চীনে গাওকাও পরীক্ষার সময় বৃহৎ AI চ্যাটবট বন্ধ

চীনে গাওকাও পরীক্ষার সময় বৃহৎ AI চ্যাটবট বন্ধ
সর্বশেষ আপডেট: 11-06-2025

গাওকাও পরীক্ষার সময় নকলের আশঙ্কা বিবেচনা করে চীন অলিবাবা, টেনসেন্ট এবং বাইটড্যান্স-এর মতো বৃহৎ AI চ্যাটবটগুলিকে অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।

চীন আবারও প্রমাণ করেছে যে শিক্ষা ও প্রযুক্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যাপারে তারা কতটা গুরুত্বারোপ করে। ৭ জুন থেকে শুরু হওয়া গাওকাও পরীক্ষা (Gaokao Exam 2025) চলাকালীন চীনের অনেক প্রধান AI প্রতিষ্ঠান তাদের চ্যাটবট এবং ছবি-পরিচিতি ক্ষমতা অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য পরীক্ষার সময় নকলের মতো অনুচিত কাজে বাধা দেওয়া।

কোন কোন AI টুল বন্ধ হয়েছে?

ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনের মতে, এই বন্ধের প্রভাব চীনের নামী টেক প্রতিষ্ঠানগুলির প্রধান AI টুলগুলিতে পড়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • অলিবাবার চ্যাটবট Qwen
  • টেনসেন্টের Yuanbao
  • বাইটড্যান্সের Doubao
  • Moonshot AI-এর Kimi

এই সকল চ্যাটবটগুলিকে অস্থায়ীভাবে অফলাইন করে দেওয়া হয়েছে অথবা নকলে ব্যবহার করা যায় এমন ক্ষমতা যেমন ছবি-পরিচিতি, ছাত্রদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া, অথবা লাইভ প্রশ্ন সমাধানের মতো সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে?

গাওকাও চীনের সবচেয়ে কঠিন এবং সম্মানিত ভর্তি পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়, যাতে ১.৩৪ কোটিরও বেশি ছাত্র অংশগ্রহণ করে। এই পরীক্ষা চীনের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি পাওয়ার একমাত্র উপায়। এতে ছাত্রদের বিজ্ঞান, গণিত, ইতিহাস, ভাষা এবং অন্যান্য বিষয়ে গভীর পরীক্ষা দিতে হয়। यही কারণে এই পরীক্ষায় কোনও ধরনের অনিয়ম রোধ করা প্রশাসনের প্রধান অগ্রাধিকার।

চীনা প্রশাসনের আশঙ্কা, জেনারেটিভ AI টুলের সাহায্যে ছাত্ররা উত্তর তৈরি করতে পারে, অথবা প্রশ্নের ছবি তুলে চ্যাটবট দিয়ে সমাধান করতে পারে, যার ফলে পরীক্ষার ন্যায্যতা ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে, প্রশাসন এই টুলগুলিকে অস্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয় করার নির্দেশ দিয়েছে।

প্রযুক্তি একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে

গত কয়েক বছরে চীন AI প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি করেছে। দেশের দেশীয় কোম্পানিগুলি তাদের নিজ নিজ জেনারেটিভ AI টুল লঞ্চ করেছে, যা কেবলমাত্র লেখা বুঝতে পারে না, বরং ছবি, ভিডিও এবং ভয়েস ইনপুটও প্রসেস করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার মতো সংবেদনশীল ক্ষেত্রে এর অপব্যবহার একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে।

জেনারেটিভ AI টুলগুলি আজ এতটাই উন্নত হয়ে উঠেছে যে এগুলি পরীক্ষার মতো প্রশ্নের উত্তরও অত্যন্ত নির্ভুলতার সাথে দিতে পারে। কোনও ছাত্র যদি প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে এই টুলগুলিতে আপলোড করে, তাহলে সে তাৎক্ষণিক সমাধান পেতে পারে। এটাই কারণ প্রশাসন সতর্কতা অবলম্বন করে এই টুলগুলি চিহ্নিত করার এবং অস্থায়ীভাবে ব্লক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

সুরক্ষার পুরোনো পদ্ধতির থেকে এগিয়ে গেছে প্রশাসন

  • গাওকাও পরীক্ষায় নকল রোধ করার জন্য চীন এর আগেও অনেক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন:
  • পরীক্ষাকেন্দ্রে মোবাইল, স্মার্টওয়াচ এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা
  • পরীক্ষাকেন্দ্রে নজরদারি ড্রোন এবং সিগন্যাল জ্যামার মোতায়েন
  • ফেস রিকগনিশন সিস্টেমের মাধ্যমে ছাত্রদের পরিচয় নিশ্চিতকরণ

এই অস্থায়ী বন্ধ কতক্ষণ পর্যন্ত?

প্রতিবেদন অনুসারে, এই বন্ধ ১০ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে, যতক্ষণ না গাওকাও পরীক্ষা শেষ হয়। এর পরে সংশ্লিষ্ট চ্যাটবট এবং তাদের পরিষেবাগুলি পুনরায় সক্রিয় করা হবে। তবে প্রশাসন নিশ্চিত করবে যে পরীক্ষার সময় কোনও পর্যায়ে এই টুলগুলির অপব্যবহার হয়নি।

Leave a comment