ট্রাম্পের হার্ভার্ড আক্রমণ: ৩১% বিদেশী ছাত্রের তথ্য চাওয়া, তহবিল বন্ধের হুমকি

ট্রাম্পের হার্ভার্ড আক্রমণ: ৩১% বিদেশী ছাত্রের তথ্য চাওয়া, তহবিল বন্ধের হুমকি
সর্বশেষ আপডেট: 25-05-2025

ডোনাল্ড ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর আক্রমণ চালিয়েছেন, ৩১% বিদেশী ছাত্রের তথ্য চেয়েছেন। তহবিল বন্ধ করার হুমকি দিয়েছেন। আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, ভারতীয় ছাত্রদের ভবিষ্যৎ সংকটাপন্ন।

Harvard University: আমেরিকার সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ডকে কেন্দ্র করে বড় বিতর্ক দেখা দিয়েছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর তীব্র আক্রমণ চালিয়েছেন। ট্রাম্প দাবি করেছেন যে হার্ভার্ডে পড়াশোনা করা প্রায় ৩১% ছাত্র বিদেশী, যাদের মধ্যে অনেকেই এমন দেশ থেকে এসেছে যারা আমেরিকার প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব রাখে না। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে হার্ভার্ড আমেরিকার সরকার থেকে অর্ব ডলারের তহবিল গ্রহণ করে, কিন্তু বিদেশী ছাত্রদের তথ্য প্রকাশ করতে এড়িয়ে চলে।

ট্রাম্পের বড় বক্তব্য: জানতে চান কারা এই ৩১% বিদেশী ছাত্র?

ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ লিখেছেন, “হার্ভার্ড কেন বলছে না যে তাদের প্রায় ৩১% ছাত্র বিদেশী দেশ থেকে এসেছে, যাদের মধ্যে কয়েকটি আমেরিকার জন্য একেবারেই বন্ধুত্বপূর্ণ নয়? এই দেশগুলি আমেরিকার জন্য কিছুই করে না, তাদের ছাত্রদের পড়াশোনার জন্য কিছু প্রদান করে না। হার্ভার্ডের ৫২ কোটি ডলার (প্রায় ৪০০০ কোটি টাকা) তহবিল রয়েছে, তাই এটি ব্যবহার করা উচিত এবং ফেডারেল সরকার থেকে টাকা নেওয়া বন্ধ করা উচিত।”

হার্ভার্ডের উপর গুরুতর অভিযোগ: আমেরিকার সরকার কী বলে?

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি হার্ভার্ডের Student and Exchange Visitor Program (SEVP) সার্টিফিকেশন অবিলম্বে বাতিল করে দিয়েছে। এর অর্থ হল হার্ভার্ড আর নতুন বিদেশী ছাত্রদের ভর্তি করতে পারবে না, এবং বর্তমান প্রায় ৭০০০ বিদেশী ছাত্রকে অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত করতে হবে অথবা তাদের ভিসা বাতিল হতে পারে।

আমেরিকার Homeland Security Secretary ক্রিস্টী নোয়েম হার্ভার্ডের উপর গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, “হার্ভার্ড হিংসা, ইহুদি-বিরোধী মতাদর্শ এবং চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাথে সম্পর্ককে উৎসাহিত করছে। বিদেশী ছাত্রদের ভর্তি করা একটি বিশেষাধিকার, অধিকার নয়। সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে আইন মেনে চলতে হবে।”

হার্ভার্ডের জবাব: আদালতের অবস্থান এবং পরবর্তী পদক্ষেপ

হার্ভার্ড এই অভিযোগগুলি সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছে এবং এটিকে অসংবিধানিক বলে ঘোষণা করে বস্টনের ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের করেছে। হার্ভার্ডের দাবি, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক স্বাধীনতা, সংবিধানের প্রথম সংশোধনী এবং ডিউ প্রসেসের লঙ্ঘন করেছে। হার্ভার্ডের দাবি, আন্তর্জাতিক ছাত্ররা তাদের মিশনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের ছাড়া হার্ভার্ড হার্ভার্ড থাকবে না।

হার্ভার্ড তাদের আবেদনে বলেছে, “এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার ৭০০০ এর বেশি বিদেশী ছাত্রের উপর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। আমাদের প্রায় ২৭% ছাত্র আন্তর্জাতিক, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভারতীয় ছাত্র রয়েছে। যদি এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়, তবে হাজার হাজার ছাত্রের ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।”

আদালতের রায়: অস্থায়ী স্বস্তি, শুনানি চলছে

বস্টনের জেলা জজ অ্যালিসন বারো ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তিনি বলেছেন যে হার্ভার্ড ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, তাই মামলার সম্পূর্ণ শুনানি পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। পরবর্তী শুনানির তারিখ ২৭ এবং ২৯ মে নির্ধারিত হয়েছে।

তহবিলের বিষয়: অর্ব ডলারের প্রশ্ন

ট্রাম্প প্রশাসন হার্ভার্ডের ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান এবং ৪৫০ মিলিয়ন ডলারের অতিরিক্ত তহবিল বরফে জমিয়ে রেখেছে। প্রশাসন হার্ভার্ডকে বলেছে যে তার Diversity, Equity, and Inclusion (DEI) প্রোগ্রাম বন্ধ করতে হবে, ভর্তির নীতি পরিবর্তন করতে হবে এবং কিছু মধ্যপ্রাচ্যের সাথে সম্পর্কিত একাডেমিক প্রোগ্রামের অডিট করাতে হবে। হার্ভার্ড এই দাবিগুলি মানতে অস্বীকার করেছে।

Leave a comment