ইন্ডিয়া পোস্টের নতুন DIGIPIN: ঐতিহ্যগত পিন কোডের পরিবর্তে ১০-অঙ্কের ডিজিটাল লোকেশন কোড

ইন্ডিয়া পোস্ট DIGIPIN লঞ্চ করেছে, যা ঐতিহ্যগত পিন কোড থেকে আলাদা একটি ১০-অঙ্কের ডিজিটাল লোকেশন কোড। এটি সঠিক ৪x৪ মিটার লোকেশন নির্দেশ করে, যার ফলে ডেলিভারি এবং জরুরি সেবা দ্রুততর হবে। এটি https://dac.indiapost.gov.in/mydigipin/home থেকে জেনারেট করা যায়।

ভারত সরকারের ডিজিটাল উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইন্ডিয়া পোস্ট একটি নতুন এবং বিপ্লবী পদক্ষেপ নিয়েছে, যা ঐতিহ্যগত পিন কোডের যুগকে সম্পূর্ণরূপে বদলে দেবে। ইন্ডিয়া পোস্ট DIGIPIN নামে একটি নতুন ডিজিটাল লোকেশন সার্ভিস লঞ্চ করেছে, যা এখন আপনার পুরোনো পিন কোডের জায়গা নিয়ে আপনার ঠিকানাকে একেবারে সঠিক ডিজিটাল আকারে প্রদর্শন করবে। এই নতুন সিস্টেম কেবলমাত্র একটি ঠিকানা নির্দেশকারী কোড নয়, বরং আপনার লোকেশন কো-অর্ডিনেটসের উপর ভিত্তি করে একটি অনন্য ১০ অক্ষরের আলফা নিউমেরিক কোড প্রদান করে। DIGIPIN-এর মাধ্যমে ভারতের ডাক, লজিস্টিকস, জরুরি সেবা এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে চলেছে।

DIGIPIN কি এবং কেন এটি প্রয়োজন?

DIGIPIN, অর্থাৎ Digital Postal Identification Number, এমন একটি ডিজিটাল পিন কোড যা বিশেষভাবে আপনার লোকেশনকে মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে। এটি বর্তমান ৬ অঙ্কের পিন কোড থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, যা কেবলমাত্র বৃহৎ এলাকা বা অঞ্চলকে নির্দেশ করতো, অন্যদিকে DIGIPIN ৪x৪ মিটারের ছোট ছোট গ্রিডের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যার ফলে ঠিকানা একেবারে সঠিকভাবে পাওয়া যায়।

আজকের সময়ে যেখানে অনলাইন শপিং, কুরিয়ার সেবা এবং জরুরি প্রতিক্রিয়া যেমন কাজগুলিতে দ্রুততা এবং সঠিকতা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, DIGIPIN সেই প্রয়োজনগুলিকে সম্পূর্ণরূপে পূরণ করে। এখন কোনও পার্সেল, ডাক বা জরুরি সেবা দ্রুত এবং কোনও দেরি ছাড়াই আপনার সঠিক লোকেশনে পৌঁছাতে পারবে।

DIGIPIN তৈরিতে IIT হায়দ্রাবাদ, ISRO এবং NRSC-এর ভূমিকা

DIGIPIN তৈরিতে IIT হায়দ্রাবাদ, ISRO এবং NRSC-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলি সহযোগিতা করেছে। তাদের সাহায্যে ভারতের মানচিত্রকে ৪ মিটার x ৪ মিটারের ছোট ছোট গ্রিডে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি গ্রিডের জন্য একটি অনন্য ১০ অক্ষরের আলফা নিউমেরিক কোড জেনারেট করা হয়। এই কোড আপনার লোকেশনের ভৌগোলিক কো-অর্ডিনেটসের উপর ভিত্তি করে তৈরি, যা সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল।

ইউজার তার মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে ইন্ডিয়া পোস্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://dac.indiapost.gov.in/mydigipin/home-এ গিয়ে তার লোকেশন পারমিশন দিয়ে তার DIGIPIN তৈরি করতে পারে। লোকেশনের অনুমতি পাওয়ার পর আপনার সামনে আপনার অনন্য ডিজিপিন কোড চলে আসবে, যা আপনি সংরক্ষণ করতে পারেন।

DIGIPIN-এর সুবিধা কি কি?

• সঠিক ডেলিভারি: ঐতিহ্যগত পিন কোডের কারণে প্রায়ই ডেলিভারিতে সমস্যা হতো কারণ পিন কোড একটি বৃহৎ এলাকাকে কভার করতো। DIGIPIN-এর মাধ্যমে ডেলিভারি এজেন্টকে একেবারে সঠিক লোকেশন পাওয়া যাবে, যার ফলে ডেলিভারি সময়ে উন্নতি হবে।
• জরুরি সেবায় দ্রুততা: দুর্ঘটনা বা যেকোনো জরুরি অবস্থায় যদি আপনার অবিলম্বে পুলিশ, অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার ব্রিগেডের প্রয়োজন হয়, তাহলে DIGIPIN-এর মাধ্যমে আপনার লোকেশন অবিলম্বে জানা যাবে। এর ফলে জীবনরক্ষাকারী সেবার প্রতিক্রিয়ার সময় অনেক কমে যাবে।
• অফলাইন ব্যবহারের সুবিধা: DIGIPIN ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই পড়া এবং বোঝা যায়, যার ফলে আপনি যেখানেই থাকুন না কেন নেটওয়ার্ক ছাড়াই এটি ব্যবহার করতে পারেন।
• নবতম প্রযুক্তি: ISRO-এর স্যাটেলাইট ডেটা এবং GIS (Geographical Information System) প্রযুক্তির সমন্বয়ে DIGIPIN সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে, যা সমগ্র ভারতে লোকেশনের উচ্চ নির্ভুলতা নিশ্চিত করে।

DIGIPIN এবং ঐতিহ্যগত পিন কোডে কি পার্থক্য?

পিন কোড:

• ৬ অঙ্কের হয়।
• একটি বৃহৎ এলাকাকে কভার করে।
• ডেলিভারির সময় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
• জরুরি সেবার জন্য কম কার্যকর।

DIGIPIN:

• ১০ অক্ষরের আলফা নিউমেরিক কোড।
• ৪x৪ মিটারের ছোট গ্রিডের জন্য অনন্য।
• লোকেশন সঠিক, অবিলম্বে চিহ্নিতযোগ্য।
• জরুরি সেবার জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
• অফলাইনেও কাজ করে।

DIGIPIN কিভাবে জেনারেট করবেন?

1. আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারে ইন্ডিয়া পোস্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট খুলুন: https://dac.indiapost.gov.in/mydigipin/home
2. ওয়েবসাইটে আপনার ডিভাইসের লোকেশন অ্যাক্সেস দিন।
3. আপনার লোকেশনের উপর ভিত্তি করে আপনার সামনে DIGIPIN জেনারেট হবে।
4. এই ডিজিটাল কোডটি সংরক্ষণ করুন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করুন।