নাসা ও স্পেসএক্স যৌথভাবে ক্রু-১০ মিশন উৎক্ষেপণ করেছে, যার উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এ আটকে থাকা আমেরিকান মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে নিরাপদে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনা।
নয়াদিল্লি: মহাকাশে আটকে থাকা ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান মহাকাশচারী সুনিতা উইলিয়ামস ও তার সঙ্গী বুচ উইলমোরের পৃথিবীতে ফিরে আসার কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে। স্পেসএক্সের ক্রু ড্রাগন মহাকাশযান আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এর সাথে সফলভাবে ডকিং করেছে, যার ফলে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের পথ সুগম হয়েছে। ১৯শে মার্চ উভয়ে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন, যার ফলে তাদের অযোজনীয় দীর্ঘ মহাকাশ ভ্রমণের অবসান ঘটবে।
কীভাবে সুনিতা উইলিয়ামস মহাকাশে আটকে পড়লেন?
৫ই জুন ২০২৪ সালে সুনিতা উইলিয়ামস ও বুচ উইলমোরকে বোয়িং স্টারলাইনার ক্রু টেস্ট মিশনের অধীনে আট দিনের জন্য মহাকাশে পাঠানো হয়েছিল। তবে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে স্টারলাইনার যানের প্রত্যাবর্তন বিলম্বিত হয় এবং উভয়কেই আইএসএস-এ থাকতে হয়। প্রায় নয় মাস পর, নাসা ও স্পেসএক্সের যৌথ প্রচেষ্টায় ক্রু ড্রাগন পাঠানো হয়, যা এখন তাদের ফিরিয়ে আনবে।
ক্রু ড্রাগনের ঐতিহাসিক ডকিং
১৬ই মার্চ স্পেসএক্সের ক্রু-১০ মিশনের অধীনে ক্রু ড্রাগন আইএসএস-এর সাথে সফলভাবে ডকিং করে। এটি নাসার কমার্শিয়াল ক্রু প্রোগ্রামের অধীনে একাদশ মানববাহী উড়ান। এই মহাকাশযানের সাথে চারজন নতুন মহাকাশচারীও আইএসএস-এ পৌঁছেছেন, যারা উইলিয়ামস ও উইলমোরকে প্রতিস্থাপন করেছেন। ডকিংয়ের পর, সকল মহাকাশচারী তাদের মহাকাশ পোশাক খুলে কার্গো ট্রান্সফার ও অন্যান্য প্রস্তুতির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অল্প সময়ের মধ্যেই আইএসএস-এর হ্যাচ খোলা হবে এবং ক্রু-১০-এর নতুন মহাকাশচারীদের স্বাগত জানানো হবে। ক্রু ড্রাগন ১৯শে মার্চ মহাকাশ থেকে পৃথিবীর দিকে রওনা হবে এবং ধারণা করা হচ্ছে এটি আটলান্টিক মহাসাগরে অবতরণ করবে।
আমেরিকার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্রমাগত এই মিশনের আপডেট নিচ্ছেন। তিনি স্পেসএক্সের সিইও এলন মাস্কের কাছে আবেদন করেছিলেন যাতে সুনিতা উইলিয়ামসের দ্রুত প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা হয়। এলন মাস্ক ও নাসা এই বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে ক্রু ড্রাগন মিশন দ্রুত সম্পন্ন করেছে।
আইএসএস-এ পৌঁছেছেন নতুন মহাকাশচারীরা
ক্রু ড্রাগন মহাকাশযানের মাধ্যমে চারজন নতুন মহাকাশচারী আইএসএস-এ পৌঁছেছেন:
* অ্যানি ম্যাকলেলান (নাসা কমান্ডার)
* অ্যারিস পাইলট (নাসা)
* তাকুয়া ওনিশি (জ্যাক্সা, জাপান)
* কিলিল পেসকভ (রাশিয়ান কসমোনট)
বোয়িং ক্রু মিশনের উদ্দেশ্য কী ছিল?
এই মিশনের অধীনে নাসা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যাওয়া ও ফিরে আসার জন্য আমেরিকাতেই উদ্ভাবিত মহাকাশযান ব্যবহার করতে চেয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী মূল্যের মহাকাশ পরিবহন ব্যবস্থা উদ্ভাবন করা। তবে, বোয়িং স্টারলাইনারে দেখা দেওয়া প্রযুক্তিগত সমস্যা এই মিশনের চ্যালেঞ্জ বাড়িয়ে দিয়েছে।
সুনিতা উইলিয়ামসের প্রত্যাবর্তনের সাথে সাথেই এই দীর্ঘ ও অপ্রত্যাশিত মিশনের অবসান ঘটবে। এখন সকলের দৃষ্টি ১৯শে মার্চের উপর, যখন এই ঐতিহাসিক মহাকাশযান তাকে ও বুচ উইলমোরকে পৃথিবীতে নিরাপদে নিয়ে আসবে।
