটনার অভিযোগ দায়ের করেছেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, প্রাথমিক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এবং ঘটনাটি সাইবার ক্রাইম ইউনিটকে সোপর্দ করা হয়েছে। কল ডিটেলস এবং ব্যাংক লেনদেনের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। পুলিশ সন্দেহ করছে যে প্রতারকরা কোনও ফিশিং ওয়েবসাইটের সাহায্য নিয়েছে, যার মাধ্যমে ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত তথ্য এবং ব্যাংক ওটিপি সংগ্রহ করে ভুয়া লেনদেন করেছে।
এসবিআই সহ সকল প্রধান ব্যাংকই আগে থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছে যে তারা কখনও ফোনে গ্রাহকের কাছ থেকে ওটিপি, কার্ড নম্বর, পাসওয়ার্ড বা ইউপিআই পিন চায় না। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে সাইবার প্রতারকরা নতুন নতুন পদ্ধতিতে সাধারণ নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করছে এবং সতর্কতা হল সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা।