দেশের অধিকাংশ অঞ্চলে বর্ষা পুরোপুরি সক্রিয় হয়েছে, যার ফলে মানুষ গরম ও উত্তাপ থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। দিল্লি-এনসিআরেও সোমবার হালকা বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা কিছুটা তীব্র গরম ও আর্দ্রতাপূর্ণ আবহাওয়া থেকে স্বস্তি দিয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: দেশে বর্ষার আগমন প্রায় সম্পূর্ণ হয়েছে, তবে জাতীয় রাজধানী দিল্লি ও এনসিআর এখনও তার অপেক্ষায় রয়েছে। গত সোমবার হালকা বৃষ্টিপাত দিল্লিবাসীকে আর্দ্রতা থেকে কিছুটা স্বস্তি দিলেও, মুষলধারে বৃষ্টির আশা এখনও বাকি রয়েছে। অন্যদিকে, দেশের অন্যান্য অঞ্চলে বর্ষা দ্রুত এগিয়ে চলেছে এবং বেশ কয়েকটি রাজ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে জনজীবনে প্রভাব পড়ছে।
দিল্লিতে কবে হবে মুষলধারে বৃষ্টি?
আবহাওয়া দপ্তর (IMD) ২৩ থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত ইয়েলো অ্যালার্ট জারি করেছে। এই সময় দিল্লিতে মেঘলা আকাশ, বজ্রপাত এবং প্রবল বাতাসের সাথে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে। ২৩ জুন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬°C এবং সর্বনিম্ন ২৮°C থাকবে। এছাড়াও, ৩০-৪০ কিমি/ঘন্টা বেগে প্রবল বাতাস বইতে পারে।
দিল্লিতে বর্ষা পুরোপুরি সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা ২৫ জুনের পরে বলা হচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের মতে, ২৯ জুন পর্যন্ত আবহাওয়া মনোরম থাকবে, যার ফলে আর্দ্রতা ও গরম থেকে স্বস্তি পাওয়া যাবে।
হিমাচলে বর্ষার আগমন, অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারি
হিমাচল প্রদেশের অধিকাংশ অঞ্চলে বর্ষা পৌঁছে গেছে। রাজ্যের স্থানীয় আবহাওয়া বিজ্ঞান কেন্দ্র ২৩ থেকে ২৭ জুনের মধ্যে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে। ২৪ থেকে ২৮ জুনের মধ্যে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত রাজ্য জুড়ে হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। অরেঞ্জ অ্যালার্ট ২৪ জুন থেকে পরবর্তী চার দিনের জন্য বলবৎ থাকবে, বিশেষ করে উপরের এবং মধ্য পর্বতীয় অঞ্চলে। পর্যটন স্থানে যাওয়া ব্যক্তিদের বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রাজস্থানেও সক্রিয় বর্ষা
পূর্ব রাজস্থানে বর্ষার আগমনের সাথে সাথে কোটা, জয়পুর এবং ভরতপুর বিভাগে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়েছে। ২৪ জুন এই অঞ্চলগুলিতে ভারী/অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে, পশ্চিম রাজস্থানের বিকানের বিভাগে ২৫-২৭ জুনের মধ্যে ধুলাবালি এবং বৃষ্টিপাতের কার্যকলাপ বৃদ্ধি পাবে। রাজ্যের আবহাওয়া কেন্দ্র সতর্কতা জারি করে বলেছে যে, ক্ষেতগুলিতে পানি জমে যাওয়া এবং বজ্রপাতের ঘটনাগুলির প্রতি সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
গুজরাটে বর্ষার তাণ্ডব
গুজরাটের ১৫৯টি তালুকে ভারী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বর্ষার তীব্র বৃষ্টিপাতের ফলে বেশ কয়েকটি জেলায় পানি জমে যাওয়া এবং যানবাহন চলাচলে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। IMD ২৪ জুন সৌরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ গুজরাটের ১৬টি জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা প্রকাশ করেছে।
- অরেঞ্জ অ্যালার্ট: আমরেলি, ভাবনগর, নবসারী, ভালসাদ
- ইয়েলো অ্যালার্ট: রাজকোট, জুনাগড়, গির সোমনাথ, ভরুচ, নর্মদা, সুরাট, তাপী, ডাঙ্গ, বড়োদরা, ছোট উদেপুর, পঞ্চমহল, দাহোদ
- সরকার জরুরী সেবাগুলিকে সতর্ক অবস্থায় রেখেছে এবং মানুষকে নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে।
পূর্ব ভারতেও বৃষ্টির তীব্রতা
বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পূর্ব উত্তর প্রদেশে বর্ষা প্রায় পুরোপুরি সক্রিয় হয়েছে। এই রাজ্যগুলিতে পরবর্তী ৭ দিন ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তর বিশেষ করে নিম্ন অঞ্চলে বসবাসকারীদের সতর্ক থাকার জন্য বলেছে। এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ফলে কৃষকদের কিছুটা স্বস্তি মিলেছে, তবে বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে।
কেরাল, কর্নাটক, তামিলনাড়ু এবং মহারাষ্ট্রে বর্ষা ইতিমধ্যেই তীব্রতা পেয়েছে। কেরাল এবং কঙ্কণ অঞ্চলে অব্যাহতভাবে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে ভূমিধ্বস এবং যানবাহন চলাচলে বাধার খবর পাওয়া গেছে।