বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০২৫: মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে জোর

🎧 Listen in Audio
0:00

প্রতি বছর ৭ই এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস (World Health Day) পালিত হয়, এবং এ বছর ‘সুস্থ সূচনা, আশাবাদী ভবিষ্যৎ’ থিমকে কেন্দ্র করে মাতৃ ও নবজাত শিশুর স্বাস্থ্যের উপর জোর দেওয়া হবে। এই দিবসটি কেবলমাত্র বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জগুলির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে না, বরং উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য নীতিনির্ধারক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং নাগরিকদের প্রেরণাও যোগায়।

থিম ২০২৫: ‘সুস্থ সূচনা, আশাবাদী ভবিষ্যৎ’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) কর্তৃক ঘোষিত এ বছরের থিম মা এবং নবজাত শিশুর স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এই উপলক্ষ্যে এক বছরব্যাপী অভিযান শুরু হচ্ছে, যার লক্ষ্য প্রতিটি নারী ও শিশুকে জীবিত থাকতে এবং সুস্থভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করা।

সচেতনতা এবং উদ্বেগ বাড়ানো পরিসংখ্যান

প্রতি বছর প্রায় ৩ লক্ষ মহিলা গর্ভাবস্থা বা প্রসবের কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
২০ লক্ষেরও বেশি নবজাত শিশু তাদের জীবনের প্রথম মাসেই মারা যায়।
২০ লক্ষেরও বেশি শিশু মৃত জন্মগ্রহণ করে।
অর্থাৎ প্রতি ৭ সেকেন্ডে একজনের রোধ করা যায় এমন মৃত্যু হয়।
যদি বর্তমান প্রবণতা না বদলে, তাহলে ২০৩০ সালের মধ্যে ৮০% দেশ মাতৃমৃত্যু হার কমানোর লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না, এবং প্রতি তিনটি দেশের মধ্যে একটি নবজাতক মৃত্যু হার কমানোর লক্ষ্যে পিছিয়ে থাকবে।

অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য

মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের অসমতা উন্মোচন করা এবং সমাধানের দিকে কাজ করা।
মহিলাদের দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য ও কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা।
গর্ভবতী মহিলা, নবজাতক ও অভিভাবকদের উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা।
মানসিক স্বাস্থ্য, অসংক্রামক রোগ এবং পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কিত সেবাগুলিও মাতৃত্ব সেবার অংশ করা।

গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন অভিভাবক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা

প্রতিটি গর্ভবতী মহিলার প্রসবপূর্ব, প্রসবকালীন এবং প্রসবোত্তর সময়ে মানসিক ও শারীরিক সহায়তার প্রয়োজন। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে এ ধরনের জটিল সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য সবল করা প্রয়োজন। এছাড়াও, এমন নীতি ও আইনের প্রয়োজন যা মহিলাদের অধিকার ও স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের ইতিহাস ও গুরুত্ব

প্রথমবার ৭ এপ্রিল ১৯৫০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়।
এর ভিত্তি ১৯৪৮ সালে WHO-এর স্থাপনার সাথে স্থাপিত হয়।
উদ্দেশ্য: বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, রোগ প্রতিরোধ, মানসিক স্বাস্থ্য, পুষ্টি, স্যানিটেশন এবং সমান স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।

আমাদের জন্য এর অর্থ কী?

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে স্বাস্থ্যই সর্বোত্তম সম্পদ।
এই দিবসটি কেবল ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যম নয়, বরং সমাজ, রাষ্ট্র এবং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য সমতা অর্জনের দিকে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ।

এই বছর আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি

মা ও শিশুর স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দিন।
সকলের কাছে স্বাস্থ্যের অধিকার পৌঁছে দেওয়ার জন্য অবদান রাখুন।
সুস্থ জীবনযাপন অবলম্বন করে আপনার ও আপনার পরিবারের ভবিষ্যৎকে আশাবাদী করে তুলুন।

Leave a comment