ঝাঁসির ঝোকন বাগ: ১৮৫৭-এর প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের সাক্ষী

🎧 Listen in Audio
0:00

ঝাঁসির ঝোকন বাগকে বর্তমানে অনেকেই একটি সাধারণ স্থান হিসেবে চিনেন, যেখানে গাড়ির মেরামত হয়। কিন্তু ইতিহাসে এর গুরুত্ব অপরিসীম। এই স্থানটি ১৮৫৭ সালের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী, যেখানে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সাহসী সংগ্রাম হয়েছিল। এই ঘটনার পর ব্রিটিশ সরকার এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছিল, যা আজও মানুষ দেখতে আসে।

১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ এবং ঝোকন বাগ

ঝোকন বাগ, যা ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের সাথে জড়িত, সে সময়ের একটি ঐতিহাসিক স্থান ছিল যখন ঝাঁসি দুর্গে ব্রিটিশদের দখল ছিল। মঙ্গল পাণ্ডের বিদ্রোহ মেরঠ থেকে শুরু হয়ে সৈন্যদের সাথে নিয়ে ঝাঁসি দুর্গ পর্যন্ত পৌঁছে এবং ব্রিটিশদের গোলাবারুদের ভাণ্ডার দখল করে নেয়। এরপর রানী লক্ষ্মীবাইয়ের নেতৃত্বে দুর্গ দখল করা হয়।

এরপর, রানী ব্রিটিশদের বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর জন্য তার সৈন্যদের আদেশ দেন। কিন্তু পরের দিন, যখন ব্রিটিশদের পরিবারের লাশ ঝোকন বাগের কাছে একটি কূপে পাওয়া যায়, তখন এই ঘটনা সমগ্র এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে।

রানী লক্ষ্মীবাই দোষীদের শাস্তি দিয়েছিলেন

ইতিহাসবিদ রামনারায়ণ দেহুলিয়ার মতে, ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ছিল। রানী লক্ষ্মীবাইয়ের জন্য এটি ছিল একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা। এই ঘটনার পর, রানী এই নৃশংস কাজে জড়িত সকল দোষীকে শাস্তি দিয়েছিলেন। রানীর আদেশ ছিল যে এ ধরণের কাজ করার সৈন্যদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।

ঝোকন বাগের ঐতিহাসিক গুরুত্ব

স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে এক সময় ৩০০-এর বেশি প্রকারের গোলাপের গাছ ছিল, যা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে আসত। ঝোকন বাগ কেবলমাত্র একটি ঐতিহাসিক স্থান নয়, এটি ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের একটি জ্বলন্ত প্রতীকও, যেখানে রানী লক্ষ্মীবাইয়ের নেতৃত্বে ভারতীয় সৈন্যরা সাহসী সংগ্রাম করেছিল।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়

  • ঝোকন বাগের ঐতিহাসিক গুরুত্ব: ঝাঁসির ঝোকন বাগ ১৮৫৭ সালের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ স্থান, যেখানে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সাহসী সংগ্রাম হয়েছিল। বর্তমানে এটি গাড়ির মেরামতের স্থান হিসেবে পরিচিত, কিন্তু এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অপরিসীম। ব্রিটিশ সরকার এই স্থানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছিল, যা আজও দর্শকদের আকর্ষণ করে।
  • ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহ এবং ঝোকন বাগ: এই স্থানটি ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের সাথে জড়িত, যখন রানী লক্ষ্মীবাই ঝাঁসি দুর্গে ব্রিটিশদের দখল ভেঙে দিয়েছিলেন। মঙ্গল পাণ্ডের বিদ্রোহের পর, সৈন্যরা ঝাঁসিতে পৌঁছে এবং দুর্গ দখল করে নেয়, সাথে সাথে ব্রিটিশদের গোলাবারুদের ভাণ্ডারও দখল করে নেয়। রানী লক্ষ্মীবাই এরপর ব্রিটিশদের পরিবারগুলিকে নিরাপদ স্থানে পাঠানোর আদেশ দেন।
  • লাশ এবং বিতর্কিত ঘটনা: রানী লক্ষ্মীবাইয়ের আদেশের পর ব্রিটিশদের পরিবারগুলিকে দুর্গ থেকে বের করে নিরাপদ স্থানে পাঠানো হয়, কিন্তু পরের দিন তাদের লাশ ঝোকন বাগের কাছে একটি কূপে পাওয়া যায়। এই ঘটনা এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং রানী লক্ষ্মীবাইকে গভীর আঘাতের সম্মুখীন হতে হয়।
  • রানী লক্ষ্মীবাই দোষীদের শাস্তি দিয়েছিলেন: রানী এই ঘটনার জন্য দায়ী সৈন্যদের কঠোর শাস্তি দেওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরণের নৃশংস কাজ করার কারো সাহস না হয়। এই ঘটনা রানীর নেতৃত্ব এবং ন্যায়পরায়ণ দৃষ্টিভঙ্গীকে প্রতিফলিত করে।
  • ঝোকন বাগের স্মৃতিস্তম্ভ এবং গোলাপের গাছ: স্মৃতিস্তম্ভের চারপাশে একসময় ৩০০-এর বেশি গোলাপের গাছ ছিল, যা এটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছিল। এই স্থানটি আজও ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক, যেখানে রানী লক্ষ্মীবাইয়ের নেতৃত্বে ভারতীয় সৈন্যরা সাহসী সংগ্রাম করেছিল।

Leave a comment