মহারাষ্ট্রে প্রাথমিক স্কুলে হিন্দি তৃতীয় ভাষা হিসেবে

মহারাষ্ট্রে প্রাথমিক স্কুলে হিন্দি তৃতীয় ভাষা হিসেবে
সর্বশেষ আপডেট: 12 ঘণ্টা আগে

২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলে হিন্দি তৃতীয় ভাষা হিসেবে পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের সুযোগ থাকবে।

মহারাষ্ট্র: ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন ভাষানীতি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। এর অধীনে রাজ্যের মারাঠি ও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত হিন্দি তৃতীয় ভাষা হিসেবে পড়ানো হবে। তবে এটি বাধ্যতামূলক হবে না, বরং ‘সাধারণভাবে’ অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এর অর্থ হল হিন্দিকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে তবে ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের সুযোগও থাকবে।

অন্যান্য ভারতীয় ভাষার বিকল্পও উপলব্ধ

সংশোধিত সরকারি আদেশে এই বিধানও যুক্ত করা হয়েছে যে, কোনও স্কুলে যদি কোনও শ্রেণীর ২০ বা তার বেশি ছাত্রছাত্রী হিন্দির পরিবর্তে অন্য কোনও ভারতীয় ভাষা পড়তে চায়, তাহলে তাদের সেই সুযোগ দেওয়া হবে। এমন পরিস্থিতিতে সেই ভাষার জন্য শিক্ষকের ব্যবস্থা করা হবে অথবা অনলাইন মাধ্যমে ভাষাটি পড়ানো হবে।

শিক্ষামন্ত্রীর স্পষ্ট সমর্থন

স্কুল শিক্ষামন্ত্রী দাদা ভুসে সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমর্থন করেছেন। তিনি বলেছেন, হিন্দি একটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত ভাষা এবং এটি শেখার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে উপকৃত হবে। পাশাপাশি তিনি আরও বলেছেন যে, যে স্কুলে মারাঠি পড়ানো হচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মারাঠি সংগঠন ও বিরোধীদের ক্ষোভ

এই সিদ্ধান্তের পর মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (मनसे), কংগ্রেস এবং অনেক মারাঠি সংগঠন সরকারের সমালোচনা করেছে। তাদের অভিযোগ, সরকার আগে হিন্দিকে বাধ্যতামূলক না করার কথা বলেছিল কিন্তু এখন ‘পিছনের দরজা’ দিয়ে এই নীতি কার্যকর করা হচ্ছে। কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের উপর মারাঠি আত্মসম্মানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ এনেছে। তাদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত মারাঠি ভাষীদের স্বার্থের বিরুদ্ধে।

রাজ ठाकरे-এর সতর্কবাণী

मनसे প্রধান রাজ ठाकरे সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছেন, রাজ্যে হিন্দি জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা সহ্য করা হবে না। তিনি এই বিষয় নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্টীকরণ

বিরোধের পর মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ স্পষ্টীকরণ দিয়ে বলেছেন, ছাত্রছাত্রীদের জন্য হিন্দি শেখা বাধ্যতামূলক নয়। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, যেকোনো ছাত্রছাত্রী তৃতীয় ভাষা হিসেবে যেকোনও ভারতীয় ভাষা বেছে নিতে পারবে। তিনি এই সমস্ত বিতর্ককে অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন যে সরকার কেবল নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি (NEP 2020)-এর নির্দেশিকা অনুসরণ করছে।

রাজ্য পাঠ্যক্রম কাঠামো ২০২৪-এর অধীনে গৃহীত সিদ্ধান্ত

মহারাষ্ট্রের স্কুল শিক্ষা বিভাগ সম্প্রতি ‘স্কুল শিক্ষার জন্য রাজ্য পাঠ্যক্রম কাঠামো ২০২৪’ কার্যকর করেছে। এই সিদ্ধান্ত তারই অংশ। এর উদ্দেশ্য প্রাথমিক শিক্ষায় ভাষা দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং ছাত্রছাত্রীদের বহুভাষিক পরিবেশে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত করা।

মারাঠি ভাষা অব্যাহত থাকবে বাধ্যতামূলক

নতুন নীতিতে এটাও স্পষ্ট করা হয়েছে যে, মারাঠি ভাষা রাজ্যের সকল মাধ্যমের স্কুলে বাধ্যতামূলক থাকবে। এর অর্থ হল মারাঠিকে সরিয়ে দেওয়ার অথবা তার জায়গায় হিন্দি আনার কোনও পরিকল্পনা নেই। সরকারের উদ্দেশ্য হল ছাত্রছাত্রীরা যাতে আঞ্চলিক ভাষার পাশাপাশি একটি জাতীয় ভাষার জ্ঞানও অর্জন করতে পারে।

Leave a comment