নয়া দিল্লি, মে ২০২৫: ভারতে মোটর ইন্সুরেন্স নিয়ে এক গুরুতর পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। নিউ ইন্ডিয়া এশুরেন্সের চেয়ারপারসন এবং ম্যানেজিং ডাইরেক্টর গিরিজা সুব্রমণ্যন জানিয়েছেন যে দেশে মাত্র ৫২% গাড়িরই বীমা রয়েছে, অর্থাৎ প্রায় ৪৮% গাড়ি বীমা ছাড়াই চলছে। এটি শুধুমাত্র আইনের লঙ্ঘন নয়, বরং সড়ক দুর্ঘটনার শিকারদের ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়াকেও জটিল করে তোলে।
তথ্য থাকা সত্ত্বেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?
গিরিজা সুব্রমণ্যনের মতে, সরকারের কাছে যারা বীমা করেনি তাদের গাড়ির সম্পূর্ণ তথ্য রয়েছে। তারপরেও, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। কারণ হল - বীমা প্রয়োগের ব্যবস্থা দুর্বল। এর ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পর্যাপ্ত সাহায্য পাওয়া সম্ভব হয় না।
বীমা প্রিমিয়াম বৃদ্ধির প্রয়োজন
থার্ড পার্টি ইন্সুরেন্স প্রিমিয়াম অনেক বছর ধরে বাড়েনি, তবে আদালত কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ সময়ের সাথে সাথে বেড়ে চলেছে। এতে বীমা কোম্পানিগুলির উপর অর্থনৈতিক বোঝা বেড়ে যাচ্ছে। সুব্রমণ্যন আশা করছেন যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রণালয় (MoRTH) এই বছর প্রিমিয়াম হারে সংশোধন করবে।
বিধি-নিষেধ অমান্য করা বড় চ্যালেঞ্জ
২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট এবং বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থা IRDAI স্পষ্টভাবে বলেছিল যে নতুন গাড়ির জন্য তিন বছর এবং দুই চাকার যানবাহনের জন্য পাঁচ বছরের থার্ড পার্টি বীমা বাধ্যতামূলক হবে। তারপরেও, নিবন্ধিত যানবাহন এবং বীমাযুক্ত যানবাহনের সংখ্যার মধ্যে বড় ব্যবধান রয়েছে। এতে স্পষ্ট, স্থানীয় পর্যায়ে এই বিধি-নিষেধ সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে না।
বীমা কোম্পানিগুলির কৌশল পরিবর্তন
নিউ ইন্ডিয়া এশুরেন্স বর্তমানে মূলত বাণিজ্যিক যানবাহনগুলিতে মনোনিবেশ করছে, যেখানে ক্লেইমের হার বেশি। এখন কোম্পানি ব্যক্তিগত গাড়ি এবং দুই চাকার যানবাহনের ক্ষেত্রে বিস্তৃত করার পরিকল্পনা করছে। যদিও এই সেগমেন্টে কমিশন খরচ বেশি, তবুও কোম্পানি ২০২৬ সালের মধ্যে এই দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ নেবে।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রত্যাশা
কোম্পানি এখন ফোনপে এবং অন্যান্য অনলাইন অ্যাগ্রিগেটরের মতো ডিজিটাল মাধ্যমের সাথে যুক্ত হয়ে বীমা সেবাগুলিকে আরও সহজলভ্য করে তুলছে। এছাড়াও, নিউ ইন্ডিয়া এশুরেন্স বীমা সুগম নামে একটি নতুন বীমা মার্কেটপ্লেসে বিনিয়োগ করেছে, যেখানে গ্রাহকরা বিভিন্ন বীমা বিকল্পের তুলনা করতে পারেন।
প্রয়োজন কঠোর প্রয়োগের
যানবাহনের বীমার ক্ষেত্রে ভারতে যা ত্রুটি রয়েছে, তা সংশোধনের দাবি রাখে। বীমা ডেটা ইতিমধ্যেই আছে, এখন প্রয়োজন একটি কঠোর নজরদারি এবং প্রয়োগ ব্যবস্থার, যা আইন মেনে চলা নিশ্চিত করবে এবং সড়ক দুর্ঘটনার পর লোকজন সময়মতো সাহায্য পেতে পারবে।
